অভিজ্ঞতা ছাড়াই একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ পেয়েছিলেন তিনি। সে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করা হয়নি। এরপর পেরিয়েছে ২০টি বছর। অবৈধভাবে প্রধান শিক্ষক পদে এমপিওভুক্ত হয়ে বেতনভাতা ভোগ করেছেন এ দীর্ঘ সময়। কিন্তু অবশেষে ধরা পড়েছেন। প্রধান শিক্ষক হিসেবে নেয়া তার ২০ বছরের বেতন সরকারি কোষাগারে ফেরত নেয়ার সুপারিশ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা শাখা। ইতোমধ্যে সে সুপারিশ বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ।
এই প্রধান শিক্ষক পিরোজপুরের মঠবাড়ীয়া উপজেলার তুষখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত আছেন। তার নাম মো. নাসির উদ্দিন তালুকদার। ২০০২ খ্রিষ্টাব্দে প্রধান শিক্ষক পদে যোগদান করে ওই বছরের ডিসেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত অবৈধভাবে এমপিওর টাকা নিচ্ছেন তিনি। তবে সব টাকা সরকারি কোষাগারে ফেরত দিতে হবে এবার।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অডিট আপত্তিতে এসব তথ্য উঠে এসেছে। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা শাখার সভায় অডিট আপত্তি নিয়ে আলোচনার পর ওই প্রধান শিক্ষকের বেতন ফেরতের সুপারিশ করা হয়েছে। সম্প্রতি এ সুপারিশের বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরকে জানিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের বেসরকারি মাধ্যমিক শাখা। ওই শিক্ষকের অডিট আপত্তির টাকা ফেরত নিয়ে তার এমপিও বাতিল কেনো করা হবে না তা জানতে চেয়ে তাকে শোকজ করতে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরকে বলা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ থেকে অধিদপ্তরে পাঠানো সেই চিঠিটির কপি দৈনিক শিক্ষাডটকমের হাতে আছে।
গত ১৬ এপ্রিল উপসচিব মো. মিজানুর রহমান স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, তুষখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. নাসির উদ্দিন তালুকদার সরকারি বিধি অনুযায়ী নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ না করে শুধু গণিত বিষয় উল্লেখ করায় এবং সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে তিন বছরের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা না থাকায় তার নিয়োগ বৈধ নয়।
২০০২ খ্রিষ্টাব্দের ২৬ ডিসেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে তোলা বেতনভাতা সরকারি কোষাগারে ফেরত দেয়া ও আগের সহকারী শিক্ষকের বেতন ভাতা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়েছে অভ্যন্তরীন নিরীক্ষা শাখার সভায়। অডিট আপত্তির টাকা আদায় করে এমপিও বাতিল করার বিষয়ে কারণ দর্শানোর জবাব গ্রহণ করতে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরকে চিঠিতে বলা হয়েছে।এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে দৈনিক শিক্ষাডটকমের পক্ষ থেকে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয় প্রধান শিক্ষক মো. নাসির উদ্দিন তালুকদারের সঙ্গে। কিন্তু বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তাই তার বক্তব্য নেয় সম্ভব হয়নি।