কুমিল্লার হোমনায় দুষ্টুমি করায় এক ছাত্রের ওপর নির্মম নির্যাতন চালানোর অভিযোগ উঠেছে মাদরাসার প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধে। উপজেলার চান্দেরচর ইউনিয়নের নয়াকান্দি মমতাজিয়া আছমতিয়া হাফিজিয়া মাদরাসা ও এতিমখানার ছাত্র মো. আবদুল কাইয়ুমের (১৪) নিতম্ব ও পায়ে পাঁচ মিনিট ধরে গরম ইস্ত্রি চেপে ধরে ছ্যাঁকা দিয়েছেন প্রিন্সিপাল হাফেজ মো. সাইফুল ইসলাম হাবিব। এ সময় অন্য তিন ছাত্র কাইয়ুমের হাত-পা চেপে ধরে রাখে।
গত ১৬ সেপ্টেম্বর এ ঘটনার পর কাইয়ুমকে মাদরাসায় আটকে রাখা হয়। গত সোমবার সে ছাড়া পেলে বিষয়টি জানাজানি হয়। এরপর শিক্ষক সাইফুল ইসলাম পালিয়ে যান। এ ঘটনায় মাওলানা আতিকুল ইসলাম নামে মাদরাসার এক শিক্ষককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ। ভুক্তভোগী আবদুল কাইয়ুম চান্দেরচর গ্রামের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের প্রবাসী আবদুল কাদিরের ছেলে। তাকে হোমনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করার পর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সহপাঠীদের সঙ্গে দুষ্টুমি করায় ১৬ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ১১টার দিকে আবদুল কাইয়ুমের নিতম্ব ও পায়ে গরম ইস্ত্রি পাঁচ মিনিট ধরে রেখে ছ্যাঁকা দেন প্রিন্সিপাল হাফেজ সাইফুল ইসলাম। এ সময় ওই মাদরাসার তিন ছাত্র শুভারামপুর গ্রামের মো. বাইজিদ, চান্দেরচর গ্রামের আবদুল রহমান ও কৃপারামপুর গ্রামের বিল্লাল মিয়া কাইয়ুমের হাত-পা ধরে রাখে। সে চিৎকার দিলে তার মুখ চেপে ধরে রাখা হয়। পরে তাকে মাদরাসায় আটকে রেখে গোপনে চিকিৎসা করানো হয়। গত সোমবার মাদরাসা থেকে ছাড়া পেয়ে কাইয়ুম তার মা হাফেজা বেগমকে ঘটনা জানায়। হাফেজা বেগম বিষয়টি গ্রামবাসীকে জানালে সবাই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে এবং হোমনা থানায় অভিযোগ করে।
কাইয়ুম বলে, ‘মাদরাসার বড় হুজুর আমাকে বলেছেন, আমি যেন কারও কাছে না বলি যে আমাকে ইস্ত্রি দিয়ে পাঁচ মিনিট ধরে ছ্যাঁকা দিয়েছেন। যদি বলি তাহলে আমাকে মেরে ফেলবেন। আমি যেন বলি গরম পানি পড়ে ঝলসে গেছে।’
হোমনা থানার ওসি জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘এ ঘটনায় কাইয়ুমের মায়ের অভিযোগ পেয়েছি এবং সঙ্গে সঙ্গে মামলা রুজু করেছি। মাদরাসার এক শিক্ষককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। অভিযুক্ত প্রিন্সিপাল সাইফুল ইসলামকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’