কক্সবাজারের পেকুয়ায় নিখোঁজের ১৪ দিন পর শিক্ষক মোহাম্মদ আরিফের বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পেকুয়া উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলমের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছে স্থানীয়রা।
শুক্রবার বিকেলে নিজ বাড়ির পাশে পরিত্যক্ত পুকুর থেকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা মরদেহটি উদ্ধার করে বলে জানিয়েছেন পেকুয়া থানার ওসি মো. সিরাজুল মোস্তফা।
নিহত মোহাম্মদ আরিফ (৪২) পেকুয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের মাতব্বর পাড়ার মৃত বজল আহমদের ছেলে। তিনি পেকুয়া সেন্ট্রাল স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছিলেন।
গত ২৮ সেপ্টেম্বর রাতে পেকুয়ার চৌমুহনী থেকে বাড়ি ফেরার পথে ফায়ার সার্ভিস এলাকায় আরিফকে তুলে নিয়ে যায় ৮ থেকে ৯ জন দুর্বৃত্ত।
আরিফের স্ত্রী মেহেবুবা আনোয়ার লাইজু, তার স্বামীর অপহরণের পর চট্টগ্রাম মহানগরীর একটি রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলন করেন।
সেখানে তিনি দাবি করেন, জায়গা-জমির বিরোধ নিয়ে তাদের কোণঠাসা করতে ও মুক্তিপণ আদায় করতে তার স্বামীকে অপহরণ করা হয়েছে। অপহরণের পর অজানা ব্যক্তিরা তার শাশুড়ির মুঠোফোনে কল করে আরিফকে জীবিত ফিরিয়ে দিতে মোটা অঙ্কের টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন।
অপহরণকারীরা প্রথমে ২৫ লাখ টাকা ও দ্বিতীয় দফায় ৬০ লাখ টাকা এবং সর্বশেষ গত ৩ অক্টোবর ৪০ লাখ টাকা মুক্তিপণ চান।
লাইজু জানান, বেশি টাকা না থাকায় স্বামীকে বাঁচিয়ে রাখতে নগদ পেমেন্টের মাধ্যমে ৫০ হাজার টাকা দেন তিনি। এ ব্যাপারে থানাসহ আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
পেকুয়া থানার ওসি সিরাজুল মোস্তফা জানান, অনেকদিন ধরে নিখোঁজ থাকার পর শুক্রবার বিকেলে শিক্ষক আরিফের বাড়ির পাশে পুকুরে ভাসমান অবস্থায় সন্দেহজনক একটি বস্তা দেখতে পান স্থানীয়রা। পরে তারা বস্তাটি খুলে আরিফের মরদেহ দেখেন।
দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায় পুলিশ।
এদিকে শিক্ষক আরিফকে অপহরণের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে কয়েকশ’ লোক পেকুয়ার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলমের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছে। এতে বাড়ির বেশ কিছু অংশ ভস্মীভূত হয়। পরে ফায়ার সার্ভিস আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
ওসি সিরাজুল জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।