নীলফামারীর জলঢাকায় একটি মাদরাসায় উপাধ্যক্ষ ও কর্মচারী নিয়োগের পরীক্ষার আগেই প্রার্থী নির্বাচন করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। একদিকে অতি গোপনে নিয়োগ প্রক্রিয়া করায় আবেদন করতে পারেননি এলাকার শিক্ষিত বেকাররা। অপরদিকে মাদরাসা অধ্যক্ষসহ কমিটির সদস্যরা রাতারাতি প্রায় অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার পায়তারা করছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন এলাকাবাসীর। এ ঘটনায় নিয়োগ প্রত্যাশীসহ এলাকাবাসী জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ দিয়েছেন। ঘটনাটি জলঢাকা পৌর এলাকার রাজারহাট কাবাদি রহমানিয়া আলিম মাদরাসায়।
প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে, ওই প্রতিষ্ঠানে শূন্য পদের বিপরীতে উপাধ্যক্ষ, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর,অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী, নিরাপত্তা কর্মী ও আয়াসহ মোট ৫ জন নিয়োগ দেয়া হবে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, নিয়োগ বিষয়ে কঠোর গোপনীয়তা অবলম্বন করেন প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ আব্দুল মান্নান। তিনি নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিষয়ে কাউকে না জানিয়েছে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে চাকরি নিতে আগ্রহী প্রার্থী খুঁজতে থাকেন এবং পেয়েও যান।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই মাদরাসার একাধিক শিক্ষক দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, আব্দুল মজিদ নামে একজন উপধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ পাচ্ছেন। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষের মোটরসাইকেল চালক গোলাম আজম অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী, তার দেহরক্ষী আবু সাঈদ নিরাপত্তা কর্মী, অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার অপারেটর নাজমা বেগম ও আয়া হিসেবে সোহানা আক্তার নিয়োগ পেতে যাচ্ছেন। এছাড়া মোটা অংকের টাকার বিনিময়েই একই পরিবারের নাজমা বেগম, আবু সাঈদ ও সোহানা আক্তারসহ ৩ জনকে নিয়োগ দেয়ার পায়তারা করছেন অধ্যক্ষ। আর নিয়োগ প্রক্রিয়া কিভাবে হচ্ছে তা আমরাও জানিনা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন এলাকাবাসী জানান, মাদরাসা অধ্যক্ষ আব্দুল মান্নান ও সভাপতি দবির হুদা অতি গোপনে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে গোপনে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পায়তারা করে আসছিলেন। তাদের এমন পরিকল্পনা ফাঁস হয়ে গেলে এলাকাবাসী,জমিদাতার ওয়ারিশ ও আবেদন করতে না পারা নিয়োগ প্রত্যাশীরা গত ৬ এপ্রিল মাদরাসার সামনে মানববন্ধন করেন এবং গোপনে নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল ও পূর্ন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে স্থানীয়দের আবেদন করার সুযোগ দেয়ার দাবি জানিয়ে সোমবার জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যক্ষ আব্দুল মান্নান মুঠোফোনে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আপনারা সবই জানেন। অভিযোগের বিষয়ে সাক্ষাতে কথা হবে বলে তিনি ফোন কেটে দেন।
মাদরাসার সভাপতি দবির হুদা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ‘যে নামগুলো উল্লেখ করলেন তারাই তো নিয়োগ পাবেন। এতে সমস্যা কোথায়? আর নিয়োগের দিন প্রতিষ্ঠানে আসেন সেখানেই কথা হবে।’
এ নিয়োগে মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের প্রতিনিধি ও মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) মোহাম্মদ আবু নঈম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমার একক সিদ্ধান্তে নিয়োগ হয় না,পরিক্ষায় অংশগ্রহণকারী মেধাবিরাই নিয়োগ পাবেন। তবে অভিযোগের বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।