নিয়ম বহির্ভূতভাবে চালানোর কারণে অচলাবস্থা তৈরি হলে আবারও পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ করা হবে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
বৃহস্পতিবার (২০ এপ্রিল) ঈদযাত্রাকে কেন্দ্র করে পদ্মা সেতুর টোল প্লাজা পরিদর্শন করে এ কথা বলেন তিনি।
মোটরসাইকেল চালকদের উদ্দেশ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আশা করি সবাই নিয়ম মেনে চলাচল করবেন। নিয়ম বহির্ভূতভাবে চালানোর কারণে অন্যান্য যানবাহনের অসুবিধা হলে আবারও পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ করা হবে।’
নিয়ম মেনে চালালে সব সময় পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল করবে বলেও জানান তিনি।
এদিকে দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে স্বপ্নের পদ্মা সেতুতে সকাল ৬টা থেকে সার্ভিস লেনে মোটরসাইকেল চলাচল শুরু হয়েছে। সকালে জাজিরা টোল প্লাজার ব্যবস্থাপক কামাল হোসেন বলেন, ছয় শর্তে পদ্মা সেতুতে এটি চলাচলের অনুমতি দিয়েছে সরকার।
পদ্মা সেতুর নির্ধারিত সার্ভিস লেন দিয়ে এসব মোটরসাইকেল চলাচল করছে। সকাল থেকে চলাচল শুরু হলেও গভীর রাত থেকে মোটরসাইকেল চালকরা সেতুপ্রান্তে আসা শুরু করে। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে লাইন দীর্ঘ হতে থাকে। এটি চলাচলে সুবিধার জন্য সেতুর উভয় প্রান্তের টোল প্লাজায় আরও তিনটি লেন বাড়ানো হয়েছে।
এর আগে, মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচলের অনুমতি দেয় সরকার। এজন্য চালকদের কিছু শর্ত বেঁধে দেয়া হয়।
ওইদিন এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নির্ধারিত টোল দিয়ে মোটরসাইকেল সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার গতিতে সেতু পারাপার হতে পারবে। এর জন্য নির্ধারিত টোলবুথ ও নির্ধারিত লেন ব্যবহার করতে হবে। কোনো অবস্থাতেই নির্ধারিত লেন পরিবর্তন করা যাবে না। ওভারটেকও করা যাবে না। চালক ও আরোহীকে হেলমেটসহ প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা সামগ্রী ব্যবহার করতে হবে। কোনো অবস্থাতেই সেতুর ওপর দাঁড়ানো বা ছবি তোলা যাবে না। চালকসহ সর্বোচ্চ দুজন মোটরসাইকেলে চড়তে পারবেন।
বর্ণিত শর্তসমূহ প্রতিপালন করে পদ্মা সেতু ব্যবহারের জন্য বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে সবাইকে বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয়েছে। শৃংখলা না মানলে মোটরসাইকেল চলাচলের এ সুযোগ বাতিল করা হবে বলেও সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
গত বছরের ২৫ জুন উদ্বোধন করা হয় স্বপ্নের পদ্মা সেতু। পরদিন ২৬ জুন যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়। তারপরই মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। পরদিন এক গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২৭ জুন সকাল ৬টা থেকে পুনরায় আদেশ না দেয়া পর্যন্ত পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
পরে এ গণবিজ্ঞপ্তি নিয়ে হাইকোর্টে একটি রিট হয়। পদ্মা সেতু দিয়ে মোটরসাইকেল চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ কেন বেআইনী হবে না, সে বিষয়ে রুল চাওয়া হয় রিটে। রুল হলে বিচারাধীন অবস্থায় এ বিষয়ে অনুসন্ধান ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে রিটে নির্দেশনাও চাওয়া হয়।
পরে এ বছর ১৫ জানুয়ারিতে পদ্মা সেতু দিয়ে মোটরসাইকেল চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপের বিরুদ্ধে করা ওই রিটের শুনানি আট সপ্তাহের জন্য মুলতবি করেছিলেন হাইকোর্ট। এরপর রিট আবেদনটি গত ২৯ মার্চ আবার কার্যতালিকায় এলে আরও চার সপ্তাহের জন্য সেটি মুলতবি করা হয়।