দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক: দেশের যেসব প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষার্থী সংখ্যা ৫০ এর কম এমন ৩০০টি স্কুলকে পাশের স্কুলের সঙ্গে একীভূত করা হবে। এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে আগে এসব স্কুলের গত ১০ বছরের শিক্ষার্থীর ধারাবাহিকতা দেখা হবে। একত্রিত করার জন্য প্রস্তাবিত স্কুলের নাম, শিক্ষার্থী সংখ্যা, জমির পরিমাণ, যে স্কুলের সঙ্গে একত্রিত করা হবে তার নাম, বর্তমান বিদ্যালয় থেকে একত্রিত করার জন্য প্রস্তাবিত স্কুলের দূরত্ব ও প্রস্তাবিত স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা উল্লেখের বিষয়গুলো আমলে নেওয়া হবে।
বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) সচিবালয়ে এ তথ্য জানান প্রাথমিক ও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ।
তিনি জানান, দেশের ৫৬ জেলায় প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ৫০ জন শিক্ষার্থীও নেই এমন ৯৪৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব স্কুলের মধ্যে প্রায় ৩০০ স্কুলের গত ১০ বছরের শিক্ষার্থীর ধারাবাহিতা যাচাই-বাছাই করে দেখা গেছে যে, প্রতি বছর সেখানে ৫০ এর কম শিক্ষার্থী ছিল। এ রকম বেহাল স্কুলগুলোকে পাশের স্কুলের সঙ্গে একত্রিত বা একীভূত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বরিশাল শহরের একটি স্কুলের উদাহরণ দিয়ে সচিব বলেন, সেই স্কুলে গত দশ বছরে ৫-৭ জন শিক্ষার্থী ছিল। এসব স্কুল একীভূত করা হবে। অন্যদিকে, দেশের ৫০০ এর বেশি স্কুলে ১৫০০ বেশি শিক্ষার্থী রয়েছে। সেখানে ভর্তির জন্য আরও ৫০০-৭০০ শিক্ষার্থী অপেক্ষায় রয়েছে। এসব স্কুলের অবকাঠামো উন্নয়নসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে।
বিষয়টির ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, পার্বত্য অঞ্চলের অনেক স্কুল আছে যেখানে গড়ে ৩-৪০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। যেটা যুগের পর যুগ এভাবে চলছে। এসব স্কুলের ক্ষেত্রে একীভূত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে না।
এর আগে, গত বছর ৭ ডিসেম্বর অধিদপ্তরের পলিসি ও অপারেশন শাখার পরিচালক মনিষ চাকমা স্বাক্ষরিত একটি চিঠি দেশের সব বিভাগীয় ও জেলা শিক্ষা অফিসে পাঠানো হয়। চিঠিতে বলা হয়, অধিদপ্তরের মাসিক সমন্বয় সভায় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ৫০ এর কম শিক্ষার্থী এমন স্কুলের বিষয়ে বিভাগীয় উপ-পরিচালকদের কাছে প্রস্তাবনা চাওয়া হয়েছে। সেই চাহিদা পাওয়ার পর তা যাচাই-বাছাই করে এই ৩০০ স্কুলের ৫০ এর কম শিক্ষার্থীর তথ্য পায় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
জানা গেছে, ২০২২ খ্রিষ্টাব্দে তৎকালীন সচিব আমিনুল ইসলাম খান এসব স্কুলের তালিকা করার নির্দেশ দেন। এরপর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সেসব স্কুলের তালিকা শুরু করে। সর্বশেষ তথ্য মতে, দেশের ৫৬টি জেলায় ৯৯৪ স্কুলে ৫০ জন শিক্ষার্থী নেই। সেই তালিকা ধরে এখন এসব প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৩০০ স্কুলকে পাশের স্কুলের সঙ্গে একীভূত করা হবে।
অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ৫৬টি জেলার ৯৪৪ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চলছে ৫০ জনের কম শিক্ষার্থী নেই। সেই তালিকায় জাতীয়করণ করা স্কুলও রয়েছে। এ ধরনের জাতীয়করণ করা স্কুল বন্ধ করে দেওয়ার বিষয়েও ভাবছে ডিপিই।
২০১৩ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ধাপে ধাপে ২৬ হাজারের বেশি এমপিওভুক্ত রেজিস্ট্রার্ড, আন রেজিস্ট্রার্ড ও কমিউনিটি বিদ্যালয় সরকারি করণ করা হয়। এদের মধ্যে প্রায় ২১ হাজার শিক্ষক ছিলেন যোগ্যতাবিহীন। বার বার সময় দেওয়ার পরও তারা যোগ্যতা অর্জন করতে পারেননি। আবার অনেক স্কুলে ছিল নামমাত্র শিক্ষার্থী। গোঁজামিল তথ্য দিয়ে স্কুলগুলো চালাচ্ছেন কিছু শিক্ষক। তারা বেতনভাতাও পাচ্ছেন।