পৌনে তিন হাজার নতুন শিক্ষকের ভাগ্য আটকা - দৈনিকশিক্ষা

এমপিওভুক্তির আবেদনে ক্রটি, যাচাইয়ে বিড়ম্বনাপৌনে তিন হাজার নতুন শিক্ষকের ভাগ্য আটকা

রুম্মান তূর্য |

যোগদানের পর দুই মাস পার হতে চললো। এখনো এমপিওভুক্ত হতে পারেননি বেসরকারি কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নতুন শিক্ষকরা। পৌনে তিন হাজার শিক্ষক এবার বিভিন্ন কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ সুপারিশ পেয়েছিলেন। কিন্তু যোগদানের পর থেকে গতকাল বুধবার পর্যন্ত একজনও এমপিওভুক্ত হননি।

 চরম আর্থিক সংকট ও অনিশ্চয়তায় পড়া এসব শিক্ষকের মনে এখন চরম হতাশা। বেসরকারি স্কুল-কলেজের মতো কারিগরি শিক্ষকদেরও যোগদান থেকে এমপিওর টাকা বকেয়া বাবদ পাওয়ার সুযোগ না থাকায় সে হতাশা আরো কয়েকগুণ বেড়েছে। 

কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্র বলছে, সব সনদ যাচাইসহ এমপিও আবেদনের বিধান, হার্ডকপিতে আবেদন অগ্রায়ণ ও যাচাই-বাছাই, এমপিও আবেদনে ভুল করাসহ নানা কারণে নতুন শিক্ষকদের এখনো এমপিওভুক্ত করা যায়নি। তবে এ সংক্রান্ত কাজ শুরু হয়েছে। 

গত সেপ্টেম্বর মাসের শেষ দিকে ২৭ হাজার নতুন শিক্ষককে চূড়ান্ত সুপারিশ করে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। তাদের মধ্যে ২ হাজার ৭২০ জন বিভিন্ন কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ সুপারিশ পান। সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষকদের মধ্যে কারিগরি প্রতিষ্ঠানে ৫১৬ জন, সংযুক্ত স্কুলে ১ হাজার ৫৮৩ জন ও সংযুক্ত মাদরাসায় ৬২১ জন ছিলেন। নতুন শিক্ষকদের বেশিভাগই অক্টোবর মাসে যোগদান করেছেন। কিন্তু তারা এমপিওভুক্ত হতে পারেননি।

গত অক্টোবর মাস থেকে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের এমপিও কমিটি তিনটি সভা করেছে। ওই তিন সভা শেষে অধিদপ্তরের জারি করা এমপিও অনুমোদনের তিনটি আদেশ পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, একজন শিক্ষকও এমপিওভুক্ত হতে পারেননি।  

নতুন নিয়োগ পাওয়া কারিগরি শিক্ষকরা বলছেন, অক্টোবরে যোগদানের পর থেকে এমপিওভুক্ত হতে না পেরে ভয়ংকর আর্থিক সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। এমপিওর ফাইল আঞ্চলিক কার্যালয়ে পাঠানো হলেও তা অধিদপ্তরে পাঠানো হয় না। আবেদন করলেও আঞ্চলিক পরিচালকরা তা অগ্রায়ণ করেন না। আবার স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের যোগদান থেকে এমপিওর টাকা বকেয়া বাবদ পেলেও কারিগরি শিক্ষকরা তা পান না। ফলে কারো কাছ থেকে ধারদেনা করেও যে চলবো তাও সম্ভব হচ্ছে না। অনেকেই নিজ উপজেলা থেকে দূরে নিয়োগ সুপারিশ পেয়েছেন। তাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে।

কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর শিক্ষকদের এমপিওভুক্ত হতে দেরি হওয়ার পেছনে কয়েকটি কারণ জানিয়েছে। সূত্রের দাবি, আঞ্চলিক কার্যালয়ে হার্ডকপি ফাইল যাচাই-বাছাইয়ে বেশি সময় লাগায় দেরি হচ্ছে। শিক্ষকরাও আবেদনে ভুল করছেন। স্কুল-কলেজ ও মাদরাসা শিক্ষকদের এমপিওভুক্ত হতে সনদ যাচাইয়ের প্রয়োজন না হলেও কারিগরি শিক্ষকদের ক্ষেত্রে তা প্রয়োজন হয়। কিন্তু বেশিরভাগ শিক্ষক সনদ যাচাই ছাড়াই আবেদন পাঠান। শিক্ষক নিবন্ধন সনদ যাচাইও সংযুক্ত করেন না। তাই তারা এমপিওভুক্ত হতে পারছেন না। 

