নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বিএনপি-জামায়াতপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল। সেই সঙ্গে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলীয় নেতা-কর্মীদের গণহারে গ্রেফতার ও জুলুম-নির্যাতনের প্রতিবাদ জানিয়েছে দলটি।
শুক্রবার সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক মো. লুৎফর রহমান, যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান এবং অধ্যাপক আবদুস সালাম স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এই প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।
ওই বিবৃতিতে বলা হয়, গত ২৮ অক্টোবর নয়াপল্টনে বিএনপি আয়োজিত শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশে পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের ন্যাক্কারজনক ও নির্মম হামলা এবং পরবর্তীতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য মির্জা আব্বাস ও আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ দলের শীর্ষস্থানীয় নেতাকর্মীদের গণহারে গ্রেফতার ও জুলুম-নির্যাতনের ঘটনার আমরা তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছি।
সাদা দলের নেতারা বলেন, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বর্তমান অগণতান্ত্রিক ফ্যাসিস্ট সরকারের পদত্যাগ এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও মানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিএনপির নেতৃত্বে চলমান গণআন্দোলন ও বৈশ্বিক চাপের মুখে সরকার ভীত হয়ে চরম নিপীড়ন ও নির্যাতনের পথ বেছে নিয়েছে। সরকার দলীয় সন্ত্রাসীদের আক্রমণ ও সরকারের আজ্ঞাবহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিরোধী দলগুলোর গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি বানচালের লক্ষ্যে গণহারে গ্রেফতার ও জুলুম-নির্যাতনের মাধ্যমে দেশে চরম অস্থিরতা, নৈরাজ্য ও ভীতিকর অবস্থা তৈরি করেছে। আমরা মনে করি, বলপ্রয়োগের মাধ্যমে জনজোয়ার প্রতিহত করে বর্তমান অগণতান্ত্রিক সরকার আবারো ২০১৪ এবং ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের মতো আরেকটি প্রহসনের নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে ক্ষমতায় থাকার অপচেষ্টায় মেতে উঠেছে। তবে আমরা বিশ্বাস করি, এসব গণগ্রেফতার, হামলা, নিপীড়ন-নির্যাতন ও কোনো ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে সরকার গণতন্ত্রকামী দেশপ্রেমিক মানুষের আন্দোলনকে প্রতিরোধ করতে পারবে না।
বিএনপিপন্থি শিক্ষক নেতারা বলেন, অপকৌশলের মাধ্যমে প্রধান বিরোধী দল বিএনপিকে নির্বাচন থেকে দূরে রেখে একটি একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে পুনরায় ক্ষমতা কুক্ষিগত করার যে ষড়যন্ত্র সরকার শুরু করেছে দেশবাসীর কাছে তা স্পষ্ট হয়ে গেছে। বিরোধী রাজনৈতিক শক্তিগুলোকে দলন ও নিপীড়নের যে পথ সরকার বেছে নিয়েছে তা জাতিসংঘসহ বিশ্বের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলো নজর এড়ায়নি। ইতোমধ্যে তারা এ বিষয়ে তাদের প্রতিক্রিয়াও ব্যক্ত করেছে। আমরা মনে করি, সরকারের বর্তমান অবস্থান এবং আবারো একটি নীল নকশার নির্বাচন আয়োজন বাংলাদেশকে কেবল গভীর অভ্যন্তরীণ সংকটে ফেলবে না, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও ঝুঁকিতে ফেলবে।
বিবৃতিতে জাতির বৃহত্তর কল্যাণে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিরোধী দলীয় রাজনৈতিক নেতাদের অবিলম্বে মুক্তি, গণগ্রেফতার বন্ধ এবং গণদাবি মেনে নিয়ে পদত্যাগ করে একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান সাদা দলের নেতারা।