বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আদলে জাতীয় সরকার গঠনের প্রস্তাব করেছেন চরমোনাই পীর ও ইসলামী আন্দোলনের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম।
রোববার (১৮ জুন) পল্টনে দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আহ্বান জানান। বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নিজ দলের মেয়র পদপ্রার্থীর ওপর হামলার প্রতিবাদ, সিইসি’র পদত্যাগের দাবিতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
চরমোনাই পীর বলেন, ‘এই অবৈধ সংসদ বহাল রেখে কোন নির্বাচন দেশবাসী মেনে নেবে না। বর্তমান সংসদ ভেঙে দিয়ে পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচনকালীন জাতীয় সরকারের অধীনে সকল দলের অংশগ্রহণে একটি গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন চাই। শান্তিপূর্ণ উপায়ে ক্ষমতা বদলের লক্ষ্যে আমরা মৌলিকভাবে কিছু প্রস্তাবনা তুলে ধরছি। জাতীয় সংসদের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার পূর্বেই জাতীয় সরকার গঠন করতে হবে। জাতীয় সরকার গঠিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বর্তমান জাতীয় সংসদ ভেঙে দিতে হবে। সংসদ ভেঙে দেওয়ার পাশাপাশি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনকালীন জাতীয় সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন। বর্তমান মন্ত্রিসভার কেউ নির্বাচনকালীন জাতীয় সরকারে থাকতে পারবেন না। জাতীয় সরকারে যারা থাকবেন তারা জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না। জাতীয় সরকার গঠিত হওয়ার পরবর্তী ৩ মাসের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করবেন। কোনও কারণে তা সম্ভব না হলে পরবর্তী ৩ মাসের মধ্যে অবশ্যই নির্বাচন দিয়ে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।’
ভোটাধিকার হরণে ক্ষমতাসীনদের ‘রাষ্ট্রীয় ও দলীয় সন্ত্রাসের’ কথাও নতুন নয় অভিযোগ করে মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ‘সরকারদলীয় সন্ত্রাসীরা কতটা নির্মম ও পৈশাচিকভাবে একজন আলেম ও রাজনীতিকদের ওপর দফায়-দফায় আক্রমণ করেছে, চরমভাবে আপমান অপদস্ত করেছে এমনকি শারীরিকভাবে আক্রমণ করে রক্তাক্ত করেছে, তা ভাষায় প্রকাশ করার মত নয়। নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তো দূরের কথা তার ব্যক্তিগত নিরাপত্তাটুকুও পাননি।’
প্রধান নির্বাচন কমিশনার হাবিবুল আউয়াল ‘একজন অবিবেচক উন্মাদের মতো’ মুফতি ফয়জুল করীমের শরীর থেকে রক্তক্ষরণ নিয়ে ‘তুচ্ছ তাচ্ছিল্য ও উপহাস’ করেছেন বলে অভিযোগ করেন মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম। তিনি বলেন, ‘আমরা অবিলম্বে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের পদত্যাগ চাই। তিনি পদত্যাগ করতে না চাইলে সাংবিধানিক প্রক্রিয়ায় দ্রুত তার অপসারণ চাই।’
সংবাদ সম্মেলনে দলের দুই কর্মসূচি ঘোষণা করেন চরমোনাই পীর। এরমধ্যে আগামী ২১ জুন প্রধান নির্বাচন কমিশনারের পদত্যাগের দাবিতে নির্বাচন কমিশন কার্যালয় অভিমুখী গণমিছিল করবে তার দল এবং ২৪ জুন রাজনৈতিক সংকট উত্তরণ ও একটি সুষ্ঠু নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচনের লক্ষ্যে মতবিনিময় করবেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, মাহবুবুর রহমান, মাওলানা নুরুল হুদা ফয়েজী, মহাসচিব মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, যুগ্ম মহাসচিব আশরাফুল আলম, সহকারী মহাসচিব মাওলানা ইমতিয়াজ আলম প্রমুখ।