দৈনিক শিক্ষাডটকম, চিতলমারী: বাগেরহাটের মধুমতি নদীর পাশের একটি পুকুরে অবস্থান করছে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার বসানো সুন্দরবনের সেই কুমিরটি।
শুক্রবার (১২ এপ্রিল) কুমিরটিকে স্থানীয়রা বাগেরহাটের চিতলমারি উপজেলার কলাতলা ইউনিয়নের বাংলাবাজার এলাকার এক পুকুরে দেখতে পান।
এদিকে কুমিরের আতঙ্কে স্থানীয়রা ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সতর্কীকরণ পোস্ট দিয়েছেন। তবে বনবিভাগ ও কুমিরের গতিবিধি নিয়ে গবেষণার কাজে দায়িত্বপ্রাপ্তরা এ নিয়ে আতঙ্কিত না হতে পরামর্শ দিয়েছেন।
জানা যায়, গবেষণা কাজে কুমিরের গতিবিধি ও আচরণ জানতে গত ১৬ মার্চ স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার বসিয়ে লোনা পানির চারটি কুমিরকে সুন্দরবনে অবমুক্ত করা হয়েছিলো।
এদের মধ্যে একটি কুমির প্রায় শত কিলোমিটার পথ ঘুরে বরিশালের নদীতে অবস্থান করছিলো। সবশেষ এটি চিতলমারিতে অবস্থান করছে।
ওই এলাকার ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল চালক মো. জিয়াউল হাসান বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে তিনি যাত্রী নিয়ে শৈলদাহর দিকে যাওয়ার সময় শৈলদাহ ভাঙ্গা রাস্তার মোড় এলাকা থেকে কুমিরটিকে রাস্তা অতিক্রম করতে দেখেন। কুমিরটি দেখে তিনি প্রথমে আতঙ্কিত হলেও পরে পিটে ট্রান্সমিটার বসানো দেখেছেন।
এদিকে বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয়রা কুমিরটি দেখার জন্য রাস্তায় ভিড় জমায়। এক পর্যায়ে কুমিরটি নদীতে ফিরে না গিয়ে রাস্তার পাশের একটি পুকুরে অবস্থান নেয়।
শুক্রবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ওই কুমিরটিকে দেখতে শত-শত উৎসুক জনতা পুকুরটিকে ঘিরে রেখেছে।
কুমিরটির নিরাপত্তার জন্য ও পরিস্থিতি স্বাভারিবক রাখতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে চিতলমারী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ইকরাম হোসেন জানান, কুমিরটির নিরাপত্তার জন্য ওই স্থানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক মো. আজাদ কবির বলেন, গত প্রায় এক মাস আগে সুন্দরবনের লবণাক্ত পানির ৪টি কুমিরের শরীরে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার বসিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৩টি কুমির সুন্দরবন এলাকায় অবস্থান করলেও একটি কুমির অন্যত্র চলে গেছে।
আমাদের কাছে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী কিছুদিন ধরে সেটি পিরোজপুরের নদ-নদীতে ঘুরছে। সবশেষ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী (শুক্রবার ১২ মার্চ, বিকেল ৪টা নাগাদ) সেটি পিরোজপুর-বাগেরহাট ও গোপালগঞ্জ সীমান্তবর্তী চিতলমারি উপজেলার কলাতলা এলাকার একটি পুকুরে অবস্থান করছে। নিজের জন্য কোনো নিরাপদ স্থান পেতে তার এমন পথ চলা বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, গত ১৩ মার্চ প্রথমে দুটি ও এর ৩ দিন পরে আরো দুটি কুমির অবমুক্ত করা হয়। সেই দুটির একটি কুমির এটি। অবমুক্ত করা ৪টি কুমিরের মধ্যে দুটি পুরুষ ও দুটি নারী কুমির রয়েছে।
এর আগে সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্র থেকে ২০০টি কুমির অবমুক্ত করা হয়েছিলো। কিন্তু তাদের গতিবিধি এমনভাবে নজর দেয়া হয়নি। তবে এর আগে একইভাবে শরীরে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার বসিয়ে কচ্ছপ ছেড়ে দেয়া হয়েছিলো।