মাহিদুল ইসলাম রিপন, দিনাজপুর : দিনাজপুর জিলা স্কুলের কিছু শিক্ষক নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে চালিয়ে যাচ্ছেন রমরমা কোচিং বাণিজ্য। সংশ্লিষ্টদের তদারকির অভাবে সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মরত অসাধু শিক্ষকরা এভাবে বেপরোয়া কোচিং চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
অভিভাবকরা বলছেন, কোচিং বাণিজ্য এখন মহামারিতে পরিণত হয়েছে। যেহেতু একই শিক্ষক স্কুলে পড়ান, আবার কোচিংও করান, তাই কোচিংয়ে না গেলে স্কুলে নানাভাবে হেয় করা হয়, নম্বর কম দেয়া হয়। জেলা শহরের মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্তদের বাধ্য হয়েই কোচিংয়ের বাড়তি খরচ টানতে হচ্ছে।
সরেজমিন দেখা যায়, দিনাজপুর জিলা স্কুলের পেছনে বালুবাড়ি পাওয়ার হাউজ ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী নিয়ে চলছে একটি কোচিং সেন্টার। একটি কক্ষে দেখা গেলো, দিনাজপুর জিলা স্কুলের সিনিয়র শিক্ষক শাহ্ মুহাম্মদ সাব্বির হোসেন ক্লাস নিচ্ছেন। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেলো, তারা সবাই দিনাজপুর জিলা স্কুলের পড়ুয়া।
কেনো কোচিংয়ে পড়ান জানতে চাইলে শাহ্ মুহাম্মদ সাব্বির হোসেন দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, অতিরিক্ত কিছু আয়ের জন্য কোচিং করাই। শুধু আমি কেনো, জিলা স্কুলের অনেক শিক্ষকই তো কোচিং করান। এসময় তিনি আর কথা না বলে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
অনতি দূরে আর একটি কোচিং সেন্টারে ক্লাস নিতে দেখা যায় জিলা স্কুলের আর এক শিক্ষক নাজির হোসেনকে। দৈনিক আমাদের বার্তাকে তিনি বলেন, আমরা যে কোচিং সেন্টার পরিচালনা করছি তা দেখার জন্য সরকারি লোকজন আছে। নিউজ করলে দ্রুত করেন। আমি এখানে নবম ও দশম শ্রেণির বিজ্ঞান বিষয়ে কোচিং সেন্টার পরিচালনা করছি।
একই স্কুলের মো: আব্দুল হাই সরকারসহ আরো কয়েকজন শিক্ষক সেখানে কোচিং করান বলে জানা গেলো।
জিলা স্কুলের বেপরোয়া কোচিং এর বিষয়ে জানতে চাইলে দিনাজপুর জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক আক্তারা পারভিন কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এ ব্যাপারে দিনাজপুর জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো: রফিকুল ইসলাম দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, কোচিং সেন্টার শুধু দিনাজপুরে নয়, সারাদেশে ক্যান্সারের মতো ছড়িয়ে পড়েছে। দিনাজপুরে এ বিষয়ে কেউ কোনো অভিযোগ দেননি। তবে বিষয়টি দেখা হবে। আশা করছি, আসছে নতুন কারিকুলাম অনুযায়ী পাঠদান পুরোদমে শুরু হলে কোচিং সেন্টারের দিকে শিক্ষার্থীরা আর ঝুঁকবেন না।