নেকাব না খোলায় পরীক্ষা দিতে দেয়নি, অভিযোগ ছাত্রীর দৈনিক শিক্ষা

নেকাব না খোলায় পরীক্ষা দিতে দেয়নি, অভিযোগ ছাত্রীর

খাগড়াছড়িতে নেকাব না খোলায় পরীক্ষা দিতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন এক ছাত্রী। শনিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে এ অভিযোগ করেন উম্মে আন্জুমানয়ারা। তিনি বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাউবি) ২০২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

খাগড়াছড়িতে নেকাব না খোলায় পরীক্ষা দিতে দেয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন এক ছাত্রী। শনিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে এ অভিযোগ করেন উম্মে আন্জুমানয়ারা। তিনি বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাউবি) ২০২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।  

শুক্রবার বিকেলে মাটিরাঙা সরকারি ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে বাউবির সমাজতত্ত্ব পরীক্ষার দিন এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মাটিরাঙা সরকারি ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ ও পরীক্ষার কেন্দ্র সচিব কামাল হোসেন মজুমদারকে দায়ী করেছেন ওই শিক্ষার্থী।

ফেসবুক পোস্টে আন্জুমানয়ারা লেখেন, ‘শুক্রবার বেলা ২টার দিকে পরীক্ষা শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যেই কলেজের শিক্ষকরা আমার নেকাব খুলে মুখ দেখানোর জন্য বলেন। একজন নারী শিক্ষক বা নারী শিক্ষার্থীর সামনে নেকাব খোলার ইচ্ছে পোষণ করে শিক্ষকদের অনুরোধ করি। কিন্তু শিক্ষকরা আমার অনুরোধে সায় দেয়নি। বরং আমাকে হেনস্তা করার চেষ্টা করছিল। এ সময় হলের অন্য শিক্ষার্থীরা আমার পরিচয় নিশ্চিত করে। তারপরও অধ্যক্ষ এসে আমাকে নেকাব খোলার জন্য বলেন। আমি রাজি না হওয়ায় আমার পরীক্ষার খাতা নিয়ে নেয় এবং বহিষ্কার করা হবে হুমকি দেন অধ্যক্ষ। পুলিশ ডেকে আমাকে পরীক্ষার হল থেকে বের করে দেয়। পরে আমি পুলিশের হেল্প লাইন ৯৯৯ এ ফোন করি। এর পর মাটিরাঙা থানা থেকে পুলিশ আসে। 

তিনি আরও বলেন, ‘পুলিশ ৩টা ৫৫ মিনিটের দিকে আমার পরীক্ষা কেন্দ্রে আসে। তখনো ১ ঘণ্টার বেশি পরীক্ষার সময় ছিল। এ সময় অধ্যক্ষ পুলিশ নিয়ে তার কক্ষে চলে যায়। পরীক্ষা শেষ হওয়ার ১০ থেকে ২০ মিনিট আগে অধ্যক্ষ তার রুম থেকে বের হয়ে মহিলা পুলিশ দিয়ে আমার পরিচয় নিশ্চিত করেন। ততক্ষণে আমার পরীক্ষার সময় শেষ।’

ওই শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমি কোনো অসদুপায় অবলম্বন করি নাই, খারাপ ব্যবহারও করিনি। তারপরও আমার সাথে অন্যায় হয়েছে। আমি পরীক্ষা দিতে পারি নাই। আমি এর প্রতিকার চাই।’

এ বিষয়ে মাটিরাঙা সরকারি ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. কামাল হোসেন মজুমদার বলেন, বিধি অনুযায়ী প্রবেশপত্রে যে ছবি তা দেখে পরীক্ষা নিতে হবে। হলের শিক্ষকরা তাকে অনুরোধ করে নেকাব খোলার জন্য। পরে আমি পুলিশকে মহিলা পুলিশ দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেও সেভাবে রেসপন্স পাইনি। পরে ওই শিক্ষার্থী ৯৯৯-এ ফোন করায় মহিলা পুলিশ আসে। শেষ মুহূর্তে মহিলা পুলিশ এসে তার পরিচয় নিশ্চিত করে। তবে কেউ যদি আমাকে ফাঁসাতে চায় তাতে আমার কোনো আপত্তি নেই। আমাকে বদলি করলে, আমি চলে যেতে এক পায়ে রাজি। 

এদিকে এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছে পার্বত্য নারী সংহতি। শনিবার দুপুরে সংগঠনের আহ্বায়ক শাহেনা আক্তার ও সদস্য সচিব তানজিলা সুলতানা রুমার সই করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শিক্ষার্থীর প্রতি অমানবিক ও বৈষম্যমূলক আচরণের জন্য দায়ী ব্যক্তির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করতে হবে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর পুনরায় পরীক্ষার দেওয়ার সুযোগ নিশ্চিত করার পাশাপাশি সুবিচার করতে হবে।

এ বিষয়ে মাটিরাঙা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তৌফিকুল ইসলাম বলেন, ‘৯৯৯ থেকে ফোন পেয়ে জানতে পারলাম যে একটা মেয়েকে পরীক্ষার হলে ঢুকতে দিচ্ছে না। এরপর আমরা কলেজে গেলে প্রিন্সিপাল জানান তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।’