বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজের (শজিমেক) হোস্টেলে থাকা শিক্ষার্থীরা একের পর এক পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। গত ১৫ জুলাই থেকে মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) পর্যন্ত ২৬ শিক্ষার্থী পেটের পীড়ায় মেডিক্যাল কলেজটির হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন। এছাড়া শতাধিক শিক্ষার্থী প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, হোস্টেলগুলোর পানির ট্যাংক অন্তত তিন বছর পরিষ্কার করা হয়নি। এতে ট্যাংকে ব্যাকটেরিয়া বাসা বেঁধেছে। দূষিত ওই পানি পান করায় তারা ডায়রিয়াসহ পেটের পীড়ায় ভুগছেন।
কলেজ কর্তৃপক্ষও পানি সমস্যার বিষয়টি স্বীকার করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে।
শজিমেকের দুই হোস্টেলের একটিকে ৩০০ ছাত্র ও অপরটিতে ৫০০ ছাত্রী থাকেন। দুই হোস্টেলের পানি সরবরাহ করা হয় আলাদা সাবমার্সিবল পাম্পের মাধ্যমে। এছাড়া হোস্টেল এলাকায় তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির ১২ কর্মচারীর জন্য কোয়ার্টার রয়েছে। শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি তারাও পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়েছেন।
কলেজের ৩২ ব্যাচের শিক্ষার্থী জোবায়ের হাসান বলেন, হোস্টেলের দূষিত পানি খেয়ে ডায়রিয়া হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল। আমার মতো অনেক শিক্ষার্থীই নানা রোগে ভুগছেন।
কলেজ হোস্টেলের শিক্ষার্থী পাকিস্তানের মুলতানের তাওসিফ জাফার জানান, এক সপ্তাহ ধরে পেটের সমস্যায় ভুগছেন। ট্যাংকের পানিতে সমস্যা হওয়ায় বাধ্য হয়ে বাইরে থেকে কিনে খাচ্ছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কর্মচারী কোয়ার্টারে থাকা একজন বলেন, কোয়ার্টারে থাকা ১২ পরিবারের প্রায় সবাই পেটের সমস্যায় ভুগছেন।
কলেজ ও হাসপাতাল সূত্র জানায়, প্রায় ৪০ দিনে হাসপাতালটিতে ভর্তি শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১২ জন মেয়ে ও ১৪ জন ছেলে। তাদের মধ্যে গতকাল মঙ্গলবার চিকিৎসা শেষে তিনজন হোস্টেলে ফিরেছেন। অন্যরা পর্যায়ক্রমে চিকিৎসা নিয়েছেন।
কলেজের পানির পাম্পগুলোর দায়িত্বে থাকা কর্মচারী নুরুল ইসলাম বলেন, শজিমেকের জন্য তিনটি সাবমার্সিবল রয়েছে। পানি নিয়ে অভিযোগ শুনে কলেজ কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তবে পাম্পের কী সমস্যা তা এখনও নিশ্চিত হতে পারিনি।
শজিমেকের অধ্যক্ষ ডা. রেজাউল আলম জুয়েল বলেন, হোস্টেলে পানির সমস্যার কথা শুনে প্রতিটি ফ্লোরে পানির ফিল্টারের ব্যবস্থা করেছি। ট্যাংক পরিষ্কারসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পানিতে ব্যাকটেরিয়া থেকে পেটের সমস্যা হতে পারে।