অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পাঠ্যপুস্তকে শহীদ আবু সাঈদ এবং মীর মুগ্ধর নাম অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিলেও দ্বিতীয় শহীদ চট্টগ্রাম কলেজের ছাত্রদলের সদস্য ওয়াসিম আকরামের নাম বাদ দেয়াকে চরম বৈষম্যমূলক পদক্ষেপ বলে মন্তব্য করেছেন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির।
তিনি বলেন, শহীদ ওয়াসিম আকরাম ছাত্রদলের নেতা এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের একনিষ্ঠ কর্মী হওয়ার কারণেই তার নাম পাঠ্যপুস্তক থেকে বাদ দেয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) সকালে ফরিদপুরের সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ এবং সরকারি ইয়াসিন কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্র রাজনীতির রূপরেখা নিয়ে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের কাছে এসব কথা বলেন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির।
তিনি আরও বলেন, আবু সাইদ-ওয়াসিম-মুগ্ধ এই তিনজন বীর শহীদ জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের আইকনে পরিণত হয়েছিল। তাদের আত্মত্যাগ আরও দুই হাজারেরও অধিক বীর শহীদদের অনুপ্রাণিত করেছে। তরুণ প্রজন্মকে সাহসের প্রেরণা দিয়েছে। কিন্তু ছাত্রদলের নেতা হওয়ার কারণে দ্বিতীয় শহীদ হওয়া সত্ত্বেও শহীদ ওয়াসিম আকরামের নামটি সরকার অবহেলা করছে। তারা পাঠ্যপুস্তক থেকে বাদ দিচ্ছে, সরকারি কোনো সভা-সমাবেশেও শহীদ ওয়াসিম আকরামের নাম স্মরণ করা হয় না। ছাত্রদল পরিচয়ে শহীদ হওয়ার কারণে কোনো শহীদের প্রতি বৈষম্য করা গণঅভ্যুত্থানের মূল চেতনার পরিপন্থি।
এর আগে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ফরিদপুরের কলেজ দুটির সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছে ভবিষ্যতে ছাত্র রাজনীতির রূপরেখা কেমন হওয়া উচিত তা জানতে চান। শিক্ষার্থীরা অতীতে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসনির্ভর রাজনীতির ভীতিকর দিক তুলে ধরেন।
ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করেন, ছাত্রদল জোর করে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করানো, সিট বাণিজ্য, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসের রাজনীতি করবে না। ছাত্রদল একুশ শতকের উপযোগী মেধাভিত্তিক কল্যাণমুখী গণতান্ত্রিক রাজনীতির চর্চা নিশ্চিত করবে। সে লক্ষ্যে সারা দেশে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছে ছাত্রদল নেতারা ছুটে যাচ্ছেন বলে জানান নাছির উদ্দীন।
তিনি এ সময়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে তারেক রহমান ঘোষিত রাষ্ট্র সংস্কারের ৩১ দফা রূপরেখা সম্বলিত লিফলেট বিতরণ করেন। রাষ্ট্র সংস্কার বিষয়ে বিএনপি এবং তারেক রহমানের চিন্তাভাবনা সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছে ব্যাখ্যা করেন।
নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, ছাত্রদলের বুদ্ধিভিত্তিক রাজনীতি চর্চার কারণে ছাত্র রাজনীতির প্রতি সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভীতি কাটতে শুরু করেছে। কোনো ক্যাম্পাসে কাউকে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের মতো কলুষিত রাজনীতির চর্চা করতে দেয়া হবে না। ছাত্রলীগ এবং ছাত্রলীগের কলঙ্কিত রাজনীতিকে সারা দেশের শিক্ষার্থীরা প্রত্যাখ্যান করেছে।