চট্টগ্রামের জেএম সেন হল পূজামণ্ডপে ‘ইসলামিক গান’ গাওয়া নিয়ে সমালোচনার পর ওই গানের দলকে আমন্ত্রণ জানানো পূজা উদযাপন কমিটির নেতাকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
ঘটনার পর পরই জেএম সেন হল পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম। ঘটনার সাথে জড়িতদের শাস্তির আশ্বাস দেন তিনি।
চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম বলেন, এ ঘটনার সাথে যারা জড়িত, তারা যতই ক্ষমতাবান হোক না কেন ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার হবে। রাতের মধ্যেই তাদের নামে মামলা হবে বলেও জানিয়েছিলেন তিনি।
চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি লায়ন আশীষ কুমার ভট্টাচার্য বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) রাতে ঘটনাস্থল নগরীর জেএমসেন হলের পূজা মণ্ডপের মঞ্চে এই ঘোষণা দেন। পাশাপাশি জড়িত ওই নেতার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হলে তাদের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া থাকবে না বলেও জানান।
চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি লায়ন আশীষ কুমার ভট্টাচার্য তার বক্তব্যে বলেন, আমাদের ১৬টি থানায় পূজা হচ্ছে। আমরা সবখানে পরিদর্শন করছি। ফলে জেএমসেন হলে খুব বেশি সময় থাকা হয় না। আমরা জেনেছি আমাদের পূজা উদযাপন পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক সজল দত্ত চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমি নামের একটি সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীকে গান গাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে।
আমরা সেটা জানার পর ওই যুগ্ম সম্পাদককে সরাসরি জিজ্ঞাসাবাদ করি কে অধিকার দিয়েছে এই সংগঠনকে গান করতে সুযোগ করে দেওয়ার। এখানে আমাদের নির্দিষ্ট শিল্পী ছাড়া মঞ্চে কেউ গান করবেন না। কিন্তু তিনি কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য দিতে পারেনি। তিনি বলেছেন তারা দেশাত্মবোধক গান করবে বলে জানিয়েছিল। এটা নিয়ে তার ওপর আমার সেক্রেটারি ও অন্যান্য কর্মকর্তারা খুবই ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গানটা ভাইরাল হওয়ার পর সনাতন সম্প্রদায়ের যে সংগঠনগুলো রয়েছে তারাও আমাদের জানিয়েছে। দ্রুতই বিষয়টি প্রশাসনের নজরে এসেছে। মাননীয় জেলা প্রশাসক, পুলিশ কমিশনার এসেছেন। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয়েছে। আমাদের প্রধান উপদেষ্টার তিনজন প্রেস সচিবও এসেছেন। আমরা ওই যুগ্ম সম্পাদকের বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে স্থায়ীভাবে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সে যদি অপরাধ করে থাকে আইন তার নিজের গতিতে যেন ব্যবস্থা নেয়। এই বিষয়ে আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে তার হয়ে কোনো রোল প্লে করা হবে না সেটি আমরা স্পষ্টভাবে বলে দিচ্ছি।
জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রশাসন আইনগত ব্যবস্থা নেবেন জানিয়ে আশীষ কুমার সনাতনধর্মী মানুষেদর শান্ত থাকার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, যারা গানটা করেছেন তাদের বোঝা উচিত ছিল উনারা যে দাওয়াতি গানটা গেয়েছেন সেটি আমাদের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের হৃদয়ে আঘাত করেছে। জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন এই ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে। আইন আইনের গতিতে চলবে। যে দায়ী হোক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আপনারা মনপ্রাণ খুলে পূজা উদযাপন করুন।
আশীষ কুমার ভট্টাচার্য এই ঘোষণা দেওয়ার সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি অপূর্ব জাহাঙ্গীর, অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রেস সেক্রেটারি নাঈম আলী, সুচিস্মিতা তিথি।