রাজধানীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আসন ঢাকা-১২ (তেজগাঁও-রমনা-শাহবাগ)। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ২৪, ২৫, ২৬, ২৭, ৩২, ৩৫ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে এটি গঠিত। এই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। তিনি সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
ফার্মগেট মনিপুরীপাড়ার বাসায় সাংবাদিকদের দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই আসনের তিনবারের সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, নির্বাচনে জনগণ ব্যাপকভাবে সাড়া দিচ্ছে। যেখানে যাচ্ছি সেখানেই মানুষের ঢল নামছে। মানুষ ভোট দিতে মুখিয়ে আছেন। তার নির্বাচনী এলাকার মানুষ সরকারের উন্নয়নমূলক কাজের অনেক সুফলভোগী হওয়ায় নির্বাচনে তাদের আগ্রহ রয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, স্মার্ট ঢাকা-১২ বিনির্মাণে ভোট চেয়ে তিনি বলেন, এই আসনের ৪১টির বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নতুন ভবন নির্মাণ, রহিম মেটাল মসজিদ, দ্বিতীয় আম্বরশাহ মসজিদ, হাজি মরণ আলী কামিল মাদরাসাসহ ২৯টি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে নতুন ভবন তৈরি করেছি। এছাড়া আরো অবকাঠামোগত কাজের উন্নয়ন করেছি। আমরা এখন ধীরে ধীরে উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলছি। এলাকার মানুষ চান প্রশস্ত রাস্তাঘাট, গ্যাস, সুয়ারেজ লাইন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, খেলার মাঠ। সাধারণ মানুষের এসব দাবি পূরণ করা হবে।
আগামী নির্বাচনে কোনো চ্যালেঞ্জ দেখছেন কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান খাঁন বলেন, এটি আমার কাছে কোনো চ্যালেঞ্জ নয়। কারণ দেশের মানুষ জানে জ্বালাও-পোড়াও কোনো সমাধান নয়। নির্বাচনে জয়ী হতে হলে নির্বাচনের মাঠে আসতে হবে। আমাদের প্রধানমন্ত্রীর একটাই ভিশন, তা হলো ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তর করা। আমরা সেই লক্ষে কাজ করছি।
হাতিরঝিল প্রকল্প বাস্তবায়নে নিজের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এক সময়ের সন্ত্রাসের জনপদ ঢাকা-১২ এলাকাকে শান্তির নগরীতে পরিণত করে আইনশৃঙ্খলার উন্নয়ন, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস নির্মূল করেছি। পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাস সমস্যার সমাধান করে সব রাস্তা, সুয়ারেজ লাইন ও ড্রেনেজ সিস্টেমের উন্নয়ন করেছি। ইএনটি হাসপাতালসহ বেশ কয়েকটি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠায় সহযোগিতা করেছি। টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়সহ বহু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা ও সব ধর্মীয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংস্কার ও উন্নয়ন এবং কমিউনিটি সেন্টার, খেলার মাঠ, পার্ক ও পাঠাগার স্থাপন করেছি। অসংখ্য বেকার যুবক-যুবতী ও নারীদের কর্মসংস্থান ও উদ্যোক্তায় পরিণত করেছি। দুস্থ-প্রতিবন্ধী ও অসচ্ছল মানুষের শিক্ষা, চিকিৎসা ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন ধরনের সহায়তা ও সব ধর্মীয় অনুষ্ঠানে পৃষ্ঠপোষকতা করে যাচ্ছি।
পুনরায় নির্বাচিত হলে উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট ঢাকা-১২ বিনির্মাণের প্রতিশ্রæতি দিয়ে তিনি বলেন, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও সবুজ ঢাকা-১২ গঠন করা, শতভাগ কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাকরণ, নিরাপদ বসবাসের পরিবেশ সমুন্নতকরণ, এলাকায় পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাসসহ সব নাগরিক সেবা নিশ্চিতকরণ, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও মাদক নির্মূল, টেকসই ও অংশগ্রহণমূলক উন্নয়নের মাধ্যমে দারিদ্র্য নির্মূল, অসাম্প্রদায়িক সমাজব্যবস্থা গঠন ও এলাকার সামষ্টিক উন্নয়ন করা হবে।
উল্লেখ্য, এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পাশাপাশি আরো পাঁচজন প্রার্থী প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন। প্রার্থীরা হলেন- জাতীয় পার্টির খোরশেদ আলম খুশু (লাঙ্গল), তৃণমূল বিএনপির মো. নাঈম হাসান (সোনালি আঁশ), ন্যাশনাল পিপলস পার্টির শাহীন খান (আম), বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের (বিএনএফ) মো. আতিকুর রহমান নাজিম (টেলিভিশন) ও বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মুহাম্মদ আব্দুল হাকিমের (মোমবাতি)। তবে পাড়া-মহল্লায় শুধু নৌকার পোস্টার ও নির্বাচনী ক্যাম্প দেখা গেছে। অন্য প্রার্থীদের তৎপরতা নেই বললেই চলে।