দুর্গম দ্বীপের মূর্তি রহস্য - দৈনিকশিক্ষা

দুর্গম দ্বীপের মূর্তি রহস্য

দৈনিক শিক্ষাডটকম ডেস্ক |

দৈনিক শিক্ষাডটকম ডেস্ক: দ্বীপের সবচেয়ে কাছের জনবসতিপূর্ণ শহরও এর থেকে দু’হাজার কিলোমিটার দূরে। বিশ্বের দূরবর্তী জনবসতিপূর্ণ এলাকার মধ্যে এই দ্বীপের নাম রয়েছে প্রথম সারিতে। এই দ্বীপের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে প্রাচীন লোকগাথা।

স্থানীয়দের দাবি, ইস্টার দ্বীপকে কড়া পাহারায় রেখেছে পাথরের তৈরি হাজারটি মূর্তি। এমনকি এই দ্বীপের উন্নতির নেপথ্যেও নাকি এই মূর্তিগুলির আশীর্বাদ রয়েছে।

প্রশান্ত মহাসাগরের দক্ষিণ-পূর্ব দিকে রয়েছে ইস্টার দ্বীপ। এই দ্বীপ চিলির অন্তর্গত। ১৯৯৫ খ্রিষ্টাব্দে এই দ্বীপটিকে ইউনেসকো বিশ্বের ঐতিহ্যবাহী স্থানের তালিকায় জায়গা দিয়েছে।

দ্বীপের উপকূলবর্তী এলাকায় পাথরের তৈরি বিশেষ মূর্তির জন্য পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় ইস্টার দ্বীপ।

ইতিহাসবিদদের মতে, ৮০০ থেকে ১২০০ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে ইস্টার দ্বীপে লোকজন থাকতে শুরু করেন। তাঁরা ‘রাপা নুই’ নামে পরিচিত। ১৭২২ খ্রিষ্টাব্দে ইউরোপের নজরে পড়ে এই দ্বীপটি। সেই সময় এই দ্বীপের জনসংখ্যা ছিল দু’হাজার থেকে তিন হাজারের মধ্যে।

১৭২২ খ্রিষ্টাব্দের ৫ এপ্রিল জ্যাকব রোগেভিন নামে ইউরোপের এক পর্যটক নাম রাখেন ইস্টার দ্বীপের। ইতিহাসবিদদের মতে, প্রশান্ত মহাসাগরে ডেভিস নামের একটি দ্বীপের সন্ধানে বেরিয়েছিলেন জ্যাকব। কিন্তু তার পরিবর্তে একটি নতুন দ্বীপের খোঁজ পান।

খ্রিস্টানদের বিশেষ পর্ব ‘ইস্টার সানডে’র দিন নতুন দ্বীপের সন্ধান পেয়েছিলেন বলে দ্বীপের ওই নামকরণ করেন জ্যাকব।

২০১৭ খ্রিষ্টাব্দের জনগণনা অনুযায়ী, ইস্টার দ্বীপের জনসংখ্যা ছিল ৭,৭৫০। তার মধ্যে ৪৫ শতাংশ রাপা নুই সম্প্রদায়ের অধিবাসী। ইতিহাসবিদদের একাংশের দাবি, রাপা নুই সম্প্রদায়ের অধিবাসীরাই ওই পাথরের মূর্তিগুলি গড়ে তুলেছিলেন।

পাথরের মূর্তিগুলি ‘মোয়াই’ নামে অধিক পরিচিত। প্রতিটি মূর্তির ওজন বোয়িং ৭৩৭ বিমানের ওজনের চেয়েও বেশি। বিশাল এই মূর্তিগুলি উপকূলবর্তী এলাকায় নিয়ে যাওয়া হল কী করে?

