নোবিপ্রবিতে অভিযোগ করেও বিচার পাননি হেনস্তার শিকার শিক্ষিকা - দৈনিকশিক্ষা

নোবিপ্রবিতে অভিযোগ করেও বিচার পাননি হেনস্তার শিকার শিক্ষিকা

নিজস্ব প্রতিবেদক |

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নাজমুস সাকিব খানের বিরুদ্ধে একই বিভাগের এক নারী শিক্ষককে হেনস্তা করার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার শিকার ওই নারী প্রভাষক এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের ডিনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিষয়টি আমলেই নেয়নি। এ নিয়ে শিক্ষকদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। অনেকেই অভিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবি করছেন।

জানা গেছে, গত বছরের ৬ ডিসেম্বর দুপুর ২টার দিকে নাজমুস সাকিব খান তার কক্ষে অন্যান্য শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের সামনেই প্রভাষক ফাহমিদা আক্তারের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন। বিভাগের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের এমন আচরণে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন তিনি। প্রতিকার চেয়ে ১২ ডিসেম্বর বিজ্ঞান অনুষদের ডিনকে লিখিত অভিযোগ দেন ফাহমিদা আক্তার।

জানতে চাইলে নাজমুস সাকিব খান বলেন, ‘অভ্যন্তরীণ অনেক ঝামেলা থাকে। এসব নিয়ে তিনি অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন আমাকে ডাকেনি। অভিযোগ দেওয়ার পর সহকর্মী ফাহমিদার সঙ্গে আমি মিটিং করেছি।’

বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. আতিকুর রহমান ভূঞা বলেন, ‘নারী শিক্ষক যখন নাজমুস সাকিবের বিরুদ্ধে  অভিযোগ দিয়েছে, তখন আমি দায়িত্বে ছিলাম না। অভিযোগটি আমার দপ্তরে নেই। হয়তো এটা ওপরে চলে গেছে।’ এদিকে নাজমুস সাকিবকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়া নিয়েও সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের বেশিরভাগ শিক্ষকের ক্ষোভ রয়েছে।

তারা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে বিভাগের চেয়ারম্যান নিয়োগ দেওয়ার কথা। কিন্তু আইন লঙ্ঘন করে সহকারী অধ্যাপক নাজমুস সাকিব খানকে ২০২২ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি এক অফিস আদেশে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নিয়োগ দেওয়া হয়। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হলেও নাজমুস সাকিব খান নিজেকে চেয়ারম্যানই দাবি করেন। তিনি বিভাগের সব নথিপত্রে চেয়ারম্যান লিখে যাচ্ছেন। চেয়ারম্যানের পাশে ব্রাকেটে ভারপ্রাপ্ত লিখতে তাকে মৌখিক, লিখিত ও ইমেইলে বারবার বলার পরও তিনি তা মানছেন না। তিনি নিজেকে পূর্ণাঙ্গ চেয়ারম্যান দাবি করতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। সূত্র জানায়, সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের একটি দাপ্তরিক ডকুমেন্টে চেয়ারম্যানের পাশে ব্রাকেটে ভারপ্রাপ্ত লেখায় বিভাগের কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুনের মুখে সেই কাগজ ছুড়ে মারেন নাজমুস সাকিব খান। তিনি ঘটনাটি বিভাগের সিনিয়র শিক্ষক ড. মো. গোলাম মোস্তফাকে জানিয়ে তাৎক্ষণিক বিভাগ থেকে বেরিয়ে যান। সূত্র জানায়, বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রজত শুভ্র দাস সুইডেনে তার একটি স্কলারশিপের আবেদনের কিছু ডকুমেন্ট নাজমুস সাকিব খানের কাছে নিয়ে যান। ডকুমেন্টগুলোতে চেয়ারম্যান শব্দটির পাশে ব্রাকেটে ভারপ্রাপ্ত লেখা থাকায় তিনি তাতে স্বাক্ষর করেননি। পরে বাধ্য হয়ে রজত শুভ্র দাস ডকুমেন্টগুলোতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের স্বাক্ষর নেন। 