শিক্ষক নিবন্ধনের সনদ যাচাই করে এনটিআরসিএ। এনটিআরসিএর একটি সূত্র বলছে, গত অক্টোবর থেকে প্রায় দুই হাজার সনদ যাচাইয়ের আবেদন এসেছে। যেগুলো পর্যায়ক্রমে নিষ্পত্তি করা হচ্ছে। ভাইভাসহ নানা কারণে সনদ যাচাইয়ে কিছু দেরি হয়। আবার ফাইল ওপর থেকে নিয়ে আসতে ও যাচাই শেষে প্রতিবেদন প্রকাশ পর্যন্ত কয়েকটি দাপ্তরিক ধাপ থাকায় কিছুটা সময় লাগে। 

নতুন শিক্ষকদের এমপিওভুক্তি নিয়ে জানতে চাইলে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের এমপিও শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম দাবি করেন, নতুন শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। আমি কিছুদিন আগে এ পদে পদায়ন পেয়েছি, তাই বিষয়টি পরিষ্কার বলতে পারছি না। 

সাইফুল ইসলামের আগে অধিদপ্তরের এমপিও শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী পরিচালকের পদে ছিলেন বিমল কুমার মিশ্র। তিনি বর্তমানে একটি সরকারি কারিগরি প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ পদে পদায়ন পেয়ে যোগদান করেছেন। জানতে চাইলে তিনি দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, কারিগরি অধিদপ্তরের এমপিওভুক্তির প্রক্রিয়া অনলাইনে নেয়ার একটি পরিকল্পনা থাকলেও নানা জটিলতায় তা বাস্তবায়ন করা যায়নি। হার্ডকপিতে আবেদন যাচাই-বাছাইয়ে অনেক সময় প্রয়োজন হয়। আর বেশিরভাগ আবেদন সঠিক প্রক্রিয়ায় করা হয় না। এক্ষেত্রে অবশ্য আবেদন অধিদপ্তর পর্যন্ত এলে নথিজাত করা হয়। আমরা যেসব আবেদন পেয়েছিলাম সেগুলো নিষ্পত্তি করা হয়েছে। নতুন শিক্ষকদের আবেদন না পেলে অনুমোদন কমিটি তা কিভাবে নিষ্পত্তি কর

শিক্ষাসহ সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল  SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।

এমপিওভুক্তির নতুন আদেশ জারি - dainik shiksha এমপিওভুক্তির নতুন আদেশ জারি জবিতে ভর্তির প্রাথমিক আবেদন শুরু ১ ডিসেম্বর - dainik shiksha জবিতে ভর্তির প্রাথমিক আবেদন শুরু ১ ডিসেম্বর শিক্ষা প্রশাসনে বড় বদলি - dainik shiksha শিক্ষা প্রশাসনে বড় বদলি কুবির বঙ্গবন্ধু হল ও শেখ হাসিনা হলের নাম পরিবর্তন - dainik shiksha কুবির বঙ্গবন্ধু হল ও শেখ হাসিনা হলের নাম পরিবর্তন ডিআইএ পরিচালক কাজী কাইয়ুম শিশিরকে বদলি - dainik shiksha ডিআইএ পরিচালক কাজী কাইয়ুম শিশিরকে বদলি সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আন্দোলনে শহীদদের স্মরণসভা - dainik shiksha সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আন্দোলনে শহীদদের স্মরণসভা সরকারি কলেজ প্রদর্শকদের পদোন্নতির খসড়া প্রকাশ - dainik shiksha সরকারি কলেজ প্রদর্শকদের পদোন্নতির খসড়া প্রকাশ এমপিওভুক্ত হচ্ছেন আরো ১১ হাজার শিক্ষক - dainik shiksha এমপিওভুক্ত হচ্ছেন আরো ১১ হাজার শিক্ষক পঞ্চমে ফিরছে বৃত্তি পরীক্ষা, বার্ষিকে ৪ স্তরে মূল্যায়ন - dainik shiksha পঞ্চমে ফিরছে বৃত্তি পরীক্ষা, বার্ষিকে ৪ স্তরে মূল্যায়ন কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0073690414428711