বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) 'স্টার সানডের' ছুটি ১০ এপ্রিল করে একাডেমিক ক্যালেন্ডার করেছে কর্তৃপক্ষ৷ অথচ কোন রকম যাচাই বাছাই ছাড়াই কাল রোববার (৯ এপ্রিল) স্টার সানডে ধরে বিভিন্ন বিভাগের বর্ষ-সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা স্থগিত রেখেছে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর৷ এমন সিদ্ধান্তে ভোগান্তি ও সেশনজটের কবলে পড়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা৷
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৮-১৯ ভর্তি শিক্ষাবর্ষের রসায়ন বিভাগ, ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের লোকপ্রশাসন বিভাগ ও অর্থনীতি বিভাগ, ২০২০-২১ শিক্ষার্বর্ষের গণিত বিভাগ,২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের মার্কেটিং বিভাগ, ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের মাষ্টার্সের ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগের একটি পরীক্ষা রূটিন অনুযায়ী আজ হওয়ার কথা ছিলো ।
কিন্তু সম্প্রতি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের পক্ষে স্বাক্ষরিত এক নোটিসে আজকের সব পরীক্ষা স্থগিত করায় ক্ষুদ্ধ সাধারণ শিক্ষার্থীরা৷ এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে আলোচনা- সমালোচনার ঝড়৷ রোকন নামের এক শিক্ষার্থী মন্তব্য করেন, কতটা উদাসীন হলে এমন ভাবে রুটিন করে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর।পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিসের কাজ কি তাই হয়তো সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানেন না!
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ৯ তারিখের স্থগিত পরীক্ষা রসায়ন ও গণিত বিভাগের এপ্রিল মাসের ১০তারিখে, লোকপ্রশাসন বিভাগের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষ ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্সের ১৭ই এপ্রিল, মার্কেটিং বিভাগের স্নাতক প্রথমবর্ষ ও ফিন্যান্স বিভাগের মাস্টার্সের ৭মে ও অর্থনীতি বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের পরীক্ষা আগামী ১১ মে অনুষ্ঠিত হবে৷
এদিকে অধিকাংশ বিভাগের ঈদের আগেই সম্পূর্ণ পরীক্ষা শেষ হওয়া কথা থাকলেও আজকের পরীক্ষা স্থগিত হওয়ায় সেটা সম্ভব হয়নি৷ বিষয়টি নিয়ে গভীর উদ্বেগ ও সেজনজটের কবলে পড়ার কথা বলেছেন শিক্ষার্থীরা৷
বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের মাষ্টার্সে অধ্যায়নরত শিক্ষার্থী কামাল(ছদ্মনাম) বলেন, পরীক্ষা শুরুর আগে থেকেই আমরা রুটিন অনুযায়ী পড়াগুলোর সাথে একটা টাইম সেট করা থাকি। যাতে মানসিক ভাবে এগিয়ে থাকা যায়। এখন পরীক্ষা পেছানোয় সব পরীক্ষাগুলোর মধ্য একটা ইমব্যাল্যান্সড সিচুয়েশন তৈরী হলো। আবার এখন একটা পরীক্ষা পিছিয়ে যাওয়ায় আমাদের ঈদের পরে যে মাস্টার্সের ২য় সেমিস্টারের ক্লাস শুরু হয়ে এক সপ্তাহ ক্লাস হতো সেটাও পিছিয়ে গেলো। কারন ঈদের একসপ্তাহ পরই আবার পুরো মে মাস ভার্সিটি বন্ধ। তীব্র সেশনজটের আশঙ্কায় আছি। ভার্সিটি প্রশাসন কতটা অজ্ঞ হলে ইস্টার সানডের বন্ধ ইস্টার মানডে বানিয়ে রোববারের ছুটি সোমবার দিয়ে রাখে একাডেমিক ক্যালেন্ডারে!
লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী আজমির হাসান রিসাদ বলেন, কতটা উদাসীন হলে এমন ভাবে একটা রুটিন তৈরি করতে পারে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর। ইস্টার সানডের বন্ধ তা দেখে রুটিন করেনি। এখন পরীক্ষার আগ মুহূর্তে নোটিস দিচ্ছে যে পরীক্ষা স্থগিত। উদাসীনতার একটা মাত্রা থাকে।
বিষয়গুলো নিয়ে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর স.ম. ইমানুল হাকিম বলেন,'আমি ছুটিতে আছি। এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না৷'
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের স্বাক্ষর সম্বলিত পরীক্ষা স্থগিত প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, 'আমার পক্ষ থেকে উপ পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক স্বাক্ষর করেছে৷'
উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক সাযজাদ উল্লাহ ফয়সালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের সাথে কথা বলেছেন? হ্যা বল্লে প্রতিউত্তরে তিনি বলেন, স্যার যেটা বলেছে ওটাই ৷ পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরের কাছ থেকে এমন ভুল কেন হলো এমন প্রশ্নে তিনি বলেন একাডেমিক ক্যালেন্ডারের দেখে রুটিন করা হয়েছে, ক্যালেন্ডারে ছুটি ছিলো না তাই এমনটা হয়েছে৷