চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে জয়পুরহাটে প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষকদের তিন দিনের প্রশিক্ষণে প্রশিক্ষার্থীদের নিম্নমানের ব্যাগ ও প্রশিক্ষণ উপকরণ দেয়ার অভিযোগ উঠেছে সদর উপজেলা রিসোর্স সেন্টার (ইউআরসি) ইন্সট্রাক্টর ড. মো. শাহাদুর রহমান চৌধুরীর বিরুদ্ধে। ইতোমধ্যে এ বিষয়ে সহকারী শিক্ষকদের সংগঠন সহকারী শিক্ষক সমাজের জেলা কমিটির পক্ষ থেকে দুজন শিক্ষক প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
অভিযোগে বলা হয়েছে, চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি ( টিআইডিপি-৪) এর আওতায় ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে ইউআরসি-টিআরসিতে তিন দিনের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য শিক্ষাক্রম বিস্তরণ প্রশিক্ষণ শুরু হয়। এর অংশ হিসেবে সারাদেশের মতো জয়পুরহাটেও পর্যায়ক্রমে জেলার বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা এ প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করেন। প্রশিক্ষণ চলাকালীন অভিযোগ ওঠে বাজেটের মোটা অংকের টাকা বাঁচিয়ে নিম্নমানের প্রশিক্ষণ উপকরণ ও ব্যাগ দেয়ার। এতে চরম ক্ষুব্ধ হয়ে চতুর্থ ব্যাচে অংশগ্রণকারী প্রশিক্ষণার্থীরা নিম্নমানের এসব প্রশিক্ষণ উপকরণ ও ব্যাগগুলো উপজেলা রিসোর্স সেন্টার (ইউআরসি) ইন্সট্রাক্টর ড. মো. শাহাদুর রহমান চৌধুরীকে ফেরত দেন।
শিক্ষকদের অভিযোগ, ব্যাগ ও উপকরণ বাবদ এক হাজার টাকা ধরা হলেও তাদের ৩৬০ টাকা মূল্যের সামগ্রী দেয়া হয়েছে। এই ইউআরসি জনপ্রতি ৬৪০ টাকা হারে দূর্নীতি করছেন। বর্তমানে সদর উপজেলায় ৬৩০ জন শিক্ষক কর্মরত রয়েছে। ফলে ৪ লাখ টাকা দুর্নীতি হচ্ছে বলে প্রতিয়মান হয়। ব্যাগ ও সরবরাহকৃত উপকরণগুলো নিম্নমানের হওয়ায় প্রশিক্ষণার্থীরা তা গ্রহণ করেননি। বাজেট বিভাজনে দেখা যাচ্ছে, তিনদিনের জন্য প্রতি প্রশিক্ষণার্থীর জন্য ভাতা ১ হাজার ৫০০ টাকা, খাবার ভাতা বাবদ ৮৪০ টাকা, ব্যাগ বাবদ ৫০০ টাকা, উপকরণ (তথ্যপত্র, পোস্টার, মার্কার পেন, সাইন পেন, প্যাড, কলম, পেন্সিল, সার্পনার, ইরেজার এবং নেম কার্ড) ৫০০ টাকা এবং যাতায়াত ভাতা (সরকারি বিধি অনুযায়ী) ২০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।
জানতে চাইলে উপজেলা রিসোর্স সেন্টার (ইউআরসি) ইন্সট্রাক্টর ড. মো. শাহাদুর রহমান চৌধুরী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, শিক্ষকদের অনুরোধের প্রেক্ষিতে তাদের খাবার. ভাতাসহ সম্পূর্ণ অর্থ নগদে পরিশোধ করা হয়েছে। প্রশিক্ষণের মানোন্নয়নের জন্য যথাযথ তথ্যপত্র ও উপকরণ সরবরাহ করা হয়েছে। যাতে কারিকলাম প্রশিক্ষষ শিক্ষকদের মাঝে যোগ্যতার প্রতিফলন ঘটায়। নতুন মূল্যায়ন পদ্ধতির আলোকে শিক্ষক ডায়েরি-১ ও ২ ফরম প্রত্যেক প্রশিক্ষণার্থীদের দিয়ে হাতে কলমে কাজ করা হয়েছে।
জানতে চাইলে জয়পুরহাট প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের (পিটিআই) সুপারিন্টেন্ডেন্ট আফছারী খানম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, এ ব্যাপারে কোন লিখিত অভিযোগ এখনো পায়নি। তবে অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।