এ প্রসঙ্গে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নাজমুস সাকিব খান বলেন, ‘আমি চেয়ারম্যানই লিখি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে আমাকে কখনোই ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান লিখতে বলা হয়নি। চেয়ারম্যান হিসেবে লেখা আমার সব চিঠিপত্রই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গ্রহণ করছে। ভারপ্রাপ্ত না লেখার দায়ে কখনো রিজেক্ট করেনি।’ বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. আতিকুর রহমান ভূঞা বলেন, ‘এটা প্রশাসন বলতে পারবে। আমি শুধু একাডেমিক কার্যক্রমের বিষয়ে জানি।’

কর্মকর্তারা জানান, সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগে পিএইচডি ডিগ্রিধারী একজন সহযোগী অধ্যাপকও রয়েছেন। অথচ তাকে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে না। দ্রুত সাকিবকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরিয়ে আইন অনুযায়ী সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফাকে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়ার দাবি উঠেছে।

অভিযোগ রয়েছে, মাস্টার্সে (২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষ) বেআইনি পরীক্ষা কমিটি গঠন ও বেশিরভাগ কোর্স-টিচারের প্রশ্নপত্র ছাড়াই পরীক্ষার আয়োজন করেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। মাস্টার্সের যে পরীক্ষা কমিটি গঠন করেছেন তাও বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্স প্রোগ্রামের অর্ডিন্যান্সের ৫.১০ ধারার পরিপন্থি। যেখানে তিনি একজন প্রভাষক এবং একজন সহকারী অধ্যাপককে নিয়ে পরীক্ষা কমিটি গঠন করেন। অথচ মাস্টার্স প্রোগ্রামের অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী, মাস্টার্স পরীক্ষা কমিটির কোনো সদস্য সহকারী অধ্যাপকের নিচে হতে পারবেন না। বিভাগে বর্তমানে একজন সহযোগী অধ্যাপক ও তিনজন সহকারী অধ্যাপক রয়েছেন। পরে ৭ জন কোর্স-টিচারের মধ্যে ৪ জন শিক্ষকের প্রশ্নপত্র ছাড়াই প্রশ্নবিদ্ধ ওই পরীক্ষা কমিটির মাধ্যমে পরীক্ষা নেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দপ্তর বিষয়টি নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে বলে জানা গেছে।

এসব বিষয়ে কথা বলার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আব্দুল বাকীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি

স্কুলে ভর্তির আবেদন করবেন যেভাবে - dainik shiksha স্কুলে ভর্তির আবেদন করবেন যেভাবে এইচএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের ফল বৃহস্পতিবার, জানবেন যেভাবে - dainik shiksha এইচএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের ফল বৃহস্পতিবার, জানবেন যেভাবে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দপ্তরসহ সাবেক শিক্ষাপ্রতিমন্ত্রীকে চালাতেন পিয়ন! - dainik shiksha দপ্তরসহ সাবেক শিক্ষাপ্রতিমন্ত্রীকে চালাতেন পিয়ন! ৬১০ ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীর শিক্ষা অধিদপ্তরে নিয়োগ চূড়ান্ত! - dainik shiksha ৬১০ ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীর শিক্ষা অধিদপ্তরে নিয়োগ চূড়ান্ত! গণভবন, ভিকারুননিসার বোন ও আইডিয়ালের কলোনি কোটা বাতিল - dainik shiksha গণভবন, ভিকারুননিসার বোন ও আইডিয়ালের কলোনি কোটা বাতিল দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে ১৩ পরীক্ষার্থীর জন্য ১৪ শিক্ষক, দাখিলে পাস শূন্য - dainik shiksha ১৩ পরীক্ষার্থীর জন্য ১৪ শিক্ষক, দাখিলে পাস শূন্য ভাসানী, শেরেবাংলা-সোহরাওয়ার্দীকেও জাতির পিতা করার পরামর্শ - dainik shiksha ভাসানী, শেরেবাংলা-সোহরাওয়ার্দীকেও জাতির পিতা করার পরামর্শ সমন্বয়কদের ভয় দেখিয়ে লাভ নেই, সাবধান: সারজিস - dainik shiksha সমন্বয়কদের ভয় দেখিয়ে লাভ নেই, সাবধান: সারজিস please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0034561157226562