প্রচুর জ্ঞান আহরণ করেও প্রশ্ন কমন না পড়ার ফলে পরীক্ষায় ভালো ফলপ্রাপ্তি সম্ভব হয়ে ওঠে না। আবার সীমিত জ্ঞান নিয়েও প্রশ্ন কমন পড়লে ভালো পাস ভাগ্যে জোটে। শিক্ষার্থী পায় সুখ্যাতি, আদর-সোহাগ, আপ্যায়ন ও ভালবাসা।
বর্তমান পরীক্ষা ব্যবস্থা জ্ঞান অর্জনের উৎকৃষ্টা পন্থা নয়। একমাত্র মূল্যায়ন ব্যবস্থার মাধ্যমে শিক্ষার্থীর কাঙ্খিত জ্ঞান অর্জন করা সম্ভব। মূল্যায়ন ব্যবস্থায় শিক্ষার্থীকে যথাযথ জ্ঞান অর্জন করিয়ে শিক্ষকের দায়িত্ব সমাপ্ত করতে হয়। এ ব্যবস্থায় তড়িঘড়ি পাঠদান, শিক্ষার্থীদের বাড়িতে পড়ার চাপ দিয়ে গৃহ শিক্ষক, কোচিংসহ নোটগাইডমুখী করার অবকাশ থাকে না।
মূল্যায়ন পদ্ধতির বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো- পাঠের বিষয়বস্তুর সাবির্ক জ্ঞান অর্জন করিয়ে পরবর্তী পাঠে অগ্রসর হওয়া। এ ব্যবস্থায় কোনো নাম্বার থাকা বাঞ্ছনীয় নয়। এজন্য প্রতিদিনের পিরিয়ড সংখ্যা কমিয়ে সময় কমপক্ষে ১ ঘণ্টা করা প্রয়োজন। আমাদের মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্টদের এ মূল্যায়ন ব্যবস্থা নিয়ে ভাবনা আছে বলে দৃশ্যমান নয়। তারা পরীক্ষার সঙ্গে মূল্যায়ন ব্যবস্থা একাকার করে ‘যে লাউ সেই কদু’তে পরিণত করে ফেলেছেন।
অবৈতনিক পরীক্ষা ব্যবস্থা বাস্তবায়নের নামে শিক্ষার্থীকে বাসা থেকে কাগজ আনার নির্দেশনা দেয়া হয়। সে কাগজ কিনতে তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ৩০ থেকে ৪০ টাকা ব্যয় করতে হয়। এসব শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের যেনো কাগজের মিল বা আত্মীয়-স্বজনের কাগজের দোকান রয়েছে। সেখান থেকে তারা বিনামূল্যে কাগজ পায়।
এছাড়া ক্লাস্টারভিত্তিক প্রশ্ন প্রিন্ট না করে ফটোস্ট্যাটের নির্দেশনা অযৌক্তিক। এতে প্রশ্নপত্রের খরচ বেড়েছে। তাই জ্ঞানার্জনমুখী শিক্ষাক্রম সম্পর্কে শিক্ষকসহ সংশ্লিষ্টদের ব্যাপক ধারণা ও প্রশিক্ষণ প্রয়োজন। যথাযথ মূল্যায়ন ব্যবস্থার সব চ্যালেঞ্জ দূর করা প্রয়োজন।
লেখক : মো. সিদ্দিকুর রহমান, সভাপতি, বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদ ও সম্পাদকীয় উপদেষ্টা, দৈনিক শিক্ষাডটকম।