দৈনিক শিক্ষাডটকম, জবি প্রতিনিধি: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম বলেছেন, আমাদের সংবিধানের মৌলিক অধিকারে বলা আছে আমরা সবাই সমান। কিন্তু অনেকক্ষেত্রে নারী ও পুরুষ এখনও সমান নয়, নারীদের এখনো দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক মনে করা হয়। আমি খুব গর্বিত আমি বাঙালি, আমাকে যদি সুযোগ দেয়া হতো আরেকবার জন্ম নেয়ার, আমি বাঙালি নারী হয়েই জন্ম নিতাম।
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে জবির চারুকলা বিভাগ আয়োজিত 'মুক্তিযুদ্ধ ও বিজয় গাথা' শীর্ষক আর্ট ক্যাম্পের উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন উপাচার্য।
তিনি আরো বলেন, বিজয়ের গাম্ভীর্য, উল্লাস, উচ্ছ্বাস সবকিছুর সঙ্গেই চারুকলার যোগ রয়েছে। আমাদের পরিচিতি বিভিন্ন রাজনৈতিক আবহে পরিবর্তন হয়ে গেছে। ১৫ আগস্টে জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে আমাদের বাঙালী পরিচয়কেও হত্যা করা হয়। ধর্মের ভিত্তিতে দেশবিভাগ হলেও পাকিস্তানের সঙ্গে আমাদের সমাজ ও সংস্কৃতির মিলের চেয়ে ভিন্নতাই বেশি ছিল, আমাদের সংবিধানের জাতিয়তাবাদ- সবাই মনে করেছিলো আমরা উগ্রজাতিয়তাবাদে যাচ্ছিলাম কিন্তু বঙ্গবন্ধু সেটা বিশ্বাস করেননি।
অনুষ্ঠানে চারুকলা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোহা. আলপ্তগীনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মো. হুমায়ূন কবীর চৌধুরী। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে সৃজনশীলতা সৃষ্টির জন্য চারুকলা বিভাগের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম আর চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা সৃজনশীল বলেই এই বিভাগের শিক্ষার্থীরা কখনো মৌলবাদের সঙ্গে সংযুক্ত থাকতে পারে না।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন। তিনি বলেন, দেশ স্বাধীনের আগে ও পরে সব আন্দোলনে শিল্পীরা সবসময় পাশে ছিলেন। আর নতুন কিছু সৃষ্টি করতে হলে শিল্পচেতনা থাকতে হয়। সাধারণ মানুষ থেকে আধুনিক মানুষরা বেশি লেবাসধারী হয়ে থাকে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা যাতে রক্ষা পায় আমাদেরকে এবিষয়ে সচেতন থাকতে হবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. হোসনে আরা বেগম এবং স্বাগত বক্তব্য রাখেন চারুকলা বিভাগের অধ্যাপক ড. বজলুর রশীদ খান। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, ইনস্টিটিউটের পরিচালক, বিভাগীয় চেয়ারম্যানসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, আর্ট ক্যাম্পে তৈরি শিল্পকর্মগুলোর প্রদর্শনীর উদ্বোধন হবে ১৯ ডিসেম্বর। প্রদর্শনীটি সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।