ফেনীতে আহনাফ আল মাঈন নাশিত (১০) হত্যা মামলার আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে ফেনী গ্রামার স্কুল, জিয়া একাডেমি স্কুল এবং ফেনী বিদ্যা নিকেতন স্কুলের শিক্ষার্থীরা। শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) দুপুরের দিকে শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে নিহত নাশিতের এলাকাবাসীর ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
এ সময় ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে,’ ‘নিশাত হত্যার বিচার চাই, বিচার চাই, বিচার চাই,’ ‘নিশাত, সাঈদ, মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’সহ নানারকম শ্লোগান দেয় বিক্ষুদ্ধরা।
মানববন্ধনে ফেনী গ্রামার স্কুলের প্রধান শিক্ষক ডাক্তার রাজিয়া সুলতানা বলেন, ‘নিশাত আমার প্রতিষ্ঠানের ছাত্র ছিল। নিশাতকে হত্যা করেছে, তারা গত তিন-চার বছর ধরে আমাদের স্কুলের পাশে সব সময় আড্ডা দিত। তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে লাশ গুম করতে স্কুল ব্যাগে পাথর বোঝাই করে ডোবায় চাপা দেয়। আমরা এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
নিহত নাশিতের স্কুলের সহকারী শিক্ষক আয়েশা আক্তার বলেন, শহরের আতিকুল আলম সড়কের একটি বাসায় পরিবারের সঙ্গে ভাড়া থাকত নাশিত। ১০ বছর বয়সী শান্ত-সৃষ্ট নিরপরাধ বাচ্চাটিকে যারা হত্যা করেছে তাদের বিচারের দাবিতে আমরা শিক্ষার্থীদের নিয়ে এখানে মানববন্ধন করছি। পরে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেব।
ফেনী গিরিশ-অক্ষয় (জিএ) একাডেমির নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী নুরুল্লাহ শুভ বলেন, আমার ভাই নিশাত হত্যাকারী তুষারসহ ঘাতকদের ফাঁসি চাই। এদের দ্রুত বিচার করা হোক যাতে আগামীতে এমন নৃশংস ঘটনা বাংলাদেশের কোথাও না হয়। নিশাত হত্যার বিচার না হলে এ রকম আরো অনেক নিশাত হত্যার শিকার হবে।
গত ৮ ডিসেম্বর শিশু নাশিতকে অপহরণ করে সংঘবদ্ধ একটি চক্র। অপহরণকারীরা নাশিতের ছবি তুলে তার বাবা মাঈন উদ্দিন সোহাগের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে পাঠিয়ে ১২ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। একপর্যায়ে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর মরদেহ রেললাইনের পাশে ডোবায় ফেলে দেন। মরদেহ যেন পানিতে ভেসে না ওঠে সেজন্য নাশিতের স্কুল ব্যাগে পাথর ভরে চাপা দেন তারা। ১১ ডিসেম্বর এ ঘটনায় ৩ যুবককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে পুলিশ। পরে তাদের দেখানো স্থান শহরতলীর নির্জন এলাকা দেওয়ানগঞ্জ রেললাইনের পাশে একটি ডোবা থেকে নাশিতের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নাশিত ফেনী শহরের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবসায়ী এবং রেডক্রিসেন্ট কর্মচারী মাঈন উদ্দিন সোহাগের ছেলে।
পুলিশ এ পর্যন্ত নাশিত হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে আশ্রাফ হোসেন তুষার (২০), মোবারক হোসেন ওয়াসিম (২০) ও ওমর ফারুক রিপাত (২০) নামের ৩ যুবককে গ্রেফতার করেছে।