ম্যানেজিং কমিটির বাধায় এসএসসি পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন করতে পারছে না এক ছাত্রী। মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর উপজেলার চান্দহর ইউনিয়নের শান্তিপুর আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ের ঘটনা এটি। অষ্টম শ্রেণিতে মেধাতালিকায় প্রথম ওই মেয়েটি। মেয়েটির বাবা এক মাস আগে মারা গেছেন।
ছাত্রীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, অষ্টম শ্রেণির ছাত্রীতে পড়ুয়া মেয়েটিকে স্কুলে যেতে নিষেধ করেছেন ম্যানেজিং কমিটির কয়েকজন সদস্য। যে কারণে গত ১২ সেপ্টেম্বরে পর থেকে মেয়েটির স্কুলে যাওয়া বন্ধ রয়েছে। তবে বাড়িতে পড়াশোনা অব্যাহত রেখেছে। দু-এক দিনের মধ্যেই তার এসএসসি পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশনের সময় শেষ হবে। ম্যানেজিং কমিটির বাধার কারণে রেজিস্ট্রেশন করতে পারছে না। এখন রেজিস্ট্রেশন না করলে এসএসসি পরীক্ষায়ও সময়মতো অংশ নিতে পারবে না মেয়েটি।
ছাত্রীর মামা বলেন, ক্লাসে প্রথম হওয়া মেয়েটি ম্যানেজিং কমিটির বাধার কারণে স্কুলে যেতে পারছে না। ম্যানেজিং কমিটির সদস্য আব্দুল কুদ্দুস ও মতি মাস্টার গত ১২ সেপ্টেম্বর মেয়েটিকে স্কুলে যেতে নিষেধ করেন। দু-এক দিনের মধ্যেই তার এসএসসি পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন করার সময় শেষ হবে। ম্যানেজিং কমিটির কারণে মেয়েটির ভবিষ্যৎ অন্ধকারে যাচ্ছে। নিভে যাওয়ার পথে শিক্ষার আলো। কেন রেজিস্ট্রেশন করার অনুমতি দিচ্ছে না—এমন প্রশ্নের জবাবে মামা বলেন, মেয়েটির সঙ্গে একটি ছেলের সম্পর্ক আছে এবং ওই ছেলের সঙ্গে মেয়েটি বাড়ি থেকে অন্যত্র গিয়েছি—এমন অভিযোগ তুলে তারা (ম্যানেজিং কমিটির লোকজন) মেয়েটিকে স্কুলে যেতে দিচ্ছে না। রেজিস্ট্রেশন করারও সুযোগ দিচ্ছে না। তিনি মেয়েটির স্বাভাবিক পড়াশোনা করার সুযোগ তৈরির দাবি জানান।
ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মতি মাস্টার বলেন, ‘আমি মেয়েটিকে স্কুলে যেতে নিষেধ করিনি। তবে ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।’
শান্তিপুর আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এনামুল হক বলেন, ‘মেয়েটি দীর্ঘদিন স্কুলের আসেনি। তার পারিবারিক সমস্যার প্রভাব অন্য শিক্ষার্থীদের মধ্যে পড়তে পারে। তাই ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের ছাড়া আমি কিছুই করতে পারব না। তবে বিষয়টি নিয়ে দ্রুত ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের সঙ্গে বসব।’
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান শওকত হোসেন বাদল বলেন, ‘মেয়েটির পারিবারিক সমস্যাটির প্রভাব অন্য শিক্ষার্থীদের মধ্যে পড়তে পারে। তাই ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা তাকে বিদ্যালয়ে আসতে নিষেধ করতে পারে। তবে আমি প্রধান শিক্ষককে বলেছি তার রেজিস্ট্রেশন যেন হয়।’
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এ বি এম হান্নান বলেন, ‘মেয়েটির পারিবারিক সমস্যার কারণে ম্যানেজিং কমিটি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে আমি প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলেছি বিষয়টি সমাধান করার জন্য।’
সিঙ্গাইর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দিপন দেবনাথ বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’