যশোরের অভয়নগর উপজেলার জয়ারাবাদ সম্মিলনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি, প্রধান শিক্ষক ও বিদ্যুৎসাহী সদস্যের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ে কর্মচারী নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিদ্যালয়ে অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী, অফিস সহায়ক, নিরাপত্তা কর্মী ও আয়া পদে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ তোলা হয়েছে।
গত মঙ্গলবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর অভিযোগ দিয়েছেন অভিযোগকারীরা। অভিযোগপত্রের অনুলিপি স্থানীয় জাতীয় সংসদ সদস্য, শিক্ষার উপপরিচালক, যশোরের জেলা প্রশাসক, জেলা শিক্ষা অফিসার, উপজেলা ম্ধ্যামিক শিক্ষা অফিসার, নওয়াপাড়া প্রেসক্লাব ও যশোর প্রেসক্লাবে দিয়েছেন।
অভিযোগে বলা হয়েছে, জয়ারাবাদ সম্মিলনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী, অফিস সহায়ক, নিরাপত্তা কর্মী ও আয়া পদে নিয়োগে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে আরও তিন ব্যক্তির কাছ থেকে নিয়োগের কথা বলে প্রধান শিক্ষক কয়েক লাখ টাকা আত্মসাৎ করার পাঁয়তারাও চালাচ্ছেন। অবৈধভাবে যাতে নিয়োগ বাণিজ্য না করতে পারে তাই এই নিয়োগ বন্ধ করার জন্য বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দেয়া হয়েছে। বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক, সভাপতি ও বিদ্যুৎসাহী সদস্য যোগসাজশে অর্থ লেনদেন, ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে চারটি পদে গোপনে নিয়োগ কার্যক্রম করছেন।
ম্যানেজিং কমিটির একজন অভিভাবক সদস্য অভিযোগ করে বলেন, প্রধান শিক্ষক আমাদের নিয়োগ বোর্ড ও নিয়োগ পরীক্ষার তারিখ সর্ম্পকে কোনো কিছুই অবগত করেননি। মিটিং ছাড়াই গোপনে আগে থেকে প্রধান শিক্ষক সভাপতির ভাইয়ের স্ত্রী মৌসুমি ইসলামকে অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী পদে ও কমিটির বিদ্যুৎসাহী সদস্যের ছেলে প্রান্ত ঠাকুরকে অফিস সহায়ক পদে, সভাপতির বড় ভাইয়ের বডিগার্ড ইমরান হোসেন রিফাতকে নিরাপত্তা কর্মী পদে এবং এক অভিভাবক সদস্যের স্ত্রী প্রীতিলতাকে আয়া পদে নিয়োগ দিয়ে তাদের নিয়োগ প্রক্রিয়ার অন্তর্ভুক্ত করছেন। বিষয়টি কেউ যেন না জানে এজন্য রাতের আঁধারে নিয়োগের কার্যক্রম সম্পন্ন করার পাঁয়তারা চালাচ্ছেন।
অভিযোগকারী নিলয় বিশ্বাস, শুভংকর অধিকারী, মো. রফিকুল, মো. রবিউল ইসলাম, বিজয় বিশ্বাস, সঞ্জয় বিশ্বাস, আকাশ, পুর্নিমা সেন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, সম্প্রতি কর্মচারী নিয়োগের বিষয়ে কোনো আলোচনা বা মিটিং না করে গোপনে নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করছেন প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি। যা সম্পূর্ণ অবৈধ।
জানতে চাইলে স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোহিতোষ বিশ্বাস দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, নিয়োগ বিধি মেনেই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পাদন করা হচ্ছে। তাছাড়া এসব পদে ৪০ জনের বেশি প্রার্থী আবেদন করেছেন। তাদের মধ্য থেকে মেধা এবং যোগ্যতা অনুযায়ী প্রথম হওয়া প্রার্থীদের নিয়োগ দেয়া হবে।
স্কুলের সভাপতি খালিদ হাসান খান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, একটি মহল স্কুল এবং কমিটির ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। নিয়োগ কার্যক্রমের জন্য কোনো অর্থের লেনদেন হচ্ছে না বলে তিনি দাবি করেন।
অভয়নগরের উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। শুনেছি নিয়োগ প্রক্রিয়াটি চলমান। তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অভয়নগরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেজবাহ উদ্দীন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, নিয়োগ বন্ধের একটি আবেদন পেয়েছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।