নতুন শিক্ষাক্রমের পাঁচ মাস পেরিয়ে যাচ্ছে কিন্তু শেষ হয়নি শিক্ষক প্রশিক্ষণ কার্যক্রম। মাধ্যমিক ও প্রাথমিক পর্যায়ে এখনো ছয় লাখের বেশি শিক্ষকের প্রশিক্ষণ বাকি। যদিও গত বছরের নভেম্বরের মধ্যে শিক্ষক প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শেষ করার বাধ্যতামূলক ছিল। আর প্রশিক্ষণের মান নিয়েও রয়েছে বিস্তর অভিযোগ।
শিক্ষাবিদেরা বলছেন, শিক্ষাবর্ষ শুরুর পাঁচ মাসেও নতুন শিক্ষাক্রমের শিক্ষক প্রশিক্ষণ গ্রহণ কার্যক্রম শেষ না হওয়া দুঃখজনক। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। নতুন শিক্ষাক্রমের বাস্তবায়নও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
চলতি বছর প্রথম, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রমে পাঠদান শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে আগামী বছর থেকে অন্যান্য শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম শুরু হবে।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) সূত্র জানায়, নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে শিক্ষকদের অনলাইন ও সরাসরি পাঁচ দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। তবে প্রশিক্ষণের মান নিয়ে শিক্ষকেরা সন্তুষ্ট নন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে অন্তত ১৫ জন শিক্ষক জানান, নতুন শিক্ষাক্রমের অনলাইন ও সরাসরি প্রশিক্ষণের মান সন্তোষজনক ছিল না। ফলে অনেক বিষয় তাঁদের কাছে পরিষ্কার নয়। এতে নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী ক্লাস পরিচালনা করা কঠিন হয়ে পড়ছে।
প্রকল্প সূত্র বলছে, গত বছরের নভেম্বরের মধ্যে জেলা পর্যায়ের প্রশিক্ষক প্রশিক্ষণের বাধ্যবাধকতা ছিল। কিন্তু নানা জটিলতায় তা সম্ভব হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে ৭ মে অনুষ্ঠিত সেকেন্ডারি এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামের বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা সভায়।
ওই সভায় ডেসিমনেশন অব নিউ কারিকুলাম স্কিমের পরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ মাহফুজ আলী মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষক প্রশিক্ষণের অগ্রগতি প্রতিবেদন তুলে ধরেন। তিনি বলেন, জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা ২০২১-এর আলোকে প্রণীত ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির পরিমার্জিত শিক্ষাক্রম ২০২৩ শিক্ষাবর্ষে বাস্তবায়নের নিমিত্তে নভেম্বর ২০২২-এর মধ্যে জেলা পর্যায়ের প্রশিক্ষক প্রশিক্ষণের বাধ্যবাধকতা ছিল।
প্রাথমিক পর্যায়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশাপাশি কিন্ডারগার্টেন স্কুল এবং ইবতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। সাড়ে সাত লাখের বেশি শিক্ষককে এই প্রশিক্ষণের আওতায় আনা হবে। ৮ মে পর্যন্ত পাওয়া শিক্ষক প্রশিক্ষণের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কিন্ডারগার্টেনের ৩ লাখ ৪৪ হাজার ৮৩৭ শিক্ষকের প্রশিক্ষণ এখনো বাকি। আর বেসরকারি ইবতেদায়ি মাদ্রাসার ১ লাখ ২০ হাজার ৫৯৮ জন শিক্ষকের প্রশিক্ষণ এখনো বাকি।
এ বিষয়ে এনসিটিবি সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষকের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শেষ। আর যেসব শিক্ষক এখনো প্রশিক্ষণের বাইরে রয়েছেন, তাঁরা বেসরকারি কিন্ডারগার্টেন ও ইবতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষক।