আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে হারিয়ে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে দেশের সিটি করপোরেশনগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় নারী মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন জায়েদা খাতুন। হলফনামায় পেশা ব্যবসা লিখলেও মূলত গৃহিণী জায়েদা তার ছেলের পরিচয়েই নির্বাচনে লড়েছেন, পেয়েছেন জয়ও।
সারা জীবন উত্তরসূরি হিসেবে রাজনীতিতে বিভিন্ন জন সক্রিয় থাকলেও এবারের ব্যতিক্রমী ঘটনাটি সবার মধ্যে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
জায়েদা খাতুনের ছেলে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম। তিনি ছিলেন এ নগরীর দ্বিতীয় মেয়র। ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে তিনি বিএনপির প্রার্থীকে পরাজিত করে মেয়র নির্বাচিত হন। তবে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগ উঠায় তিনি মেয়াদ শেষ করতে পারেননি।
সাময়িক বরখাস্ত হন দল থেকে। পরে নির্বাচনে আওয়ামী লীগের টিকিট না পেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় দল থেকে হন স্থায়ী বহিষ্কার। ওই অবস্থায় মাকে নিয়ে তিনি মাঠে সক্রিয় হন। আর ফেরেন জয় নিয়ে।
জাহাঙ্গীরের মা জায়েদা খাতুন নির্বাচনী হলফনামায় শিক্ষাগত যোগ্যতা দিয়েছেন ‘স্বশিক্ষিত’। তিনি হলেন এ নগরীর তৃতীয় মেয়র; আর দেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় নারী মেয়র। তিনি বৃহস্পতিবার (২৫ মে) গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে নিকটতম প্রতিদ্বন্দী আওয়ামী লীগের প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে ১৬ হাজার ১৯৭ ভোটে হারিয়েছেন।
উল্লেখ্য, দেশের প্রথম নারী সিটি মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী। ২০১১ খ্রিষ্টাব্দে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয়ী হন তিনি।
হলফনামা অনুযায়ী জায়েদা খাতুনের জন্ম ১৯৬২ খ্রিষ্টাব্দের ১ ফেব্রুয়ারি। তার স্বামী মো. মিজানুর রহমান পাঁচ বছর আগে মার গেছেন। তিনি দুই ছেলে ও এক মেয়ের জননী। তার বিরুদ্ধে কোনো মামলার তথ্য নেই।
সিটি নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার পর গাজীপুর মহানগরের উন্নয়ন ও নগরবাসীর জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে ৯ দফা ইশতেহার ঘোষণা করেছিলেন জায়েদা খাতুন।
এতে তিনি নির্বাচিত হলে পাঁচ বছরের জন্য হোল্ডিং ট্যাক্স মওকুফের প্রতিশ্রুতি দেন। পাশাপাশি সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীরের অসমাপ্ত কাজ শেষ করারও অঙ্গীকার করেন।
ইশতেহারে সিটি করপোরেশনের ৫৭টি ওয়ার্ডে রাস্তা ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন, সব ওয়ার্ডে প্রয়োজন অনুযায়ী দীর্ঘমেয়াদি চলাচল উপযোগী রাস্তা নির্মাণ ও সিটির যানজট নিরসনে রাজেন্দ্রপুর থেকে টঙ্গী এবং আশুলিয়া হয়ে কোনাবাড়ী কাশিমপুর কাউলতিয়াকে সংযুক্ত করে আউটার রিংরোড নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন।