টেন্ডারের সব শর্ত মেনে পাঠ্যবই ছাপার ঠিকাদারি নিলেও কাগজের বার্স্টিং ফ্যাক্টর কমানোর ধান্দা করছেন মুদ্রাকররা। প্রথম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় চল্লিশ কোটি বই ছাপা হবে পহেলা জানুয়ারি থেকে শুরু হতে যাওয়া নতুন শিক্ষাবর্ষের জন্য। এসব বই শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনামূল্যে বিতরণ হবে।
বিনামূল্যের এসব বই লেখা, সম্পাদনা, ছাপা ও বিতরণের দায়িত্বে থাকা জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের নির্ধারিত বার্স্টিং ফাক্টর ১৬। ইতোমধ্যে প্রাথমিক পর্যায়ের বেশ কিছু বই ছাপাও হয়েছে। কিন্তু বেশি মুনাফার লোভে পাঠ্যপুস্তক বোর্ডকে চাপ দিয়ে বার্স্টিং ফ্যাক্টর ১৬ থেকে নামিয়ে দশ করতে চান মুদ্রাকররা।
পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের কর্মকর্তারা জানান, কাগজের তিনটা প্যারামিটার অতি গুরুত্বপূর্ণ । প্রথমত, কাগজটা কত পুরু বা মোটা। তারপর ব্রাইটনেস মানে ঔজ্বল্য। তৃতীয় বিষয়টা হলো bursting factor বা কাগজের শক্তি। যেটা কম হলে কাগজ দুর্বল হবে। বইয়ের পাতা তাড়াতাড়ি ছিড়ে যাবে। বইয়ের গুণগত মান খারাপ হবে। গত দুই শিক্ষা বর্ষে পাঠ্য বইয়ের কাগজের মান খুব খারাপ হয়েছিল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক মুদ্রাকার দৈনিক আমাদের বার্তাকে জানান, গত সাত বছর ধরে একচেটিয়া মুনাফা করা নোয়াখালী অঞ্চলের একজন মুদ্রাকর বার্স্টিং ফ্যাক্টর কমানোর ধান্দার নেতৃত্বে রয়েছেন। আওয়ামী লীগ আমলে যিনি দীপু মনি এবং পানি জাহাঙ্গীর খ্যাত ও ৪০০ কোটি টাকার মালিক আওয়ামী লীগ আমলের সেই পিয়নের আত্মীয় পরিচয় দিয়ে পাঠ্যপুস্তক ছেপে একচেটিয়া মুনাফা করেছেন।
জানা যায়, বইয়ে ব্যবহৃত কাগজের বার্স্টিং ফ্যাক্টর কমাতে পারলে শত কোটি টাকা অতিরিক্ত মুনাফা হবে। কমানোর এই তদবিরে তারা ব্যবহার করছেন বিএনপির একজন ভাইস চেয়ারম্যানকে। যার নিজ জেলা নোয়াখালী। পাঠ্যপুস্তক বোর্ডে কর্মরত শিক্ষা ক্যাডারের কয়েকজন কর্মকর্তাও গোপনে এই বিএনপি নেতার সুনজরে থাকার কৌশল গ্রহণ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
তবে আশার বাণী শুনিয়েছেন পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডক্টর একেএম রিয়াজুল হাসান। এক প্রশ্নের জবাবে গতকাল বুধবার তিনি দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, টেন্ডারে উল্লেখিত শর্ত মেনে তারা বই ছাপানোর ঠিকাদারি পেয়েছেন। কার্যাদেশ দেওয়ার পর বই ছাপাও শুরু করেছেন। এমন অবস্থায় বার্স্টিং ফ্যাক্টর কমানোর দাবি পুরোপুরি অযৌক্তিক। এই দাবি মানা কোনভাবেই সম্ভব নয়। এই দাবি মানা মানে গত দুই বছরের মতো বইয়ের গুণগত মানের সঙ্গে আপোষ করা। যেটা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়।
শিক্ষাসহ সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।