ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ। কিন্তু মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের ঢাকার আঞ্চলিক উপপরিচালক অফিসের তদন্তে প্রধান শিক্ষককে রক্ষা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এর পেছনে হাত রয়েছে ডিডি অফিসের হিসাব রক্ষক পদে কর্মরত উচ্চমান সহকারী মো. নাসির উদ্দীনের। এমন অভিযোগ ভুক্তভোগী ও অভিযোগজমাদানকারী শিক্ষকদের ।
দৈনিক আমাদের বার্তার অনুসন্ধানে জানা যায়, ঢাকার উত্তরার বাউনিয়া আবদুল জলিল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুস সামাদের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ ও দুর্নীতির অভিযোগ করেন একই স্কুলের ৮ জন শিক্ষক। অভিযোগ ছিলো, প্রধান শিক্ষক তার অফিস সহকারী নুরুল ইসলাম গাজীর সহায়তায় প্রভিডেন্ড ফান্ডে ১৫ লাখ টাকা জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেছেন। এছাড়া ছাত্রদের কার্ড দেয়ার জন্য ১ লাখ ২০ হাজার তুলে নিয়েছেন। ঢাকার উপ-পরিচালকের দপ্তরে ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের ২২ মার্চ অভিযোগ জমা দিয়েছিলেন তারা। ওই বছরের ৩০ জুন সরেজমিন তদন্ত করতে যাওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। অভিযোগ তদন্তে কেউ আসেননি বলে জানিয়েছেন শিক্ষকরা।
অনুসন্ধানে জানা যায়, বাস্তবে তদন্তে যাওয়া হয়নি। কিন্তু একই বছরের ২০ জুলাই তদন্তে গিয়েছিলেন বলে উপপরিচালকের দপ্তরের এক চিঠিতে লেখা রয়েছে। চিঠিতে সই রয়েছে তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক মোছা: সাহারা খানম এবং উচ্চমান সহকারী (স্ববেতনে হিসাবরক্ষক) মো. নাসির উদ্দীনের। ১ সেপ্টেম্বর জমা দেয়া তদন্ত প্রতিবেদনে প্রধান শিক্ষকসহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে আনীত সব অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি বলে উল্লেখ করা হয়।
এদিক ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক অধ্যাপক মোহাম্মদ আবুল মনছুর ভূঞা স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানের নোটিশে বলা হয়, গত ১০ জানুয়ারি বোর্ডের তদন্তে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আনীত দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হয়। নোটিসে প্রধান শিক্ষকের এমপিও স্থগিত করার সুপারিশ করার কথাও বলা হয়েছে। প্রধান শিক্ষক মো: আব্দুস সামাদকে ১৫ দিনের মধ্যে নোটিসের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ওঠা একই অভিযোগ ডিডি অফিস তদন্ত করে প্রমাণ না পেলেও ঢাকা বোর্ড পেয়েছে। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনা সমালোচনা শুরু হয়েছে। অভিযোগকারী শিক্ষকরা বলছেন, নাসির এই তদন্ত প্রতিবেদনটি ডিজি অফিসে জমা দেয়নি। অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে নাসিরের যোগাযোগের মাধ্যমে প্রতিবেদনটি এমন হয়েছে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিডি অফিসের বিদ্যালয় পরিদর্শক ও তদন্ত কর্মকর্তা মোছা: সাহারা খানম সুস্পষ্ট কোনো জবাব দিতে পারেননি। তিনি বিষয়টি মনে করতে পারছেন না বলে জানান। মতামত জানার জন্য চেষ্টা করেও নাসিরকে পাওয়া যায়নি।
ডিডি আবদুল খালেক বলেন, মাত্র তিন মাস আগে আমি এসেছি, ঘটানাটি আমার যোগদানের আগের। তবে, খতিয়ে দেখবো।