দৈনিক শিক্ষাডটকম, বরিশাল : বরিশালের উজিরপুরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের অবহেলার কারণে পরীক্ষা হওয়া প্রশ্ন দিয়ে ৩ দিন পরে গণিত পরীক্ষা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হওয়ায় অভিভাবকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
পঞ্চম শ্রেণির গণিত পরীক্ষা গত ২৬ নভেম্বর হওয়ার কথা থাকলেও সাতলা ইউনিয়নের ১নং মধ্য সাতলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঘটেছে উল্টো। সেদিনের পঞ্চম শ্রেণীি গনিত তৃতীয় প্রান্তিক পরীক্ষার প্রশ্ন দিয়ে ২৯ নভেম্বর চারুকলা পরীক্ষার সময় গণিত পরীক্ষা নিয়েছেন প্রধান শিক্ষক আলমগীর বিশ্বাস। অন্যান্য বিদ্যালয়ে পরীক্ষা হওয়া প্রশ্ন দিয়ে ৩ দিন পরে গণিত পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে কোনো সঠিক উত্তর দিতে পারেননি অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক।
জানা যায়, পঞ্চম শ্রেণির তৃতীয় প্রান্তিক পরীক্ষার প্রশ্ন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে একসঙ্গে সব স্কুলে দেওয়া হয়। সেই প্রশ্ন দিয়ে শিক্ষার্থীদের তৃতীয় প্রান্তিক পরীক্ষা নেওয়া হয়। মধ্য সাতলা ১নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গত বুধবার সকালে পঞ্চম শ্রেণির তৃতীয় প্রান্তিক মূল্যায়ন পরীক্ষা নেয় ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, ওই স্কুলে পঞ্চম শ্রেণির হাজিরা খাতায় ৫০ জন হাজিরা দেওয়া থাকলেও প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় প্রান্তিক মূল্যায়ন পরীক্ষায় ৩১ জন অংশগ্রহণ করে।
এ বিষয়ে অভিভাবকরা প্রধান শিক্ষকের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আপনাদের এত মাথাব্যথা কেন, আপনার ছেলে মেয়েরা পাস করলেই তো হলো।'
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক পঞ্চম শ্রেণির একাধিক পরীক্ষার্থী বলে, 'আমাদের যে প্রশ্ন দিয়ে পরীক্ষা নিয়েছে, সেই একই প্রশ্ন দিয়ে অন্য স্কুলে আগেই পরীক্ষা হয়েছে। আমাদের আগে থেকে এই অংকগুলো করে আসতে বলা হয়েছিল। এসে দেখি সেই অংকগুলো পরীক্ষায় আসছে। আমাদের পরীক্ষার রুটিন অনুযায়ী পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিলো ২৬ তারিখ। কিন্তু সেই পরীক্ষা চারুকলা পরীক্ষার দিন নিয়েছেন স্যার।'
এ বিষয়ে অভিযুক্ত স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. আলমগীর বিশ্বাসকে তার মোবাইল ফোনে একাধিক ফোন দিলে তিনি কোন উত্তর না দিয়ে ব্যস্ত আছি বলে ফোন কেটে দেন।
উজিরপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রুহুল আমিন বলেন, 'গত রোববার পরীক্ষার কথা থাকলেও কি কারণে ওই প্রধান শিক্ষক গত বুধবার পরীক্ষা নিয়েছেন তা জানতে চেয়ে তাকে ডাকা হয়েছিল। ওই প্রধান শিক্ষককে পঞ্চম শ্রেণির দশটি গণিত পরীক্ষার খাতা নিয়ে আসতে বলি এবং সরেজমিনে তদন্ত করে এ ঘটনার সত্যতা পেয়েছি। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।'