প্যারিসের অভিজাত কাম্পানিল হোটেলের বলরুমে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ফরোয়ার্ড এর উদ্যোগে ‘গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশ: প্রবাসীদের ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্টিত হয়েছে ৷
সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফ্যাসিবাদী বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা, জুলাই গণ-অভ্যুত্থান এর অন্যতম নায়ক লেখক ও এক্টিভিস্ট পিনাকী ভট্টাচার্য।
সভাপতিত্ব করেন মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ফরোয়ার্ড (এইচআরএফ)-এর সভাপতি মোহাম্মদ ফয়সাল আহমেদ।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন ফরাসি গণমাধ্যম ফ্রান্স টুয়েন্টিফোরের সাংবাদিক মোহাম্মদ আরিফ উল্লাহ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক অনুক্ত কামরুল এবং সঞ্চালকের ভূমিকায় ছিলেন বাংলা টেলিগ্রাম সম্পাদক সাংবাদিক শাহ সুহেল আহমদ।
অনুষ্টানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ থেকে আগত রাজনীতিবিদ নুরুল ইসলাম ভুঁইয়া (ছোটন), ফ্রান্স বিএনপির প্রধান উপদেষ্টা এহসানুল হক বুলু, ফ্রান্স বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এম এ তাহের, ফ্রান্স বিএনপির সাবেক সভাপতি সিরাজুল ইসলাম মিয়া, কমিউনিটি নেতা টি এম রেজা, ফ্রান্স বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জুনেদ আহমেদ।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধের উপর প্যানেল আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন সিনিয়র সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী মোহাম্মদ মাহবুব হোসাইন, বাংলাদেশ কমিউনিটি ইন ফ্রান্স (বিসিএফ)-এর প্রেসিডেন্ট এম ডি নূর, এক্টিভিস্ট ও রাজনীতিবিদ মোহাম্মদ আলী চৌধুরী, আইনজীবী ও অনলাইন এক্টিভিস্ট মনোয়ার হোসাইন, বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ফরাসি আইনজীবী আকাশ হেলাল।
এছাড়া সেমিনারে অতিথি আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক শামীমা আক্তার রুবি, বিকশিত নারী সংঘের সভানেত্রী তৌফিকা শাহেদ, সাবেক সেনা কর্মকর্তা মীর জাহান, মানবাধিকার সংগঠন এফডিএইচআর ফ্রান্স- এর সভাপতি মোহাম্মদ আল আমিন, সিনিয়র সাংবাদিক কামরুজ্জামান কাজল।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে পিনাকী ভট্টাচার্য বলেন, “কথায় আছে হাজার টাকার বাগান খায় পাচঁ সিকার ছাগলে। এই পাচঁ সিকার ছাগল চিনতে না পারলে বারবার বাংলাদেশের মানুষকে রক্ত দিতে হবে। এই পাঁচ সিকার ছাগল হচ্ছে আওয়ামী লীগ এবং ভারত। এই দুই শক্তিকে মোকাবেলা করতে না পারলে বাংলাদেশে শান্তি আসবে না।”
তিনি আরও বলেন, “বারবার প্রবাসী বাংলাদেশিদের পক্ষে থেকে দাবি জানানো নয়। কিন্তু হওয়ার কথা ছিল তারা বলবে এবং সেটি সরকার মেনে নিবে। আমাদেরকে এমন পরিস্থিতি তৈরী করতে হবে। আমি একটি উদ্যোগ নিয়েছি পুরো বিশ্ব থেকে প্রবাসীরা পাঁচ বিলিয়ন ডলার রাষ্ট্রকে দিবে। এটি হলে সরাসরি প্রবাসীরা রাষ্ট্র নির্মাণের কাজে চলে আসবেন।”
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ থেকে প্রবাসীদের পক্ষ থেকে চার দফা দাবি জানানো হয়। সেগুলো হলো, বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস ও মিশনগুলোর তত্ত্বাবধানে জাতীয় নির্বাচনে প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা, দ্বিতীয়ত ফ্রান্সসহ সবগুলো দূতাবাসে দ্রুত ই-পাসপোর্ট এবং জাতীয় পরিচয় পত্র তৈরীর ব্যবস্থা করা, তৃতীয়ত দাবি হচ্ছে জাতীয় সংসদে প্রবাসীদের জন্য সংরক্ষিত আসনের ব্যবস্থা করা, চতুর্থত অনিয়মিত অভিবাসীদের লাশ সরকারি খরচে দেশে প্রেরণের ব্যবস্থা করা।
এছাড়া বক্তারা বলেন, এই প্রথমবারের মতো অভিবাসী বাংলাদেশিরা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষা ভাবে স্টেক হোল্ডারের ভূমিকায় এসেছেন। চার দফা দাবি আদায়ে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে জোরদার ভূমিকা পালন করতে হবে। ৫ই আগস্টের বিপ্লবকে সার্থক করার জন্য প্রবাসে সকল বাংলাদেশিকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান।