‘যেকোনো সময় আমার ওপর হামলা হতে পারে। আমাদের প্রাণে মেরে ফেলতে পারে। আমি ও আমার পরিবার ভয়ে-আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি।’—২১ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় থানায় গিয়ে লিখিত আবেদনে এভাবেই জীবনশঙ্কার কথা জানিয়েছিলেন নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার বাসিন্দা মো. মোসলেম। কিন্তু পুলিশের কাছে নিরাপত্তা চেয়েও রক্ষা হলো না। গত শুক্রবার প্রতিপক্ষের হামলায় নিহত হয়েছেন তিনি।
নিহত মোসলেম আড়াইহাজার উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়নের নয়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা। জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে শুক্রবার দুপুরে তাঁর ওপর হামলা চালায় প্রতিপক্ষ বাতেনের লোকজন। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় মোসলেমসহ আরও বেশ কয়েকজনকে ঢাকা
মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হলে রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মোসলেম।
মোসলেমের পরিবারের অভিযোগ, হত্যার শিকার হতে পারেন এমন শঙ্কায় অভিযোগের কাগজ হাতে থানার পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছিলেন মোসলেম। কিন্তু পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
নিহতের স্ত্রী সাহেরা বলেন, ‘২১ ফেব্রুয়ারি থেকে আমরা একটি লিখিত অভিযোগ নিয়ে থানায় ঘুরেছি। কিন্তু পুলিশ আমাদের কোনো সহায়তা করেনি। মারামারির সময়েও আমি ও আমার মেয়ে বারবার পুলিশকে ফোন দিয়েছি। তারা সময়মতো আসলে আজকে আমার স্বামী মারা যেত না।’
এই বিষয়ে আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুল হক হাওলাদার বলেন, ‘মোসলেম নিহতের ঘটনায় হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে। তারা আগে কোনো অভিযোগ দিয়েছিল কি না তা আমার জানা নেই।’
জানতে চাইলে জেলা পুলিশের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (গ সার্কেল) আবির হোসেন বলেন, ‘জমিসংক্রান্ত বিরোধ বিষয়ে পুলিশ সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে পারে না।
কেবল সতর্ক করতে পারে যেন তারা আইন নিজের হাতে না তুলে নেয়। এই ঘটনায় দুই পক্ষের লোকজনই আহত হয়েছে। এমন হয়নি যে মোসলেমকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে। পারিবারিক বিরোধ থেকেই দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়েছে। ঘটনাস্থল আমরা পরিদর্শন করেছি। সন্দেহভাজন তিনজনকে আটক করা হয়েছে। যারা যারা জড়িত আছে, তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।’