কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে স্কুলের ছাদে পাঁচ ছাত্রীর ধূমপানের দৃশ্য ফোনে ভিডিও করেন দুই শিক্ষক। এরপর ওই ছাত্রীদের ডেকে মারধর করার পর ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখান। সে অভিমানে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে এক ছাত্রী ‘আত্মহত্যা’ করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সোমবার সন্ধ্যায় কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের সুলতানপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত সুলতানপুর মাহতাবুদ্দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রী। এ ঘটনায় অন্য এক ছাত্রীও নদীতে ঝাঁপ দিয় আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন।
নিহতের মামা জাহিদ হাসান বলন, পাঁচজন ছাত্রী বেলা সাড়ে তিনটার দিকে স্কুলের ছাদে ধূমপান করছিল। সেখানে তার ভাগ্নিও ছিল। তাদের সিগারেট খাওয়ার দৃশ্য বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক লাল্টু ও ওয়ালিউর রহমান তাদের ফোনে ভিডিও করেন। পরে ওই ছাত্রীদের অফিস কক্ষে ডেকে মারধর করার পর ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন তারা। সেই সঙ্গে টিসি দিয়ে বিদ্যালয় থেকে বের করে দেওয়াসহ অভিভাবকদের জানানোর ভয় দেখান। এ ঘটনার পর বিদ্যালয় ছুটি হলে তার ভাগ্নি বাড়িতে এসে নিজের ঘরে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, শিক্ষার্থীদের ভুলকে পুঁজি করে ভিডিও ধারণ করে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি ও ভয়ভীতি দেখানো মোটেই কোনো শিক্ষক সুলভ আচরণ নয়। তিনি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার ও তার ভাগ্নিকে আত্মহত্যার প্ররোচনায় দায়ী শিক্ষকদের কঠোর শাস্তির দাবি জানান।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক লাল্টু বলেন, ছাত্রীদের ধূমপানের দৃশ্য মোবাইলে ভিডিও করার প্রশ্নই আসে না। ধূমপানের ঘটনা শুনে তাদের অফিসে ডেকে বিষয়টি অভিভাবকদের জানানোর কথা বলেছিলাম। পরে বিকেলে শুনেছি এক শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে।
সুলতানপুর মাহতাবুদ্দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রশিদ বলেন, তিনি ঘটনার সময়ে বিদ্যালয়ের বাইরে ছিলেন। বিকাল সাড় পাঁচটার দিকে ঘটনাটি জেনেছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকিবুল ইসলাম জানান, স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যার ঘটনায় প্রাথমিক তদন্ত চলছে। নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। অভিযোগ পেলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।