প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, প্রাইমারি স্কুল ফুটবল টুর্নামেন্ট থেকেই বেরিয়ে আসবে আগামী দিনের বাংলাদেশের বিশ্বকাপ ফুটবল খেলোয়াড়। বাংলাদেশ ভবিষ্যতে বিশ্বকাপ ফুটবলে খেলবে। সেই খেলোয়াড়রা এই টুর্নামেন্টগুলো থেকেই বেরিয়ে আসবে।
মঙ্গলবার (২২ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর আর্মি স্টেডিয়ামে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ প্রাইমারি স্কুল ফুটবল টুর্নামেন্ট-২০২২ ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব গোল্ডকাপ প্রাইমারি স্কুল ফুটবল টুর্নামেন্ট-২০২২-এর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, খেলাধুলার পাশাপাশি সংস্কৃতি চর্চা, গল্প, ইতিহাস, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক বই পড়ার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। পাশাপাশি যোগ্য নাগরিক হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলতে প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের টেক্সট বইও পড়তে হবে। শিক্ষার্থীরাই বাংলাদেশের মূল শক্তি। সেভাবে নিজেদের যোগ্য করে তৈরি করতে ভালোভাবে লেখাপড়ায় মনোনিবেশ করারও আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, খেলাধুলা মানে শারিরীক ব্যায়াম, খেলাধুলা শারিরীক শক্তি যোগায়। উদার মনমানসিকতা গড়ে তোলে। পাশাপাশি, লেখাপড়ায়ও মনোনিবেশ করতে হবে। একটি স্বাধীন দেশের যোগ্য
নাগরিক হিসাবে নিজেদের গড়ে তুলতে হবে। একটি স্বাধীন দেশের যোগ্য নাগরিক হিসেবে তোমাদের নিজেদের প্রস্তুত করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি আশা করি, বাংলাদেশের শিশুরা পড়াশোনা, খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক চর্চাসহ প্রতিটি ক্ষেত্রেই ভালো পারফরম্যান্স করবে। তারা আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় যোগ দিয়ে দেশের জন্য মর্যাদা বয়ে আনবে। আজকে আমরা দেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলেছি। আমরা আগামীতে দেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলব। তোমরা হবে স্মার্ট বাংলাদেশের মূল শক্তি।
শেখ হাসিনা বলেন, ছোট শিশুদের সবসময় সুশৃঙ্খল জীবন বজায় রাখতে হবে, শিক্ষক ও অভিভাবকদের কথা শুনে চলতে হবে, সমবয়সিদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতে হবে এবং বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ও প্রতিবন্ধী মানুষের সঙ্গে ভালো আচরণ করতে হবে। তোমাদের সবাইকে মানবিক গুণ নিয়ে নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি আরো বলেন, পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক চর্চা, গল্পের বই পড়া, ইতিহাস, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বই পড়তে হবে। তোমাদের সবদিক থেকে নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে। এখন থেকে মনে রাখবে যে, তোমরা সবচেয়ে যোগ্য হবে এবং নিজেদের সবচেয়ে যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলবে।
নিজেকে ফুটবল পরিবারের সদস্য অভিহিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার দাদা, বাবা, ভাই শেখ কামাল ও শেখ জামাল ফুটবল খেলতেন। কামাল বাংলাদেশে আজকের আধুনিক ফুটবলের স্থপতি। আবাহনী ক্রীড়াচক্র তার হাতেই প্রতিষ্ঠিত। শেখ কামাল ও শেখ জামাল ফুটবল ও হকিসহ সব ধরনের খেলাধূলায় জড়িত ছিলেন। দেশের ক্রীড়াঙ্গনে কামালের অবদান আছে।
তিনি বলেন, কামালের স্ত্রী সুলতানা একজন ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব ছিলেন। জামালের স্ত্রী রোজিও লেখাধুলায় পারদর্শী ছিলেন। তাই, আমি একটি ফুটবল পরিবারের সদস্য। আমার নাতি-নাতনিরাও ফুলবল খেলতে ভালোবাসে। তারা ফুটবল খেলে। শেখ রেহানার নাতি-নাতনিরাও ফুটবল খেলে।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী ঢাকা বিভাগের নলমা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (ঘাটাইল, টাঙ্গাইল) এবং চট্টগ্রাম বিভাগের বাঞ্ছারামপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) মধ্যে অনুষ্ঠিত খেলার গ্র্যান্ড ফাইনালের দ্বিতীয়ার্ধ উপভোগ করেন। বাঞ্ছারামপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় গ্র্যান্ড ফাইনাল খেলায় নলমা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে হারিয়ে বঙ্গমাতা গোল্ডকাপ-২০২২ এর শিরোপা জিতেছে। আর রংপুর বিভাগের নীলফামারী সদর উপজেলার পূর্ব পঞ্চপুকুর প্রাথমিক সরকারি বিদ্যালয় জমকালো ফাইনাল খেলায় ঢাকা বিভাগের রাজবাড়ী সদরের বিনোদপুর কলেজপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে হারিয়ে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ-২০২২ এর শিরোপা জিতেছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক আয়োজিত দেশব্যাপী টুর্নামেন্ট-২০২২ এ ৬৫ হাজার ৫২৯টি বিদ্যালয়ের মোট ১১ লাখ ১৩ হাজার ৯৯৩ জন ছেলে এবং ৬৫ হাজার ৫২৮টি বিদ্যালয়ের ১১ লাখ ১৩ হাজার ৯৭৬টি মেয়ে অংশ নেয়। প্রধানমন্ত্রী দুইটি টুর্নামেন্টের চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ দলের সদস্যদের মধ্যে পুরস্কার ও পদক বিতরণ করেন।