নতুন শিক্ষাক্রমে এসএসসি নিয়ে এখনো ধোঁয়াশা - দৈনিকশিক্ষা

নতুন শিক্ষাক্রমে এসএসসি নিয়ে এখনো ধোঁয়াশা

রুম্মান তূর্য, দৈনিক শিক্ষাডটকম |

নতুন শিক্ষাক্রমে প্রথম এসএসসি পরীক্ষা নিয়ে এখনো ধোঁয়াশায় রয়েছে শিক্ষা বোর্ডগুলো। এ পরীক্ষা কিভাবে বা কি উপায়ে হবে, শিক্ষার্থীদের কিভাবে মূল্যায়ন করা হবে সেসব বিষয় এখনো নির্ধারণ হয়নি। ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের শেষে বা ২০২৬ খ্রিষ্টাব্দের শুরুতে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। চলতি বছর যেসব শিক্ষার্থী বিভাগ বিভাজন ছাড়া নবম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রমে পড়াশোনা শুরু করেছেন তারা এ শিক্ষাক্রমের প্রথম এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশ নেবেন। 

জানা গেছে, নতুন নিয়মে পরীক্ষা নেয়া শুরু করার আগে পরীক্ষক, নিরীক্ষক, প্রশ্নকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে প্রশিক্ষণ দিতে হবে। তবে, সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এ পরীক্ষা কিভাবে হবে সে বিষয়ে এখনো জানে না শিক্ষা বোর্ডগুলো। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র দৈনিক আমাদের বার্তাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

সূত্রগুলো বলছে, নতুন শিক্ষাক্রমে পাবলিক পরীক্ষা আয়োজিত হবে সম্পূর্ণ নতুন নিয়মে। বর্তমানে যেসব শিক্ষক প্রশ্ন প্রণেতা, পরীক্ষক, নিরীক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন তারা পুরনো নিয়মে অভ্যস্ত। পাবলিক পরীক্ষা নিয়ে হেলাফেলা করা যাবে না। পরীক্ষা নেয়ার আগে পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট দায়িত্বে থাকা শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। এর আগে তাদের পুরো পদ্ধতি বোঝাতে হবে। তবে শিক্ষা বোর্ডগুলো নিজ নিজ উদ্যোগে এ প্রশিক্ষণ দেবে। প্রশিক্ষণ দিয়ে প্রশ্ন প্রণেতা, পরীক্ষক, নিরীক্ষকদের নতুন শিক্ষাক্রমে পরীক্ষার কার্যক্রমের সঙ্গে অভ্যস্ত করতে কিছুটা সময় লাগবে। তবে এ পরীক্ষা কি উপায়ে হবে তার মডেল এখনো চূড়ান্ত হয়নি। বলা হচ্ছে, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) নতুন শিক্ষাক্রমের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা নেয়ার মডেল করবে।

জানতে চাইলে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও  আন্তশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি অধ্যাপক তপন কুমার সরকার দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, নতুন শিক্ষাক্রমের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের শেষে বা ২০২৬ খ্রিষ্টাব্দের শুরুতে অনুষ্ঠিত হবে। এ পরীক্ষা কিভাবে হবে, মূল্যায়ন কিভাবে হবে সে বিষয়গুলো এনসিটিবি দেখছে। তারা পরীক্ষা ও মূল্যায়ন পদ্ধতি নির্ধারণ করে বোর্ডকে জানাবেন। আমরা প্রস্তুতি চালাবো। 

প্রশ্ন প্রণেতা, পরীক্ষক ও নিরীক্ষকদের প্রশিক্ষণের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নতুন পদ্ধতিতে অভ্যস্ত করতে পরীক্ষা সংশ্লিষ্টদের অবশ্যই প্রশিক্ষণ দিতে হবে। তবে এটি খুব সময়সাপেক্ষ কাজ হবে না। ১১টি শিক্ষা বোর্ড নিজ নিজ উদ্যোগে তাদের সেটার-মডারেটরদের প্রশিক্ষণ দেবে। 

এদিকে এনসিটি সূত্রে জানা গেছে, নতুন শিক্ষাক্রমের পাবলিক পরীক্ষার মডেল প্রস্তুত করার কাজ ইতোমধ্যে শুরু করেছে এনসিটিবি। নতুন কারিকুলাম প্রণয়নে জড়িত বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে এনসিটির কর্মকর্তারা এ মডেল প্রস্তুত করার কাজ করছে। সব শিক্ষা বোর্ডের সঙ্গে আলোচনা-পর্যালোচনা করে মডেল চূড়ান্ত করা হবে।  

জানতে চাইলে এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ফরহাদুল ইসলাম দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, নতুন শিক্ষাক্রমের এসএসসি বা সমমান পরীক্ষা কি উপায়ে নেয়া হবে সে বিষয়গুলো নির্ধারণে কাজ শুরু হয়েছে। আমরা নতুন পদ্ধতির পরীক্ষার একটি খসড়া মডেল প্রস্তুত করেছি। যা ইতোমধ্যে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী মহোদয়ের সামনে উপস্থাপন করা হয়েছে। যেহেতু শিক্ষা বোর্ডগুলো পরীক্ষা আয়োজন করে তাই মন্ত্রী মহোদয় নির্দেশ দিয়েছেন তাদের সঙ্গে আলোচনা পর্যালোচনা করে পরীক্ষার বিষয়গুলো চূড়ান্ত করতে। আমরা আগামী মার্চ মাস থেকে শিক্ষা বোর্ডগুলোর সঙ্গে এসব বিষয় নিয়ে বসবো। খসড়া মডেলটি তাদের সামনে উপস্থাপন করে তাদের মতামত নিয়ে সব কিছু চূড়ান্ত করা হবে। 

