দৈনিক শিক্ষাডটকম ডেস্ক: বিক্রি হয়ে গেল ২৪ বছর আগে মেসির সই করা সেই ন্যাপকিন পেপার। দাম উঠলো সাত লক্ষ ৬২ হাজার পাউন্ড। বাংলাদেশ মুদ্রায় যার পরিমাণ ১১ কোটি ২৯ লাখ ৯৩ হাজার ২০১ টাকা।
খ্রিষ্টাব্দে ২০০০। লিওনেল মেসির বয়স তখন ১৩। সেই বছরের সেপ্টেম্বরে পরিবার নিয়ে বার্সেলোনায় আসেন মেসি। সঙ্গে ছিলেন স্পেনে বার্সেলোনার হেড কোয়ার্টারে কাজ করা স্কাউট -হোরাশিও গ্যাগিওলি। বার্সার ট্রায়ালে মেসি যথারীতি চমকে দিলেন সবাইকে। মেসির পরিবার চুক্তির আশা নিয়ে ফিরল রোজারিওতে।
তখন বার্সেলোনার সভাপতি ছিলেন হুয়ান গাসপোর্ত। তিনি ভেবেছিলেন, যতোই ট্যালেন্ট থাকুক, হরমোনাল গ্রোথের সমস্যায় ভোগা ছেলেটা লম্বা হচ্ছে না, এমন কারো সঙ্গে চুক্তিতে যাওয়া ঠিক হবে না। কিন্তু মরিয়া গ্যাগিওলি বোঝালেন, অন্য ক্লাব এই খুদে প্রতিভাকে নিয়ে নেবে। তা রিয়াল মাদ্রিদও হতে পারে! এতে ক্লাব প্রেসিডেন্ট খানিকটা দ্বিধায় পড়লেও, পারেননি মনস্থির করতে। এমন অবস্থায় সিনে ঢুকে পড়লেন তৎকালীন নামকরা ফুটবল এজেন্ট মিনগুয়েলা, যিনি মারাদোনাকে বার্সেলোনায় নিয়ে আসতে রেখেছিলেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।
তিনি হলেন মেসির এজেন্ট। এরপর গ্যাগিওলি আর মিনগুয়েলা মিলে ধরলেন বার্সার টেকনিক্যাল ডিরেক্টরকে কার্লোস রেক্সাসকে, বোঝালেন। রেক্সাস হাত মোছার একটি ন্যাপকিন পেপার তুলে নিয়ে লিখলেন, ‘১৪ ডিসেম্বর, ২০০০ খ্রিষ্টাব্দে বার্সেলোনায় মিনগুয়েলা, হোরাশিও আর বার্সার টেকনিক্যাল সেক্রেটারি কার্লোস রেক্সাসের উপস্থিতিতে পূর্ণ দায়িত্বের সঙ্গে, কিছু অমত থাকা সত্ত্বেও নির্দিষ্ট অঙ্কে লিওনেল মেসিকে সই করানোর ব্যাপারে ঐকমত্য হওয়া গেল।’ এই কথার নিচে সই করেছিলেন রেক্সাস, মিনগুয়েলা ও গ্যাগিওলি।
লিওনেল মেসির ধুভতারার মতো যে আজকের পথচলায় সেটা শুরু ধরা হয় সেদিনে সেই কাগজের টুকরোয়। হরমোনাল গ্রোথের সমস্যা থাকা রোজারিওর ছোট ছেলেটাকে যদি বার্সেলোনা সই না করাতো, এই পথটা হয়তো স্বপ্নের চৌরাস্তায় ঠেকতো না। নিলামে ওঠার পর ওই কাগজের টুকরোটা দাম হয়েছে এগারো কোটি ২৯ লাখ টাকা।
পৃথিবীর ইতিহাসে সম্ভবত সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ ন্যাপকিন ওটাই। ওটার তাৎপর্যের তুলনায় দামটা বোধহয় কিছুই নয়, একটা অঙ্ক কেবল। যেভাবে বিন্দু বিন্দু জল থেকে সিন্ধু হয়েছে... মেসি নামের ফুটবল মহাসাগরের শুরুও তো হয়েছে এই সামান্য টুকরো থেকেই।