টাঙ্গাইলের সখীপুরে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছয়টি শ্রেনীর পাঠদান কার্যক্রম চালিয়ে আসছেন মাত্র দুইজন শিক্ষক। উপজেলার হাতিবান্ধা ইউনিয়নের পাটজাগ সোনার বাংলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চার মাসের বেশি সময় ধরে শিক্ষক সংকটে রয়েছে।
এ ছাড়া পিয়ন না থাকায় রুম ঝাড়ু, ছুটির ঘন্টা বাজানো, ওয়াশরুম পরিস্কার ও পাঠদানের কাজ নিজেরই করতে হয় বলে জানায় প্রধান শিক্ষক। এ উপজেলায় ১০৯ টি সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে বলে জানায় উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস।
সরজমিনে গিয়ে দেখা, দুপুর ১২টার ঘন্টা বাজিয়ে প্রাক-প্রাথমিক, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ছুটি দিয়ে তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির পাঠদান শুরু করেন প্রধান শিক্ষক ও একজন শিক্ষিকা। আর কোন শিক্ষক না থাকায় দুই ধাপে ১১৭ জন শিক্ষার্থীর ছয়টি শ্রেণির পাঠদান সম্পন্ন করেন ওই দুই শিক্ষক। এক শ্রেণিতে পড়া দিয়ে এসে আরেক শ্রেণিতে লিখতে দেন এবং রোল কল করান। এভাবে পাঠদান চালানো দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা।
একাধিক অভিভাবক ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, প্রয়োজনীয় শিক্ষক না থাকায় আমাদের ছেলে-মেয়েরা লেখা-পড়ায় অনেক পিছিয়ে আছে। বাচ্চাদের যে অন্য বিদ্যালয়ে ভর্তি করাবো আশে-পাশে আর কোন বিদ্যালয়ও নাই।
বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়, এই বিদ্যালয়ে চারজন শিক্ষক রয়েছে। এর মাঝে দুইজন শিক্ষকদের মৌলিক প্রশিক্ষণ (বি.টি.পি.টি)-তে চলে গেছেন। এক শিক্ষিকা প্রশিক্ষণে গেছেন দশ মাস আগে আরেক শিক্ষিকা গেছেন চার মাস আগে। এখন প্রধান শিক্ষক ও একজন শিক্ষিকা আছেন। বিষয়টি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে জানানো হয়েছে।
পাটজাগ সোনার বাংলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক আব্দুল কাদের মিয়া বলেন, এই বিদ্যালয়ে ছয়জন শিক্ষক থাকার কথা সেখানে চারজন শিক্ষক দেওয়া আছে। চারজনের দুইজন শিক্ষিকা (বি.টি.পি.টি) ট্রেনিংয়ে আছেন। বর্তমানে দুইজন শিক্ষক ছয়টি শ্রেণির পাঠদান কার্যক্রম করে আসছি। এটা খুবই কষ্টকর। স্কুলের প্রয়োজনে মাঝেমধ্যে আমি উপজেলা শিক্ষা অফিসে গেলে আরেকজন শিক্ষিকা আরও সমস্যায় পড়েন।
উপজেলা প্রাথমিক সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মুরাদ হাসান বলেন, দুই জন শিক্ষকের পক্ষে সব ক্লাস মেইনটেইন করা খুব কঠিন কিন্তু উপায় নেই। বর্তমানে এই উপজেলায় ১০৯ জন সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য আছে। তাছাড়া ট্রেনিং শেষ করে আগামী মাসেই একজন শিক্ষক ওই স্কুলে যোগদান করবে। তখন এতো কষ্ট হবে না।