প্রাচীন লোকগাথা অনুযায়ী, মোয়াইয়ের মূর্তিগুলি নাকি পায়ে হেঁটে ইস্টার দ্বীপের উপকূলবর্তী এলাকায় পৌঁছে যায়। দ্বীপের পূর্বপুরুষের আশীর্বাদও নাকি জড়িয়ে রয়েছে মূর্তিগুলির সঙ্গে।

রাপা নুই সম্প্রদায়ের ধারণা, পূর্বপুরুষদের আশীর্বাদ তাঁদের বর্তমানকে আরও সুন্দর করে তোলে। জীবনযাপনে যেন কোনও রকম অসুবিধা না হয়, জমি যেন চাষবাসের যোগ্য থাকে, কোনও রোগ যেন শরীরে বাসা না বাঁধে— এই সব কিছুর জন্যই নাকি মোয়াইয়ের মূর্তির মাধ্যমে তাঁদের পূর্বপুরুষেরা ইহজগতের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করে থাকেন।

প্রাচীন কালে ইস্টার দ্বীপে প্রচুর সংখ্যক তাল গাছ ছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে সেই গাছের সংখ্যা কমে যায়। ইতিহাসবিদদের মতে, পাথরের ভারী মূর্তিগুলি নিয়ে যাওয়ার জন্য তাল গাছের ডাল ব্যবহার করেছিলেন রাপা নুই সম্প্রদায়ের অধিবাসীরা। সে কারণে এত গাছ কাটা হয়েছিল যে, গাছের সংখ্যা অনেকটাই কমে যায়।

ইতিহাসবিদের মতে, ইস্টার দ্বীপে ইঁদুরের প্রকোপ ছিল খুব বেশি। ফসল নষ্ট হওয়ার নেপথ্যে অন্যতম কারণ ছিল সেটি। আগে ওই দ্বীপে যে পরিমাণ চাষবাস হত, ইঁদুরের প্রকোপে তা কমে যায়। আগেকার মতো চাষযোগ্য জমিও তেমন নেই সেখানে। আগে এই দ্বীপে বছরে সর্বাধিক ৯০ দিন পর্যটকেরা থাকতে পারতেন। ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে চিলি সরকার ঘোষণা করে, পর্যটকেরা ৯০ দিনের পরিবর্তে সর্বাধিক ৩০ দিন ইস্টার দ্বীপে থাকতে পারবেন। তা-ও শুধু সমাজ এবং পরিবেশের সঙ্গে জড়িত কাজকর্মের জন্যই।

কোভিড অতিমারির কারণে ইস্টার দ্বীপে ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ মার্চ থেকে ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের ৪ অগস্ট পর্যন্ত পর্যটকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল। ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের অক্টোবর মাসে ইস্টার দ্বীপে দাবানল হয়, যার প্রভাবে পাথরের মূর্তিগুলির অনেকগুলিই ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

 

আমরা চাই না ছাত্রদের কঠোর হয়ে দমন করতে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা - dainik shiksha আমরা চাই না ছাত্রদের কঠোর হয়ে দমন করতে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এবার ভর্তির লটারিও স্থগিত করলো সেন্ট গ্রেগরি হাইস্কুল - dainik shiksha এবার ভর্তির লটারিও স্থগিত করলো সেন্ট গ্রেগরি হাইস্কুল একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে জয়পুরহাটের আইএইচটি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ - dainik shiksha একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে জয়পুরহাটের আইএইচটি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ ৮ ডিসেম্বর - dainik shiksha এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ ৮ ডিসেম্বর মিনিস্ট্রি অডিটরদের গরুর দড়িতে বাঁধবেন শিক্ষকরা! - dainik shiksha মিনিস্ট্রি অডিটরদের গরুর দড়িতে বাঁধবেন শিক্ষকরা! হা*মলা-ভা*ঙচুরের ঘটনায় মা*মলা করবে মোল্লা কলেজ কর্তৃপক্ষ - dainik shiksha হা*মলা-ভা*ঙচুরের ঘটনায় মা*মলা করবে মোল্লা কলেজ কর্তৃপক্ষ ছাত্রলীগকে গণ*ধোলাই দিয়ে থানায় দিতে বললেন ওসি - dainik shiksha ছাত্রলীগকে গণ*ধোলাই দিয়ে থানায় দিতে বললেন ওসি কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0033111572265625