নতুন শিক্ষাক্রমে প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণির পরীক্ষা থাকছে না। প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়েই মূল্যায়ন করা হবে। এ শিক্ষাক্রমে উঠে যাচ্ছে প্রাথমিক সমাপনী এবং জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষাও। শুধু দশম শ্রেণি শেষে একটি পাবলিক পরীক্ষা দিতে হবে শিক্ষার্থীদের। আর একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণি শেষে প্রচলিত সএইচএসসি পরীক্ষার বদলে শিক্ষার্থীদের একাদশ শ্রেণি শেষে একটি ও দ্বাদশ শ্রেণি শেষে একটি, মোট দুই পাবলিক পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে।
গতকাল সোমবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে জাতীয় শিক্ষাক্রম সমন্বয় কমিটির (এনসিসিসি) যৌথ সভায় নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়নের আনুষ্ঠানিক অনুমোদন দেয়া হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মনি সভায় উপস্থিত ছিলেন।
আগামী বছর প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে পরীক্ষা থাকছে না :
রূপরেখা অনুসারে আগামী বছর অর্থাৎ ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ থেকে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের কাজ শুরু হবে। এ বছর প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণি এবং ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শুরু হবে। নতুন কারিকুলাম অনুসারে প্রাথমিকে প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত বিদ্যালয়েই ধারাবাহিক মূল্যায়ন হবে। কোন পরীক্ষা থাকবে না। যেহেতু আগামী বছর থেকে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়ন শুরু হওয়ায় এ দুই শ্রেণিতে পরীক্ষা হবে না। আর ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দে তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীরা নতুন কারিকুলামে পড়ালেখা শুরু করলে সে বছর থেকে তাদের পরীক্ষাও থাকছে না।
জেএসসি-জেডিসি থাকবে না ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ থেকে, থাকছে না প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষাও :
২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের ১ম ও ২য় শ্রেণি ও ৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শুরু হবে। ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দের ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণি এবং ৮ম ও ৯ম শ্রেণি এ শিক্ষাক্রমের আওতায় আসবে। এ শিক্ষাক্রমের আওতায় ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে স্কুল পর্যায়ের সব শিক্ষার্থীকে নিয়ে আসা হবে। এর আগে শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মনি জানিয়েছিলেন, নতুন কারিকুলামে স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের দশম শ্রেণি শেষে একটি পাবলিক পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে।
সে অনুসারে ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ থেকে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা নতুন কারিকুলামে অন্তর্ভুক্ত হলে সে বছর থেকেই জেএসসি পরীক্ষা থাকছে না। আর ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা নতুন কারিকুলামে অন্তর্ভুক্ত হলে সে বছর থেকে আর হবে না প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা।
একাদশ-দ্বাদশে দুইটি পাবলিক পরীক্ষা :
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ থেকে পরিমার্জিত নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শুরু হবে। ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে স্কুল পর্যায়ের কারিকুলাম বাস্তবায়ন সম্পন্ন হবে। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন করা হবে ২০২৬ ও ২০২৭ খ্রিষ্টাব্দে।
গত ১৩ সেপ্টেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি জানিয়েছিলেন, নতুন কারিকুলামে উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের গ্রেডিং হবে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির আলাদা পরীক্ষার ফলের সমন্বয়ে। উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে একাদশ শ্রেণি ও দ্বাদশ শ্রেণির পর শিক্ষার্থীদের আলাদা আলাদা দুটি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এ পরীক্ষারগুলোর ফল বিবেচনা করে দ্বাদশ শ্রেণির পর শিক্ষার্থীদের উচ্চমাধ্যমিকের মূল্যায়ন করা হবে। নতুন কারিকুলামে দশম শ্রেণির শেষে একটি পাবলিক পরীক্ষা এবং একাদশ শ্রেণির পর পরীক্ষা ও দ্বাদশ শ্রেণির শেষে একটি পাবলিক পরীক্ষা থাকছে।
নতুন কারিকুলামে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন যেভাবে :
নতুন কারিকুলামের রূপরেখা অনুসারে প্রাথমিকে প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত বিদ্যালয়েই ধারাবাহিক মূল্যায়ন হবে। কোন পরীক্ষা থাকবে না। আর চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে গিয়ে শিখনকালীন মূল্যায়ন হবে ৬০ শতাংশ। আর ৪০ শতাংশ মূল্যায়ন হবে ক্লাস শেষে পরীক্ষার মাধ্যমে যেটি সামষ্টিক মূল্যায়ন বলা হচ্ছে। ষষ্ঠ ও অষ্টম শ্রেণিতে বিদ্যালয়ে ধারাবাহিক মূল্যায়ন হবে ৬০ শতাংশ এবং ৪০ শতাংশ হবে সামষ্টিক মূল্যায়ন। নবম ও দশম শ্রেণিতে কয়েকটি বিষয়ে শিখনকালে অর্ধেক মূল্যায়ন হবে এবং বাকি অর্ধেক সামষ্টিক মূল্যায়ন হবে। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে ৩০ ভাগ শিখনকালীন মূল্যায়ন এবং ৭০ ভাগ সামষ্টিক মূল্যায়ন হবে।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।