পবিত্র রমজান মাসে খোলা থাকছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো। ১৫ রমজান বা ৭ এপ্রিল পর্যন্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে ৯ দিন ক্লাস চলবে। মহানগর, ডাবল শিফট ও সিঙ্গেল শিফট সব স্কুলের সময়সূচি সকাল ৯টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর জানিয়েছে, প্রধান শিক্ষকরা যোহরের নামাজের জন্য ১৫ মিনিট বিরতি দিয়ে রুটিন তৈরি করে ক্লাস চালাবেন। এ নিয়ে সনাতন ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বী শিক্ষকদের মন খারাপ হয়েছে। তারা বলছেন, তাদের দুপুরের খাবারের জন্য কোনো সময় দেয়নি কর্তৃপক্ষ।
গত বৃহস্পতিবার রোজায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্লাসের সময় নির্ধারণ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। গতকাল শুক্রবার সনাতন ধর্মাবলম্বী এক শিক্ষক দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, আমরা রোজা রাখবো না। কিন্তু রুটিনে দুপুরের খাবারের কোনো বিরতি নেই। কর্তৃপক্ষ সে সুযোগ রাখেনি। আমাদের দুপুরের খাবারের সময়ের বিষয়টি উল্লেখ করে আদেশ জারি করার অনুরোধ জানাচ্ছি।
এদিকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নারী শিক্ষকরাও বিপাকে পড়েছেন। এক নারী শিক্ষক দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, সাড়ে তিনটা পর্যন্ত ক্লাস শেষ করে বাসায় ফিরতে দেড় ঘণ্টা সময় লাগে। এ পরিস্থিতিতে কখন বাসায় ফিরবো আর কখন ইফতার তৈরি করবো।
রোজার ক্লাস রুটিন নিয়ে শিক্ষকদের অসন্তোষ থাকলেও তারা কেউ নাম পরিচয় উল্লেখ করে কথা বলতে চাচ্ছেন না। রোজার ক্লাস রুটিন নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে এক শিক্ষক নেতা দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, এ নিয়ে মন্তব্য করে বরখাস্ত হওয়ার ইচ্ছা নেই।
গত বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত সমন্বয় সভায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সময়সূচি নির্ধারণ করা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ। পরে, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান তুহিন জানান, পবিত্র রমজান মাসে ১৫ রমজান পর্যন্ত ৯ কার্যদিবস স্কুল খোলা থাকবে। মহানগর, ডবল শিফট ও সিঙ্গেল শিফট সব স্কুলের সময়সূচি সকাল ৯টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা নির্ধারণ করা হয়েছে।
একইদিনে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে জারি করা এক আদেশে বলা হয়, রমজান মাসে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণি কার্যক্রম সকাল ৯টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত চলবে। ঢাকা মহানগরীসহ সব ধরণের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য এ সময়সূচি প্রযোজ্য হবে। প্রধান শিক্ষক সময়সূচির মধ্যে যোহরের নামাজের জন্য ১৫ মিনিট বিরতি দিয়ে ক্লাস রুটিন প্রণয়ন করবেন।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, করোনায় শিখন ঘাটতি পূরণে রোজায় ৯ কার্যদিবস ক্লাস চালু রাখা হচ্ছে। তারা এ বিষয়ে শিক্ষকদের সহযোগিতা চেয়েছেন।