ফের মৃদু শৈত্যপ্রবাহের কবলে উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া। তীব্র শীতে বিপাকে পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষ। শনিবার (১৩ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৯ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা রয়েছে সূর্য। ভোর থেকে বৃষ্টির মতো ঝরছে কুয়াশা। তীব্র শীতে বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের পেশাজীবীরা। কমে গেছে তাদের দৈনন্দিন রোজগার। পরিবার-পরিজন নিয়ে কষ্টে দিনযাপন করছেন তারা। প্রয়োজন ছাড়া অনেকে ঘর থেকে বের না হলেও জীবিকার তাগিদে শীত উপেক্ষা করেই কাজে বেরিয়েছেন অনেকে। বিপাকে পড়েছেন চাষিরাও। তারাও ঠান্ডার প্রকোপের কারণে ক্ষেতে কাজ করতে পারছেন না। শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষদের মিলছে না প্রয়োজনীয় গরম কাপড়। রাস্তায় চলা ভবঘুরে মানুষরাও পড়েছে দুর্ভোগে।
শনিবার সকালে পাথর শ্রমিক ফিরোজা খাতুন বলেন, কুয়াশা থাকলেও করার কিছু নাই ভাই। আমরা গরীব মানুষ। ঠান্ডায় তো পেটে ভাত দিবে না। গত দুইদিন ধরে কাজ করতে পারিনি। আজ বাধ্য হয়েই কাজে বেরিয়েছি। কাজ করলে পেটে ভাত জুটবো।
ভ্যান চালক আলী হাসান বলেন, একদিকে ঠান্ডা, তার মধ্যে ঘন কুয়াশা। কুয়াশার কারণে সহজে ভ্যানে চড়তে চায় না কেউ। তাই ভাড়া মারতে পারছি না। কয়েক দিন ধরেই ভাড়া নেই। গতকাল সারাদিনে মাত্র ৫০ টাকা ভাড়া মারছিলাম। এটা দিয়ে কি সংসার চলবে। কুয়াশার মধ্যেই সকালে ভ্যান নিয়ে বের হলাম। আল্লাহর রহমত থাকলে কামাই হবে।
এদিকে শীতের কারণে নিউমোনিয়া, অ্যাজমা, হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়াসহ শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বয়স্ক মানুষ। জেলা ও উপজেলার হাসপাতালগুলোর আউটডোরে ঠান্ডাজনিত রোগীরা চিকিৎসা নিচ্ছেন। চিকিৎসার পাশাপাশি ঠান্ডাজনিত রোগ থেকে বেঁচে থাকতে বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করছেন চিকিৎসকরা।
জেলার প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ বলেন, আজ ভোর থেকে ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন পঞ্চগড়। প্রায় এক সপ্তাহ ধরে ঘন কুয়াশার কারণে দেখা মিলছে না সূর্যের। গতকাল বিকেলে সূর্যের দেখা মিললেও সে রোদে ছিল না উষ্ণতা। বিকেল থেকেই আবার হিমেল বাতাস বইছে। উত্তর-পূর্ব বা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে যে বায়ু প্রবাহিত হয়, তাতে শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পায়। সেই কারণে এ অঞ্চলে এখন শীতের তীব্রতা বেশি হচ্ছে।
এদিকে, পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম জানান, শীত মোকাবেলায় জেলা উপজেলা প্রশাসন উপহার হিসেবে শীতবস্ত্র বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে প্রাপ্ত ২৬ হাজার কম্বল বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত আছে। আরও শীতবস্ত্র চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। আশা করছি শিগগিরই পাওয়া যাবে।