ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটের লোকজন বিরোধীদল কংগ্রেসের সাথে যোগাযোগ রাখছেন বলে মন্তব্য করেছেন দলটির নেতা রাহুল গান্ধী।
মঙ্গলবার ব্রিটেনের প্রভাবশালী দৈনিক দ্য ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কংগ্রেসের এই নেতা বলেছেন, এমনকি একটি ছোটখাটো ঝামেলাও অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে জাতীয় গণতান্ত্রিক জোটকে (এনডিএ)। যে জোট আঞ্চলিক দলগুলোর ওপর নির্ভর করে সরকার গঠন করেছে।
নরেন্দ্র মোদি নেতৃত্বাধীন সরকার শিবিরে ‘‘ব্যাপক অসন্তোষ’’ রয়েছে দাবি করে রাহুল গান্ধী বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে সরকার টিকিয়ে রাখার জন্য ‘‘লড়াই’’ করতে হবে। সাক্ষাৎকারে রাহুল গান্ধী বলেছেন, এনডিএ শিবিরে থাকা অনেক লোকজনই কংগ্রেসের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। ফলে সামান্য এদিক-ওদিক হলেই মোদি সরকারের পতন ঘটতে পারে।
গত ৪ জুন ভারতের ৫৪৩ আসনের লোকসভার নির্বাচনের চূড়ান্ত ফল ঘোষণা করা হয়। এতে নরেন্দ্র মোদির রাজনৈতিক দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। দেশটিতে সরকার গঠনের জন্য ২৭২ আসনের সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রয়োজন হলেও বিজেপি এককভাবে ২৪০ আসন পায়।
পরে সরকার গঠনের জন্য এনডিএ জোটের শরিকদের ৫৩ আসনের ওপর নির্ভর করতে হয় বিজেপিকে। বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট ২৯৩ আসনে জয় পেয়েছে। নির্বাচনে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন জোট ইনডিয়া ২৩৩ আসন পায়। এর মধ্যে কংগ্রেস এককভাবে পেয়েছে ৯৯ আসন।
রাহুল গান্ধী বলেছেন, গত লোকসভা নির্বাচনের ফল দেশের রাজনৈতিক গতিপ্রবাহের খাতই বদলে দিয়েছে। ভারতীয় রাজনৈতিক ব্যবস্থায় সবার জন্য সুযোগ সামনে চলে এসেছে। উল্লেখযোগ্য পট পরিবর্তন হয়েছে। যে সংখ্যার ওপর সরকার দাঁড়িয়ে রয়েছে, তা অত্যন্ত ভঙ্গুর। ফলে সামান্য এদিক-ওদিক হলেই সরকারের পতন ঘটবে।
সাক্ষাৎকারে কংগ্রেসের এই নেতা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে নিয়ে বিজেপি এবং সরকারের অন্দরে তুমুল অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। তাদের মধ্যে অনেকেই কংগ্রেসের সঙ্গে যোগাযোগও রাখছেন বলে দাবি করেছেন রাহুল গান্ধী। তিনি বলেন, ‘‘একজন ঘুরে গেলেই সরকার পড়ে যাবে।’’
রাহুল বলেন, ‘‘এবারের ভোটে বিজেপির বিভাজনের নীতির বিরুদ্ধে মানুষ রায় দিয়েছে। মানুষের মাঝে ঘৃণা ছড়িয়ে ক্রোধের জন্ম দিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করা যায়; বিজেপির এমন ধারণা নস্যাৎ করে দিয়েছে দেশের মানুষ। যে দল দশ বছর অযোধ্যা নিয়ে কথা বলে কাটিয়ে দিল, সেই অযোধ্যা থেকেই তারা মুছে গেছে।’’