রাজশাহী, রংপুর ও খুলনা বিভাগের সব নার্সিং কলেজের বিএসসি কোর্সের প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের চূড়ান্ত পর্বের পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে। প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ায় রাজশাহী মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (রামেবি) অধিভুক্ত কলেজগুলোর পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে প্রশ্নফাঁসের প্রমাণ পাওয়ায় তিন শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্তও করা হয়েছে। এ ঘটনা তদন্তের জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। রোববার থেকে পরীক্ষা শুরুর কথা ছিল। এর আগে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।
বগুড়া নার্সিং কলেজের সাময়িক বরখাস্ত হওয়া তিন শিক্ষক হলেন আবদুল বারী সরকার, মোস্তানুর সুলতানা ও গুলনাহার খাতুন।
রামেবিতে প্রশ্নপত্র তৈরির সময় তাঁরা ছিলেন। গত ১৭ জানুয়ারি প্রশ্নপত্র তৈরি হয়। এরপর ৩০ ও ৩১ জানুয়ারি রামেবির নিজস্ব পরিবহনে এই অঞ্চলের সরকারি মেডিকেল কলেজগুলোর ভল্টে ভল্টে প্রশ্ন পাঠানো হয়।
রামেবি সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী, রংপুর খুলনা বিভাগের সব সরকারি ও বেসরকারি নার্সিং কলেজ রামেবির অধিভুক্ত হিসেবে পরিচালিত হয়। মোট নার্সিং কলেজের সংখ্যা ৪০। এগুলোর মধ্যে ২১টি কলেজে বিএসসি ইন নার্সিং, বিএসসি ইন পাবলিক হেলথ নার্সিং (পোস্টবেসিক) এবং বিএসসি ইন মিডওয়াইফারি (পোস্টবেসিক) পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল।
এসব কোর্সে প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। প্রথম বর্ষে বিষয় রয়েছে ৮টি, আর দ্বিতীয় বর্ষে ৮ থেকে ১০টি। মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৭০০। সবার পরীক্ষাই স্থগিত করা হয়েছে। তিন বিভাগের ১৮টি কেন্দ্রে পরীক্ষা গ্রহণের কথা ছিল। প্রশ্নপত্র ফাঁসের কারণে পরীক্ষা স্থগিতের খবর জানাজানি হলে প্রতিষ্ঠানগুলোতে তোলপাড় শুরু হয়।
রামেবি সূত্র জানিয়েছে, রামেবিতে এসে প্রশ্ন করেন বিভিন্ন নার্সিং কলেজের শিক্ষকেরাই। এবারও বগুড়া নার্সিং কলেজের কয়েকজন শিক্ষক ছিলেন। তাঁদের মধ্যে তিনজনের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের প্রশ্ন সরবরাহ করার অভিযোগ উঠেছে। মন্ত্রণালয় অভিযুক্ত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর ফোনালাপের অডিও রেকর্ডও পেয়েছে। তাই তিন শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
জানতে চাইলে বগুড়া নার্সিং কলেজের অধ্যক্ষ আরশে আরা বেগম বলেন, ‘আমাদের আরও কয়েকজন শিক্ষক প্রশ্নপত্র করার সময় ছিলেন। তাঁদের মধ্যে তিনজনের ব্যাপারে মন্ত্রণালয় জানতে পেরেছে যে তাঁরা প্রশ্নপত্র ফাঁস করেছেন। সে জন্য গত বৃহস্পতিবার তাঁদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ঘটনায় গঠন করা তদন্ত কমিটির চিঠিতে বিষয়টি আমি জেনেছি।’
এ বিষয়ে কথা বলতে রামেবির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আনোয়ার হাবিবকে ফোন করা হলে তিনি ধরেননি। রামেবির উপাচার্য অধ্যাপক এ. জেড. এম মোস্তাক হোসেন বলেন, ‘ঘটনা তদন্তে মন্ত্রণালয় থেকেই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে রামেবির প্রতিনিধিও রাখা হয়েছে। এই তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত পরীক্ষা স্থগিত রাখতে বলা হয়েছে। পরীক্ষা পরে হবে।’