নিউজপ্রিন্টের ওয়ানটাইম পাঠ্যবই প্রসঙ্গে - দৈনিকশিক্ষা

নিউজপ্রিন্টের ওয়ানটাইম পাঠ্যবই প্রসঙ্গে

মো: আব্দুল হক |

“নতুন পাঠ্যবইয়ে কাগজের মান ভালো না বলে অভিযোগ তুলেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। নিউজ প্রিন্টে বই ছাপানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে_-- দৈনিক শিক্ষা।”

--- উপর্যুক্ত মন্তব্য দেখে একটা মন্তব্য না করে পারছি না।

শিক্ষকদের দায়িত্ব পাঠ্য অংশ পড়ে তার সারাংশ শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রবাহিত করা। ছাপার মান, কাগজের মান ইত্যাদি নির্ভর করে বইয়ের দামের ওপর। যে বইয়ের মেয়াদ এক পঞ্জিকা বর্ষ তা ১০০ গ্রাম অফসেট পেপারে প্রকাশ করে বইয়ের পেছনে সরকার তথা অভিভাবকদের পকেট ছিদ্র করার কোন অর্থ আছে বলে মনে করিনে।

শিক্ষা উপকরণ হিসেবে মূল উপাদান বই এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু বইয়ের মুল উপাদান পাঠ্য গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ, ইতিহাস, ভূগোল, ব্যাকরণ, গণিত তথা পাঠ্য বা বিষয়বস্তু। বিষয়বস্তু নির্ধারিত হয় রাষ্ট্রীয় নীতিআদর্শ, সমসাময়িক প্রয়োজন এবং বিশ্ব চাহিদাকে ভিত্তি করে। এসব দেখার বা যাচাই বাছাইয়ের দায়িত্ব থাকা উচিত ক্লাসরুম শিক্ষক এবং শিক্ষা বিজ্ঞানীদের। 

শিক্ষা বিজ্ঞানীরা যুগ যুগ গবেষণা করে এক একটা পাঠ্যপুস্তক রচনা করেন এবং দুই তিন পাঁচ বছর বিভিন্ন এলাকার শত শত শিক্ষার্থীদের ওপর প্রয়োগ করে প্রয়োজনীয় সংস্কার, পরিমার্জন করে শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেন। একবার স্কুল কলেজে পাঠ্য হিসেবে নির্ধারিত হলে তা অন্তত এক যুগ সামান্য পরিমার্জন ব্যতিরেকে অবিকৃত থাকে।

কোনো এক বিচিত্র কারণে প্রতিবছর পাঠ্য বই, সিলেবাস, পদ্ধতি ইত্যাদি সব চেঞ্জ হচ্ছে কিন্তু কেন? হ্যাঁ কেন তা নেতিবাচক তাই উল্লেখ করছি না। শুধু এটুকু বলতে চাই প্রতিবছর বিষয়বস্তুসহ বই পরিবর্তন শিক্ষকদের জন্য যেমন ক্ষতিকর তেমনি দেশের সাধারণ মানুষের জন্যও ক্ষতিকর।

আমাদের ছাত্রজীবনে আমরা বই কিনে পড়েছি। এক সেট বই দিয়ে একটা বাড়ি কিংবা পাড়ার অন্তত পাঁচজন শিক্ষার্থী পাঁচ বছর ধরে পড়েছে। বইয়ে খুব বেশি পরিবর্তন তখন আসতো না। খুব ধনী পরিবার ছাড়া নতুন বই কিনতে পারতো না। 

একই বই যুগ যুগ চলতো বলে শিক্ষকদের প্রতিটা বইয়ের কোন পৃষ্ঠায় কি আছে তা পৃষ্ঠা নম্বরসহ দাঁড়ি, কমা, সেমিকোলন পর্যন্ত মুখস্ত হয়ে যেত। স্যারেরা ক্লাসে পড়াতে গিয়ে পান্ডিত্য দেখাতে পারতেন। শ্রেণিপাঠদানের সময় তারা বিষয়বস্তু সম্পর্কিত নানান রসাত্মক গল্প, ঘটনা উদাহরণ হিসেবে ক্লাসে বলতেন। আমরা সিনেমার কাহিনীর ন্যায় সেসব আমাদের হৃদয় পটে এঁকে নিতাম। প্রতিটি অংকের কোথায় কোথায় কি কি জটিলতা আছে, শিক্ষার্থীরা ঠিক কোন জায়গায় ভুল করে তা শিক্ষকরা জানতেন, ক্লাসে বুঝানোর সময় সেসব জটিলতা সরল করে বুঝিয়ে দিতেন।

প্রতিবছর নতুন নতুন বই হওয়ায় শিক্ষকরা আসলে নিজেদের তেমন করে প্রস্তুত করতে পারছেন না তাই দূর্বলতা থেকে যাচ্ছে শ্রেণি পাঠদানে। দূর্বলতা নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা তাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পুরো দেশ। 

সিলেবাস, বই ও শিক্ষা পদ্ধতি পরিবর্তনের আগে কর্তৃপক্ষের উচিত শিক্ষা সম্পর্কিত স্টেকহোল্ডারদের আর্থ সামাজিক সকল সূচক বিবেচনায় নেয়া।

লেখক: মো: আব্দুল হক,সহকারী অধ্যাপক গণিত বিভাগ, সাতক্ষীরা সরকারি কলেজ, সাতক্ষীরা ।

৬ষ্ঠ ও ৮ম শ্রেণির বাদপড়া শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ - dainik shiksha ৬ষ্ঠ ও ৮ম শ্রেণির বাদপড়া শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ ‘ভুয়া প্রতিষ্ঠাতা’ দেখিয়ে কলেজ সভাপতির প্রস্তাব দিলেন ইউএনও - dainik shiksha ‘ভুয়া প্রতিষ্ঠাতা’ দেখিয়ে কলেজ সভাপতির প্রস্তাব দিলেন ইউএনও বেরোবি শিক্ষক মনিরুলের নিয়োগ বাতিল - dainik shiksha বেরোবি শিক্ষক মনিরুলের নিয়োগ বাতিল এমপিও না পাওয়ার শঙ্কায় হাজারো শিক্ষক - dainik shiksha এমপিও না পাওয়ার শঙ্কায় হাজারো শিক্ষক কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক জাল সনদে শিক্ষকতা করা আরো ৩ জন চিহ্নিত - dainik shiksha জাল সনদে শিক্ষকতা করা আরো ৩ জন চিহ্নিত এসএসসি ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের ফরম পূরণের পূর্ণাঙ্গ বিজ্ঞপ্তি দেখুন - dainik shiksha এসএসসি ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের ফরম পূরণের পূর্ণাঙ্গ বিজ্ঞপ্তি দেখুন কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0035099983215332