বিশ্বকাপে মরক্কোর জাতীয় দলের আশরাফ হাকিমি। বয়স ২৪ বছর। প্রচণ্ড গতি, অফুরন্ত দম ও ক্ষিপ্র গোল করার দক্ষতা এই বয়সেই তাঁকে ফুটবল দুনিয়ার অন্যতম শ্রেষ্ঠ রাইট-ব্যাকের আসনে প্রতিষ্ঠিত করেছে। নিরহংকার, বিনয়ী ও ধর্মপরায়ন এই ফুটবলার উঠে এসেছেন অতি দরিদ্র পরিবার থেকে। জন্ম স্পেনে হলেও বাবা-মা মরক্কোর। মাদ্রিদ শহরের উপকণ্ঠে এক শিল্পাঞ্চলে তিনি বেড়ে উঠেছেন। মা বাড়ী বাড়ী ঝাড়ু দেয়ার কাজ করতেন। বাবা ছিলেন ফুটপাতের পণ্য বিক্রেতা।
বাল্যকালেই তাঁর ফুটবল প্রতিভা নজরে পড়ে রিয়াল মাদ্রিদের এবং মাত্র আট বছর বয়সে তাঁকে ক্লাবের যুব ফুটবল একাডেমিতে ভর্তি করা হয়। বয়স যখন ১৭ বছর শুরু হয় তাঁর পেশাদার জীবন। অনেক সাফল্যে উজ্জ্বল তাঁর জীবন। তাঁর বাৎসরিক আয় ৮ কোটি ৩০ লাখ ডলার। ( ১ $ = ট ১০৬)। কিন্তু তিনি তাঁর অতীতকে ভোলেননি। আল জাজিরাকে তিনি বলেন,”বাবা মা আমার জন্য তাদের জীবনকে উৎসর্গ করেছেন। অনেক কষ্ট করে তাঁরা আমাকে বড় করেছেন। আমার সাফল্যের জন্য আমার ভাইবোনকে বহু কিছু থেকে বঞ্চিত করেছেন। আজ আমি খেলি তাদের জন্য।”
স্মরণীয় হয়ে থাকবে গত ৬ ডিসেম্বর কোয়ার্টার ফাইনালে স্পেনের বিরুদ্ধে পেনাল্টি শুটআউটে তাঁর পা থেকে বেরিয়ে আসা অবাক করা “পানেকা” কিক। এটি ছিলো শেষ পেনাল্টি কিক। যার সাফল্য-ব্যর্থতার ওপর নির্ভর করছিলো মরক্কোর ভাগ্য। সফল কিকটি মরক্কোকে প্রথমবার সেমি ফাইনালে খেলার সুযোগ এনে দিয়েছে। মরক্কোই শুধু নয় অসীম আনন্দে ভাসছে আফ্রিকা ও আরব বিশ্ব।
![](https://dainikshiksha.com/public/uploads/2022/12/%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A7%87%E0%A6%95%E0%A6%BE%20%E0%A6%95%E0%A6%BF%E0%A6%95%20%E0%A6%8F%E0%A6%AC%E0%A6%82%20%20%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A7%9F%E0%A7%87%E0%A6%B0%20%E0%A6%86%E0%A6%A6%E0%A6%B0.jpg)
আগামী সেমিফাইনালে হাকিমি মুখোমুখি হবেন এমবাপ্পের ফ্রান্স টিমের বিরুদ্ধে। ক্লাব পর্যায়ে হাকিমি ও এমবাপ্পে দুজনই প্যারিসের পি এস জি দলে খেলেন। আর্জেন্টিনার মেসিও খেলেন একই টিম পি এস জি-তে।
ব্যক্তিগত জীবনে হাকিমি বিবাহিত ও দু পুত্র সন্তানের পিতা। তাঁর স্ত্রী অভিনেত্রী Hiba Abdouk লিবিয়-তিউনিসিয় বংশোদ্ভূত। হাকিমি একজন ধর্মপরায়ন মুসলিম।
[খুবই ঝুঁকিপূর্ণ পানেকা কিক। ৫৪ বছর আগে এর উদ্ভাবক ছিলেন চেক ফুটবলার পানেকা। কিকারের লক্ষ্য হলো গোল কিপারকে বিভ্রান্ত করে গোল দেয়া। বলের সামনে কিক করার ভঙ্গি করা।গোল কিপার একপাশে ঝাঁপিয়ে পড়লে বিপরীত পাশে ধীরে বল ঠেলে গোল দেয়া।]