রাতভর প্রবল বর্ষণ ও উজানের ঢলে নোয়াখালীতে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। এ জেলায় বন্যায় এ পর্যন্ত ১০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। জেলার প্রায় ২০ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে খাদ্য সংকটে মানবেতর জীবনযাপন করছে। সংকট মোকাবেলায় ত্রাণকর্তা হয়ে এগিয়ে এসেছে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (২৮ আগস্ট) সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটরিয়াম ভবনকে খুলে দেওয়া হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্র হিসাবে। যেখানে আশ্রয় নিয়েছেন নোয়াখালীর বিভিন্ন এলাকার বন্যার্তরা। আশ্রয় কেন্দ্রে সার্বক্ষণিক সেবা দিয়ে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন শিক্ষার্থী সংগঠন, বিএনসিসি, রোভার স্কাউট, মেডিকেল টিম, সহযোগিতায় আছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।
জানা গেছে, শুধু আশ্রয় কেন্দ্র হিসাবেই নয়, প্রত্যন্ত অঞ্চলেও টিম গঠনের মাধ্যমে সেবা প্রদান করে যাচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা গঠন করেছে রেসকিউ টিম ও ত্রাণ বিতরণ টিম। রেসকিউ টিম নৌকা ব্যবহার করে দূরদূরান্তের বানভাসিদের পৌঁছে দিচ্ছে নিকটস্থ নিরাপদ স্থানে। ত্রাণ বিতরণ টিম খাদ্য পৌঁছে দিচ্ছে নোয়াখালী, ফেনী, কুমিল্লা, লক্ষীপুরের বন্যার্তদের নেওয়া আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে। ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন সেবা। শুধু তাই নয় যেসকল পরিবার অতিরিক্ত পানি ও নৌযানের অভাবে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে পারে নাই, নৌকা এমনকি বুকপানি অতিক্রম করেও সেই সকল পরিবারের কাছে সহায়তা সামগ্রী পৌঁছানো দিচ্ছেন তারা।
এবিষয়ে শিক্ষা প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে গঠিত মিউজিক্যাল ক্লাব ‘ধ্রপদ’ এর ডেপুটি হেড অফ পার্ফমেন্স মো. মেহেদী হাসান সৈকত বলেন, ‘শুরুতে ফেনির বন্যার পরিস্থিতি অবনতির দিকে যাওয়ায় এই অঞ্চলেও তার প্রভাব পড়বে এবং পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হতে পারে এই আশঙ্কা থেকে নোবিপ্রবির সকল ক্লাব ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা বন্যার্তদের পাশে থাকার সিদ্ধান্ত নেয়। তারা ফান্ড রাইজিংয়ের কাজ শুরু করে। তাদের এ কাজে শিক্ষক-সাধারণ শিক্ষার্থীরা যে যার অবস্থান থেকে এগিয়ে আসে।
তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের সহযোগিতায় এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে অভূতপূর্ব সাড়া পাই। বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে আমাদের কার্যক্রম পরিচালনা করি। দ্রুত রেসকিউ করে নিকটবর্তী আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসি। সেই সাথে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমও অব্যাহত থাকে। আমাদের এই কার্যক্রম এখনো পরিচালিত হচ্ছে।’