নতুন শিক্ষাক্রমের পাবলিক পরীক্ষার মূল্যায়ন পদ্ধতি কিভাবে হবে জানতে চাইলে তিনি আরো বলেন, আমার অবশ্যই ক্লাসের মূল্যায়ন প্রক্রিয়ার সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখবো। তা না হলে আগের মতো ফল নির্ভর পরীক্ষা পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। তবে নতুন শিক্ষাক্রমের পরীক্ষার্থীরা যেনো ক্ষতিগ্রস্ত না হন সে বিষয়টিও মাথায় রাখা হচ্ছে। অন্যান্য দেশের মূল্যায়ন পদ্ধতিগুলোও আমরা পর্যালোচনা করে দেখছি। সবার সঙ্গে আলোচনা করে শিক্ষার্থীদের জন্য, তাদের ভবিষ্যতে যাতে কোনো ভোগান্তিতে পড়তে না হয়-এসব মাথায় রেখেই কাজ চলছে।

জানা গেছে, চলতি বছর যেসব শিক্ষার্থী বিভাগ বিভাজন ছাড়া নবম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রমে পড়াশোনা শুরু করেছেন তারা এ শিক্ষাক্রমের প্রথম এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবেন। দশম শ্রেণির শেষে দশটি বিষয়ে এ পরীক্ষা হবে। এ পরীক্ষা প্রতিটি বিষয়ের ৫০ শতাংশ শিখনকালীন মূল্যায়ন ও ৫০ শতাংশ সামষ্টিক মূল্যায়ন বা পরীক্ষার মাধ্যমে হবে। এবারের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের দশম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রমে পড়াশোনা শুরু করবেন। সে বছরের শেষে বা ২০২৬ খ্রিষ্টাব্দের শুরুতেই এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা নেয়া হতে পারে।

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) দশম শ্রেণির শেষ পাবলিক পরীক্ষাকে দশম শ্রেণির যোগ্যতা যাচাইয়ের পাবলিক পরীক্ষা বলছে। বাংলা, ইংরেজি, গণিত, ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান, বিজ্ঞান, জীবন ও জীবিকা, ডিজিটাল প্রযুক্তি, স্বাস্থ্য সুরক্ষা, ধর্ম শিক্ষা এবং শিল্প ও সংস্কৃতি এ দশটি বিষয়ে দশম শ্রেণি শেষে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। আগে নবম শ্রেণি থেকেই বিভাগ বিভাজন শুরু হলেও নতুন শিক্ষাক্রমে তা হচ্ছে না। তাই এটাকে একমূখী শিক্ষা বলেও অভিহিত করা হচ্ছে।   দশম শ্রেণির যোগ্যতা যাচাইয়ে প্রতিটি বিষয়ে ৫০ শতাংশ শিখনকালীন মূল্যায়ন ও ৫০ শতাংশ সামষ্টিক মূল্যায়ন (পরীক্ষা) হবে।

এনসিটিবি প্রণীত জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখায় বলা হয়েছে, প্রচলিত পরীক্ষা পদ্ধতি নিচুস্তরের বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশের মূল্যায়ন করতো। তাই প্রচলিত পাবলিক পরীক্ষা পদ্ধতি বহাল রেখে শিক্ষাক্রমের মূল উদ্দেশ্য অর্থাৎ শিক্ষার্থীর জ্ঞানের পাশাপাশি দক্ষতা, দৃষ্টিভঙ্গি ও মূল্যবোধ অর্জন সম্ভব হবে না। তাই নতুন শিক্ষাক্রমে পাবলিক পরীক্ষায় সামষ্টিক মূল্যায়নের পাশাপাশি শিখনকালীন মূল্যায়ন অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। 

শিক্ষাসহ সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।

পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে আইইউটির ৩ ছাত্রের মৃত্যু - dainik shiksha পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে আইইউটির ৩ ছাত্রের মৃত্যু অনার্স কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণি বাদ দেয়া উচিত - dainik shiksha অনার্স কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণি বাদ দেয়া উচিত ভিকারুননিসা নূন স্কুলে ১ম থেকে ৯ম শ্রেণিতে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha ভিকারুননিসা নূন স্কুলে ১ম থেকে ৯ম শ্রেণিতে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রাথমিকে ২০ হাজার শিক্ষকের পদ সৃষ্টি হচ্ছে - dainik shiksha প্রাথমিকে ২০ হাজার শিক্ষকের পদ সৃষ্টি হচ্ছে স্কুল শিক্ষাকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত বর্ধিত করা উচিত - dainik shiksha স্কুল শিক্ষাকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত বর্ধিত করা উচিত নতুন পাঠ্য বইয়ে থাকছে শহীদ আবু সাঈদ ও মুগ্ধের বীরত্বগাথার গল্প - dainik shiksha নতুন পাঠ্য বইয়ে থাকছে শহীদ আবু সাঈদ ও মুগ্ধের বীরত্বগাথার গল্প শিক্ষাক্ষেত্রে আমরা পিছিয়ে আছি - dainik shiksha শিক্ষাক্ষেত্রে আমরা পিছিয়ে আছি ইএফটিতে বেতন দিতে এমপিও আবেদনের সময় এগোলো - dainik shiksha ইএফটিতে বেতন দিতে এমপিও আবেদনের সময় এগোলো কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে গুচ্ছভুক্ত ২৪ বিশ্ববিদ্যালয়ে পঞ্চম পর্যায়ের ভর্তি আজকের মধ্যে - dainik shiksha গুচ্ছভুক্ত ২৪ বিশ্ববিদ্যালয়ে পঞ্চম পর্যায়ের ভর্তি আজকের মধ্যে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.003788948059082