বিখ্যাত বাঙালি লেখক নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের মৃত্যুবার্ষিকী আজ। নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় ১৯১৮ খ্রিষ্টাব্দের ৪ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন দিনাজপুর জেলার ঠাকুরগাঁও মহকুমার (বর্তমানে ঠাকুরগাঁও জেলা) বালিয়াডাঙ্গি উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা প্রমথনাথ গঙ্গোপাধ্যায় একজন পুলিশ কর্মকর্তা ছিলেন। তার পৈতৃক নিবাস বরিশালের বাসুদেব পাড়া গ্রামে। নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের শিক্ষাকাল কাটে দিনাজপুর, ফরিদপুরের রাজেন্দ্র কলেজ, বরিশালের ব্রজমোহন কলেজ ও কলকাতায়। ১৯৪১ খ্রিষ্টাব্দে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হন এবং ডক্টরেট ডিগ্রি নেন ১৯৬০ খ্রিষ্টাব্দে। এরপর তিনি জলপাইগুড়ি কলেজ, সিটি কলেজ ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন।
নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় ছেলেবেলা থেকেই লেখালেখি শুরু করেন। তার প্রথম লেখা ছাপা হয় মাস পয়লা শিশু মাসিকে। সন্দেশ, মুকুল, পাঠশালা, শুকতারা প্রভৃতি পত্রিকায় তিনি নিয়মিত লিখেছেন। সাপ্তাহিক দেশ পত্রিকায় সুনন্দর জার্নাল লিখে সুখ্যাতি অর্জন করেন।
বাঙালির জীবনযাত্রা, সংস্কৃতি, রোজকার সমস্যা ও রাজনীতি নিয়ে লেখা নিয়মিত এই জার্নাল অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিলো বাঙালি পাঠকের কাছে। এ সময় তিনি বড়দের জন্য আনন্দবাজার, বিচিত্রা, শনিবারের চিঠি ও চতুরঙ্গে লেখালেখি করেন। তার সাহিত্য জীবন শুরু হয় কাব্যচর্চা দিয়ে। পরে তিনি গল্প-উপন্যাস লিখতে শুরু করেন। বড়দের জন্য রচিত প্রথম প্রকাশিত ‘উপনিবেশ’ ছাপা হয় মাসিক ভারতবর্ষে। এটি গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয় ১৯৪৩ খ্রিষ্টাব্দে। তার উপন্যাস-গল্প রচনার অনুপ্রেরণা যোগান উপেন্দ্রনাথ গঙ্গোপাধ্যায়, পবিত্র গঙ্গোপাধ্যায়, সুধাংশুকুমার রায় চৌধুরী, বিজয়লাল চট্টোপাধ্যায়, মন্মথ সান্যাল, সজনীকান্ত দাস ও ফনীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়।
নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের অমর খ্যাতি বড়দের জন্য রচিত উপন্যাস ও গল্পের জন্য। কিন্তু শিশু-কিশোর সাহিত্য রচনায় তার খ্যাতি বড়দের চেয়ে কোন অংশে কম নয়। টেনিদা তার অনন্য সৃষ্টি। নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় ১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দের এই দিনে পরলোকগমন করেন।