কামরুজ্জামান সুইট, দৈনিক শিক্ষাডটকম : অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম বিস্তরণ প্রশিক্ষণ চলছে। ঝালকাঠির চার উপজেলার ২৯৯টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ২৯৯ জন শিক্ষক প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। প্রতিষ্ঠান প্রধানদের এই প্রশিক্ষণ চলবে তিনদিন। তারা প্রশিক্ষণ নিয়ে আগামীতে স্ব-স্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে সহকারী শিক্ষকদের নতুন কারিকুলাম বিষয় তদারকি করা ও শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করবেন।
প্রশিক্ষণে অংশ নেয়া শিক্ষকরা বলছেন, প্রশিক্ষণের মধ্যে দিয়ে তাদের বিভিন্ন ঘাটতি পূরণ হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের পাঠদান থেকে শুরু করে মূল্যায়ন পর্যন্ত নানা ক্ষেত্রে সহায়ক হবে এই প্রশিক্ষণ। সর্বোপরি এই প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান প্রধানদের আরো গতিশীল করবে।
নতুন কারিকুলাম বিস্তরণ মিনিটরিং ও মেন্টরিং প্রশিক্ষণ দেয়ার জন্য মাস্টার ট্রেইনার হিসেবে ১০ জন ট্রেইনার প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। তার মধ্যে টিচার্স ট্রেনিং কলেজ থেকে ছয়জন ও চারজন উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার।
সোমবার দুপুরে ঝালকাঠি সরকারি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সরেজমিন দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন কক্ষে প্রতিষ্ঠান প্রধান শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ চলছে। মাল্টিমিডিয়া এবং প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রশিক্ষকরা প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। প্রশিক্ষণে অংশ নেয়া শিক্ষকরাও মনযোগ সহকারে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছেন।
ষাটপাকিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক মো. মহিউদ্দিন জানান, নতুন কারিকুলাম শিক্ষার্থীদের জন্য চমৎকার। শ্রেণিকক্ষে শিখনকালীন মূল্যায়ন শিক্ষকরা দক্ষতা এবং আন্তরিকাতার সঙ্গে করতে পারলে সহকারী শিক্ষকরা ও শিক্ষার্থীরা অনেক উপকৃত হবেন। নতুন কারিকুলামের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য সফল হবে। এ কারিকুলাম অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের পাঠদান করাতে পারলে উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা এগিয়ে যাবে।
প্রশিক্ষণে অংশ নেয়া বৈদারাপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিক মো. ফকরুল ইসলাম জানান, নতুন কারিকুলাম নিয়ে নানা ধরণের কথাবার্তা চলছিলো। কিন্তু এই প্রশিক্ষণ সব ধারণা পরিবর্তন করে দিয়েছে। এই প্রশিক্ষণ সহকারী শিক্ষকদের মনিটরিং ও পাঠদানের ক্ষেত্রে অনেক সহায়ক হবে।
প্রশিক্ষক আব্দুলাহ আল শরীফ জানান, তার কক্ষে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৫৫ জন শিক্ষক রয়েছেন। প্রশিক্ষণে মাল্টিমিডিয়াসহ নানা প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। নতুন কারিকুলাম বিস্তরণ, মনিটরিং ও মেন্টরিংএ নানাভাবে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে।
প্রশিক্ষক বদরুল আমিন ও আমিনুল ইসলাম খান জানান, তাদের কক্ষে ৬৫ জনকে তারা প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। প্রশিক্ষণে মাল্টিমিডিয়া, বিভিন্ন প্রযুক্তি, ইন্টারনেটযুক্ত অ্যানড্রয়েড ফোন, পোস্টারসহ নানা ধরণের উপকরণ ব্যবহার করা হচ্ছে। শিক্ষকরা মনোযোগ সহকারে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছেন। প্রশিক্ষণে অংশ নেয়া শিক্ষকরাও নানা বিষয় সম্পর্কে তাদের কাছ থেকে ধারণা নিচ্ছেন। প্রশিক্ষকরাও নানা বিষয়ে শিক্ষকদের ধারণা দিচ্ছে।
ঝালকাঠি জেলা প্রশিক্ষণ সমন্বয়ক ফারজানা ইসলাম জানান, জেলার সব উপজেলার মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানদের নিয়ে সোমবার থেকে শুরু হয়েছে প্রশিক্ষণ। প্রতিটি উপজেলার শিক্ষকদের তিনদিন ধরে প্রশিক্ষণ চলবে। জেলার মাধ্যমিক স্তরের ২৯৯টি বিদ্যালয়, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ২৯৯ জন প্রতিষ্ঠান প্রধান এ প্রশিক্ষণে অংশ নিয়েছেন। মোট ১০ জন প্রশিক্ষক এই প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন।