নিপা পালিতের (২৪) স্বপ্ন ছিলো লেখাপড়া শেষ করে চাকরি নিয়ে দরিদ্র পরিবারের হাল ধরার। বুক ভরা আশা নিয়ে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষার গণ্ডি পার করে ডিগ্রি (পাস) কোর্সে ভর্তি হয়ে ঠিকভাবে পড়াশুনা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, পরীক্ষায় অংশ নিতে ঘর থেকে বের হয়ে পানিতে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়। এতে করে নিপা ও তার পরিবারের স্বপ্ন নিমিষেই চুরমার হয়ে গেছে। বিলাপ করছেন গর্ভধারিণী মা পান্না পালিত।
সোমবার সকালে চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার ইসলামী হাট সংলগ্ন বাদামতল এলাকার পশ্চিমে চসিক ১ নম্বর দক্ষিণ পাহাড়তলী ওয়ার্ডের উত্তর ফতেয়াবাদ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। বৃষ্টির পানিতে পড়ে নিহত নিপা পালিত ওই এলাকার উত্তম পালিতের মেয়ে। সে তিন বোনের মধ্যে সবার বড়। নিপা হাটহাজারী সরকারি কলেজের ডিগ্রি (পাস) বিবিএস দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।
নিপার ঠাকুর দাদা (পিতামহ) বাদল পালিত দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, নিপা দীর্ঘদিন ধরে মৃগী রোগে ভুগছিলো। সোমবার ডিগ্রি ২য় বর্ষের ব্যবস্থাপনা চতুর্থ পত্র বিষয়ে পরীক্ষা ছিলো। সকালে পরীক্ষা দিতে যাওয়ার সময় বসতঘরের অদূরে হঠাৎ মাথা ঘুরে বৃষ্টির পানিতে ডুবে থাকা নালায় পড়ে গেলে আর ওপরে উঠতে পারেনি। এরপর স্থানীয় লোকজন তাকে দেখতে পেয়ে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক মেডিক্যাল অফিসার ডা. মাহাফুজুর রহমান খান তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
নিপা পালিতের ফুফাত ভাই জয় ঘোষ জানান, হতদরিদ্র পরিবারে জন্ম নেয়া নিপা বহু কষ্টে পড়াশুনা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। তার স্বপ্ন ছিলো পড়াশোনা শেষ করে হতদরিদ্র পরিবারের হাল ধরা। কিন্তু তার স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে গেলো।
এদিকে, ট্রিপল নাইনে ফোন পেয়ে হাটহাজারী মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিপার মরদেহটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন। এরপর মরদেহের সুরুত হাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়না তদন্তের জন্য মরদেহটি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ।
জানতে চাইলে হাটহাজারী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মনিরুজ্জামান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, পরীক্ষা দিতে যাওয়ার সময় বসতঘরের অদূরে বৃষ্টির পানিতে ডুবে তাঁর (নিপা) মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় আমরা একটি অপমৃত্যু মামলা নিয়েছি এবং ময়নাতদন্তের মরদেহটি চমেক হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।