পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেছেন, পশুর হাটে ও পরিবহণ সেক্টরে কোনো ধরনের চাঁদাবাজকে ছাড় দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি করেছেন। কোরবানির পশুবাহী গাড়ি কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া গন্তব্যস্থল ব্যতীত অন্য কোথাও থামানো যাবে না। পুলিশের সব ইউনিটকে ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর গাবতলী পশুর হাট, গাবতলী ও সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল, সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল এবং কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় অতিরিক্ত আইজি (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন্স) আতিকুল ইসলাম, নৌ পুলিশের অতিরিক্ত আইজি মোহা. আবদুল আলীম মাহমুদ, ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার খ. মহিদ উদ্দিন, বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক সরদার শাহাদাত আলীসহ ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আইজিপি বলেন, জনগণের ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক করা, যানবাহন চলাচলে শৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং সড়ক দুর্ঘটনা রোধে মহাসড়কে ফিটনেসবিহীন ও মেয়াদোত্তীর্ণ গাড়ি এবং নসিমন, করিমন, ভটভটি, থ্রি হুইলার ইত্যাদি যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। ঈদকে নিরাপদ ও নির্বিঘ্নে উদ্যাপনের জন্য মহানগর ও জেলা, হাইওয়ে, রেলওয়ে, নৌ পুলিশসহ বিশেষায়িত ইউনিটকে একসঙ্গে একযোগে কাজ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ মহাপরিদর্শক বলেন, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ট্রাক বা পণ্যবাহী পরিবহনে এবং ট্রেনের ছাদে ভ্রমণ করবেন না। কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে নিকটস্থ পুলিশকে অথবা জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল করুন। পুলিশ আপনাদের পাশে রয়েছে। প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পুলিশ, পরিবহণ, হাট মালিক কর্তৃপক্ষ ইজারাদার ও স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছি। সবাই মিলে কাজ করছি। আশা করছি, এই ঈদে সবকিছু নির্বিঘ্ন হবে।
তিনি বলেন, অপরাধীরা সুযোগ পায়, এটা করবেন না। পশুর হাটকেন্দ্রিক বড় অঙ্কের আর্থিক লেনদেন করলে ব্যাংকে যান। এতে পুলিশের সহযোগিতা নিন। পুলিশ সেবা দিতে প্রস্তুত রয়েছে। আপনি ঝুঁকি নিতে যাবেন কেন? জাল টাকার লেনদেন যাতে না হয়, সেজন্য প্রত্যেকটি মার্কেটে জাল টাকা শনাক্তকরণ মেশিন স্থাপন করেছি।
কোরবানির ঈদের চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, রোজার ঈদে একমুখী চাপ থাকে। কিন্তু কোরবানির ঈদে সড়কে দ্বিমুখী চাপ মোকাবিলা করতে হয়। পুরো বিষয় বিবেচনায় রেখে ট্র্যাফিক ব্যবস্থাপনা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও সঠিক রাখার জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
ঈদের নিরাপত্তা পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আইজিপি বলেন, সব সময় পুলিশ জঙ্গি ও সন্ত্রাসীদের থেকে এক ধাপ এগিয়ে থাকে।
কিছুদিন আগেও নেত্রকোনাতে জঙ্গিবিরোধী অভিযান চালানো হয়। সাইবার ক্রাইম, জঙ্গি সেল ও সব ছোট ছোট ইউনিট সচেতন আছে। জঙ্গি হামলা বা হুমকির কোনো সংবাদ কাছে নেই। দেশবাসী নিরাপদ ও নির্বিঘ্নে ঈদ উদ্যাপন করবে, পুলিশ দেশবাসীর পাশে আছে। এছাড়া পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা অক্ষুণ্ন থাকবে। ট্যুরিস্ট পুলিশ ও জেলা পুলিশ পর্যটকদের সহযোগিতা করবে।
এদিকে ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে প্রতিটি স্টেশনে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক আরাফাত ইসলাম। তিনি বলেন, মোবাইল ট্র্যাকিং চালু রাখা হয়েছে। বাস টার্মিনাল, লঞ্চ টার্মিনাল, রেলস্টেশনে র্যাব সদস্যরা কাজ করছেন। টিকিট কালোবাজারি চক্রের বিরুদ্ধে গোয়েন্দা নজরদারি রয়েছে। এ বছরের পর টিকেট কালোবাজারি আর থাকবে না।