শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের আন্দোলনের মুখে অবশেষে পদত্যাগ করলেন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. দিদার-উল-আলম। মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) সকালে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলর বরাবর তিনি এই পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।
গত ৭ আগস্ট থেকে উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, ট্রেজারার ও বিভিন্ন প্রশাসনিক কর্মকর্তার পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলনে নামেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। ইতোমধ্যে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল বাকী ছাড়া সবাই পদত্যাগ করেছেন। তিনি দেশের বাইরে থাকায় তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. দিদার-উল-আলম নিজেই বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, আমি কোনো দুর্নীতি করিনি বা কোনো অনিয়মও করিনি। পারিবারিক ও ব্যক্তিগত কারণে দায়িত্ব পালনে অপারগ হওয়ায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছি। আমার সকলের কাজের আল্লাহ সাক্ষী আছেন। আমি কখনো কারো ক্ষতি করিনি। তারা ভালো করুক, বিশ্ববিদ্যালয় ভালো করুক এই কামনা করছি।
জানা গেছে, ২০২৩ সালের ১৩ আগস্ট দ্বিতীয় মেয়াদে উপাচার্যের দায়িত্ব পান অধ্যাপক ড. মো. দিদার-উল-আলম। এর আগে অধ্যাপক ড. মো. দিদার-উল-আলম ২০১৯ সালের ১২ জুন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান এবং ওই বছরের ১৬ জুন আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়টির পঞ্চম উপাচার্য হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। অধ্যাপক ড. মো. দিদার-উল-আলম ১৯৬৯ সালে নারায়ণগঞ্জের জয়গোবিন্দ হাই স্কুল থেকে এসএসসি ও নারায়ণগঞ্জ তোলারাম কলেজ থেকে এইচএসসি সম্পন্ন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ভর্তি হন। সেখান থেকে মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশবিজ্ঞান বিষয়ে বিএসসি ও এমএসসি সম্পন্ন করে স্কটল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অব অ্যাবারডিন থেকে ১৯৯০ সালে প্লান্ট অ্যান্ড সয়েল সায়েন্স বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। এর মধ্যেই ১৯৮৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন সিলেকশন গ্রেডের এ অধ্যাপক। এছাড়া তিনি নদী গবেষণা ইনস্টিটিউটের গবেষক হিসেবেও কাজ করেছেন।
এদিকে উপাচার্যের পদত্যাগের খবরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা স্বস্তি প্রকাশ করে অবিলম্বে উপ উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারের পদত্যাগ দাবি করেন।
নোবিপ্রবির সমন্বয়ক বনি ইয়ামিন বলেন, আমরা উপাচার্যের পদত্যাগে খুশি হয়েছি। তবে উপ উপাচার্যের পদত্যাগ না করায় মর্মাহত হয়েছি। আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।